সিরাজগঞ্জে তরুণীকে ধর্ষণের দায়ে চালকের আমৃত্যু কারাদণ্ড

সিরাজগঞ্জে এক তরুণী (২০) যাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে সোহেল রানা (৩৬) নামে চালককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে ওই আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক বেগম সালমা খাতুন আসামির উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মো: সোহেল রানা বগুড়া জেলা সদরের আশোকোলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মনসুর আলীর ছেলে। ওই তরুণী সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার শিমলা মধ্যপাড়া গ্রামের মো: আলতাফ হোসেন খানের মেয়ে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২১ সালে করোনার কারণে লকডাউন থাকায় সারাদেশে যান চলাচল বন্ধ ছিল। ওই বছর ২২ জুন বিকেলে গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে দু’জন পুরুষ ও একজন তরুণী যাত্রী নিয়ে ট্রাকচালক সোহেল রানা এবং হেলপার ওহাব শেখ বগুড়া যাচ্ছিলেন। তারা সিরাজগঞ্জের যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়কের সয়দাবাদ রেলওয়ে স্টেশনের কাছে পৌঁছালে ট্রাক নষ্ট হয়ে গেছে এমন কথা বলে ট্রাকটি থামায় এবং ট্রাক মেরামত করতে সময় লাগবে বলে যাত্রীদের জানায়। তখন পুরুষ দু’যাত্রী ট্রাক থেকে নেমে যায়। পরে সোহেল রানা এবং ওই তরুণীকে কেবিনের ভেতরে রেখে দরজা বন্ধ করে দেয় হেলপার। এ সময় কেবিনের ভেতরেই চালক সোহেল রানা তরুণীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষিতা তরুণীর চিৎকারে বাইরে থাকা যাত্রীরা বিষয়টি টের পেয়ে ট্রাকের কাছে এসে মোবাইলে ভিডিওটি ধারণ করেন। এ ঘটনা টের পেয়ে চালক ও হেলপার দু’যাত্রীকে রেখেই ট্রাক নিয়ে বগুড়ার দিকে চলে যায়। এ সময় ইউনুস আলী সুমন ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে অবগত করেন। পুলিশ দ্রুত কড্ডার মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে চালক-হেলপারকে আটক এবং ধর্ষিতা তরুণীকে উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ধর্ষিতা তরুণীর বাবা দু’জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলার পর ট্রাকচালক সোহেল রানা ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে পুলিশ দু’জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মোট ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে বিচারক বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।