০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১, ৫ শাবান ১৪৪৬
`

রাবির প্রতিটি ভবনে মেয়েদের নামাজের স্থানসহ ৫ দাবিতে মৌন মিছিল

- ছবি : নয়া দিগন্ত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রতিটি ভবনে মেয়েদের নামাজের স্থান, আসন্ন ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফরমে কান দৃশ্যমান না হলে তা প্রত্যাখ্যান, ভর্তি পরীক্ষার হল, বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের ভাইভা বোর্ডে নিকাব খুলতে বাধ্য করা এবং পর্দা নিয়ে কটাক্ষের প্রতিবাদসহ ৫ দফা দাবি আদায়ে মৌন মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হল গেইট থেকে মৌন মিছিল শুরু হয়ে প্রশাসনিক ভবনে এসে শেষ হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।

স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় কান দৃশ্যমান না হলে আবেদন ফরম প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে এবং পরীক্ষার হলে নিকাব খুলতে বাধ্য করা যাবে না, হিজাব-নিকাব পরিহিত কোনো শিক্ষার্থীকে প্রেজেন্টেশন ও ভাইভা বোর্ডে নিকাব খুলতে বাধ্য করা যাবে না, বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে (যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট) পরিচয় শনাক্তকরণ এবং এই পদ্ধতি চালু না হওয়া পর্যন্ত মহিলা শিক্ষিকা বা কর্মচারীর মাধ্যমে পর্দানশীন ছাত্রীদের পরিচয় শনাক্তকরণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

দাবিতে নারী শিক্ষার্থীরা আরো জানান, প্রতিটি বিল্ডিং-এ মেয়েদের নামাজরুমের ব্যবস্থা করতে হবে এবং কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়াতে মেয়েদের জন্য আলাদা কর্নারের ব্যবস্থা করতে হবে, দ্রুততম সময়ে সকল ডিপার্টমেন্টে হিজাব-নিকাব পরিধানকারী শিক্ষার্থীদের হেনস্থা করা বন্ধের নোটিস প্রদান করতে হবে এবং হিজাব-নিকাব পরিধানে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বিধিতে ধারা যুক্ত করতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী বলেন, ‘পরীক্ষার হলে ঢোকানোর আগে মহিলা কর্মচারী দ্বারা ভালোভাবে সার্চ করা হয় তাহলে তো আর কানে ডিভাইস নেয়ার সুযোগ থাকে না। এজন্য পরীক্ষার হলে কান বের করে রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। আর যদি এমন হয় তাহলে পরীক্ষার হলে মহিলা শিক্ষিকা থাকুক। বিশ্ববিদ্যালয়ে তো ক্লাসরুমের অভাব নেই। আমাদের জন্য আলাদা রুম রাখুক। আমরা সেখানে মুখ খুলে পরীক্ষা দেব। আমরা কেনো পুরুষ মানুষের সামনে হিজাব খুলব?‘

এ সময় অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের কেন কান বের করতে হবে। পোশাক আমাদের ব্যাক্তগত বিষয়। আমাদের ইচ্ছা মতো পরতে পারি। আমাদের এ বোরকার জন্য অনেক সময় আমাদের কটাক্ষও করা হয়।‘

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ধর্ম পালন করার অধিকার সংবিধান আমাদেরকে দিয়েছে। মুসলিম হিসেবে হিজাব আমাদের অধিকার। এখন তথ্য প্রযুক্তির যুগ এসব সমস্যাকে নানাভাবে সমাধান করা যায়। তাহলে কেন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা হয়? আমরা তো ভুল কিছু করছি না। আমরা ধর্মীয় নিয়ম-নীতি মানার অধিকার চাচ্ছি।‘

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘আমাদের কাছে তারা স্মারকলিপি দিয়েছে। এটা একটি সেনসেটিভ বিষয়। আমরা এটি নিয়ে বসব।’


আরো সংবাদ



premium cement