বগুড়া বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ
- আবুল কালাম আজাদ, বগুড়া অফিস
- ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:০১
বগুড়া বিমানবন্দর দ্রুততম সময়ে চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সম্প্রতি বিমান বাহিনীর প্রধান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তারা সরজমিনে সম্ভাব্যতা যাচাই করে এমন আশ্বাস দিয়েছেন। দীর্ঘদিন লাল ফাইলে বন্দি থাকা বিমানবন্দরটির চালুর খবরে বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে জেগে উঠেছে আশার আলো।
বগুড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া বিমানবন্দর স্থাপনের প্রথম উদ্যোগ নেয়া হয় ১৯৮৭ সালে। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় সেই উদ্যোগে ভাটা পড়ে। এরপর বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ১৯৯১-১৯৯৬ মেয়াদের বিএনপি সরকারের শেষদিকে এখানে স্টল বিমানবন্দর স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই সময় ২২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। এরপর ১৯৯৫ সালে সদর উপজেলার এরুলিয়া এলাকায় বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ১১০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ১৯৯৬ সালে সেখানে প্রকল্পের আওতায় রানওয়ে, কার্যালয় ভবন ও কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ, রাস্তা নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হয়ে শেষ হয় ২০০০ সালে। কিন্তু ওই সময় অলাভজনক মতামত দিয়ে বিমানবন্দর বাণিজ্যিকভাবে চালু করা হয়নি। এরপর বিমানবাহিনীকে প্রদান করলে সেখানে একটি প্রশিক্ষণ স্কুল চালু করে বিমান ওঠানামা করে।
গত কয়েক বছর আগে বগুড়া বিমানবন্দর বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে বেবিচক। বগুড়া-৭ আসনের সাবেক স্বতন্ত্র এমপি মো: রেজাউল করিম বাবলুর প্রস্তাবনার আলোকে সম্ভাব্যতা যাচাইপূর্বক স্বয়ং সম্পূর্ণ প্রতিবেদনসহ মতামত দিতে বলা হয় কমিটিকে। কমিটির সদস্যরা বিমানবন্দর এলাকা পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদনও দাখিল করেন। কিন্তু বগুড়া শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান হওয়ায় তা আমলে নেয়া হয়নি। তবে এবার বিমানবন্দর চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করে শিগগিরই চালুর উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা জানান, ‘বগুড়া শিল্প, শিক্ষা, ও ব্যবসা-বাণিজ্যে অন্যান্য জেলার চেয়ে অনেক এগিয়ে। তাই বিমানবন্দর চালু হলে শুধু বগুড়া নয় পুরো উত্তরাঞ্চলে উন্নয়নের পরিবর্তন ঘটবে।’
তিনি আরো জানান, অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলের জন্য জেলা প্রশাসন ছয় হাজার ফুট রানওয়ে তৈরি করে বিমান চালুর প্রস্তাব দিয়েছে। এজন্য নতুন করে একশ একর জমি হুকুম দখল করতে হবে। কারণ বেবিচক যে তিনশত একর ভূমি নতুন করে হুকুম দখল করে ১০ হাজার ফুট রানওয়ে তৈরির প্রকল্প নিতে চায় তা এ মুহূর্তে বাস্তবায়ন করা কঠিন।
সম্প্রতি বগুড়া বিমানবন্দর বাণিজ্যিকভাবে চালু করার সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বগুড়া বিমানবন্দরের রানওয়ে পরিদর্শন করেছেন বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানসহ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান জানান, ‘এটি একটি এয়ারফিল্ড। এখন এখানে ছোট বিমান নামাতে পারব। এখানে বিমান ওঠানামা করাতে রানওয়েটি কার্পেটিং করতে হবে। রানওয়ে ছয় হাজার ফুট পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা গেলে দেড় বছরের মধ্যে ছোট বিমান ওঠানামার জন্য প্রস্তুত করা যাবে। আমরা সরকারের কাছে বিষয়টি জানাব।’