চিরিরবন্দরে ধর্ষণ মামলার আসামি কালু পালের আত্মসমর্পণ
- চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) সংবাদদাতা
- ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:১৮
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মুসলিম পরিবারের কিশোরীকে ধর্ষণ মামলার আসামি উপেন চন্দ্র পাল ওরফে কালু (৩৬) আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) দিনাজপুর আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন।
এর আগে প্রাণনাশের ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ ও মামলা ধামাচাপা দিতে মা-মেয়ে ও ছেলেকে ঘরের মধ্যে প্রেট্রোল দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা করেছিলেন কালু।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নশরতপুর গ্রামের বছির মেম্বারপাড়ার ভুক্তভোগী কিশোরী (১৫) ওই এলাকার পালপাড়ার পরলোকগত নির্মল চন্দ্র পালের ছেলে উপেন চন্দ্র পাল ওরফে কালুর (৩৬) বাড়িতে কুমারের মাটির কাজ নেয়। এতে কালুর দৃষ্টি পড়ে ভিকটিমের ওপর। দীর্ঘদিন ধরে কালু তাকে বিভিন্ন উচ্চাবিলাসী প্রলোভন দেখিয়ে কুপ্রস্তাবসহ উত্ত্যক্ত করে আসছিল।
একপর্যায়ে ভিকটিম এসব ঘটনা তার মাকে জানায়। ভিকটিমের মা কালুকে ডেকে নিয়ে বিরক্ত করতে নিষেধ করেন। এরপর কালু উত্ত্যক্তের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেন। গত ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় ভিকটিম একাকী বাড়ির পাশে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বের হয়। এ সুযোগে ওঁত পেতে থাকা কালু ভিকটিমকে ওড়না দিয়ে বেঁধে বাঁশঝাড়ে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
এরপর বিষয়টি কারো কাছে প্রকাশ না করার জন্য তাকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শন করে। ভিকটিম গত ১৩ ডিসেম্বর ঘটনাটি তার মাকে জানায়। এ ঘটনায় কালু ও তার পরিবারের লোকজন স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করে কালক্ষেপন করতে থাকে। নিরুপায় হয়ে ভিকটিমের মা গত ১৪ ডিসেম্বর চিরিরবন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
আরো জানা যায়, এ মামলা করার কারণে গত ৭ জানুয়ারি রাগে কালু ভিকটিমের বাড়ির বাইরে চর্তুদিকে খড় দিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়ে তাদেরকে হত্যার চেষ্টা করে। বিষয়টি টের পেয়ে সবার ঘর থেকে বের হয়ে আসে। এ সময় তাদের চিৎকারে পাড়া-প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুনে তাদের শরীরে দেয়া কম্বল-চাদরসহ ঘরের আসবাবপত্র পুড়ে যায়।
এ ধর্ষণ ঘটনায় মামলা দায়ের হওয়ার মাস পেরিয়ে গেলেও আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় গত ১৮ জানুয়ারি শনিবার দুপুর ২টায় আসামিকে গ্রেফতার ও সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ভুক্তভোগী মুসলিম নারী ও এলাকাবাসীর আয়োজনে উপজেলার রানীরবন্দরের সুইহারিবাজারে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করে। এতে আগামী তিন দিনের মধ্যে আসামিকে গ্রেফতার করা না হলে কঠোর আন্দোলনে নামবে বলে তৌহিদি জনতা হুশিয়ারী দেন।
চিরিরবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি-তদন্ত) আহসান হাবিব জানান, ‘পুলিশ কালুকে হণ্য হয়ে খুঁজছিল। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক ছিল। অবশেষে কালু ১৯ জানুয়ারি দিনাজপুর আদালতে ত্মসমর্পণ করেছে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা