১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১০ রজব ১৪৪৬
`
রাজশাহীতে সিজিএস আয়োজিত সংলাপে বক্তারা

‘দেশ পুনর্গঠনে সব অঞ্চলের অংশগ্রহণ ও সাম্যতা নিশ্চিত করতে হবে’

রাজশাহী জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির মিলনায়তনে সংলাপে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনগুলোর নেতারা - ছবি : নয়া দিগন্ত

রাজশাহীতে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত এক সংলাপে দেশ ও গণতন্ত্র পুনর্গঠনে সরকার ব্যবস্থাপনায় সকল বিভাগ থেকে প্রতিনিধির অংশগ্রহণ নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়েছে। সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংস্কারের অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি বিভাগে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করেছে।

‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাজশাহী জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। এই সংলাপে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনগুলোর নেতারা এ দাবি জানান।

সংলাপে অতিথি আলোচক ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের অধ্যাপক ও প্রোভিসি (প্রশাসন) ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন এবং সুজনের রাজশাহী জেলার সভাপতি আহমদ সফি উদ্দিন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান। এছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থী, আইনজীবী, রাজনীতিক, শিল্প উদ্যোক্তা, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকার কর্মী, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, নারী সংগঠক, স্বেচ্ছাসেবীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের পেশাজীবীরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংস্কার বিষয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত জানান।

রাবির প্রোভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনুসের মতো একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি আমাদের দেশের নেতৃত্বে এসেছেন, এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত সৌভাগ্যের। আমাদের উচিৎ এ সময়টিকে কাজে লাগানো। দেশ সংস্কারের বিভিন্ন ধাপগুলো পূরণ করে আমাদের জাতীয় নির্বাচনের দিকে যাওয়া উচিৎ। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে ধৈর্য্য সহকারে বর্তমান সরকারকে সময় দেয়া দরকার।

আহমদ সফি উদ্দিন বলেন, নাগরিক সমস্যা সমাধানে সকল পর্যায়ের মানুষকে নিয়ে একটি প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন। সিটি করপোরেশনের মেয়রের উচিৎ টাউনহলটি জনগণকে ফিরিয়ে দিয়ে নাগরিক ও আঞ্চলিক সমস্যা সমাধানে আলোচনার প্ল্যাটফর্ম বাড়ানো। এছাড়া দেশের সিনিয়র সিটিজেনদের প্রাপ্য অধিকার দেয়া, শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়ন করা, আইনের যথার্থ ব্যবহার, সাইবার সিকিউরিটি আইন বাতিল, প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে আয়কর নিশ্চিত করা, শিক্ষায় উন্নয়ন বাস্তবায়ন ইত্যাদি সংস্কারগুলো আবশ্যক।

জিল্লুর রহমান বলেন, ৫ আগস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশে পরিবর্তনের নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে, আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী নতুন সম্ভাবনা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারছি কিনা, তা নিয়ে নানা মত রয়েছে। পাশাপাশি, আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে, এক ফ্যাসিস্টকে বিদায় করে আমরা যেন আরেকজন ফ্যাসিস্ট তৈরি না করি। এছাড়া তিনি দেশ পুনর্গঠনে সাংবাদিকদের গুরুত্ব তুলে ধরে জানান, সাংবাদিকদের অধিকার নিশ্চিতে তাদেরকে সবার আগে সাংবাদিক হয়ে উঠতে হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সাবেক এমপি মিজানুর রহমান মিনু বলেন, দেশ পুনর্গঠনে বিএনপির ৩১ দফা রয়েছে। ইনশাআল্লাহ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসলে বিএনপি এই দফা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নতুন এক বাংলাদেশ উপহার দিবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, হাজার মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করেছি, এ দেশে আর ফ্যাসিজম কায়েম করতে দেয়া হবে না।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের দেড় দশকের শাসনামলে দেশের রাষ্ট্রযন্ত্রগুলোকে নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি দ্রুত জাতীয় নির্বাচন হওয়া দরকার বলে মত প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরী নায়েবে আমির আবু মোহাম্মদ সেলিম বলেন, যেকোনো ধরনের সংস্কারের আলোচনায় সরকারের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকা প্রয়োজন। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সরকারের আন্তরিক সম্পর্ক থাকা উচিৎ, এতে দেশে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো ত্বরান্বিত করবে।

জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরী সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মণ্ডল বলেন, রাজনৈতিক দলেও সংস্কার ও পুনর্গঠনের প্রয়োজন রয়েছে। দলে শৃঙ্খলা নিয়ে আসতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক তাসিন খান বলেন, বর্তমান সরকার শুধুমাত্র বৈষম্যবিরোধীদের নয়, এটি বর্তমান বাংলাদেশে ফ্যাসিস্টবিরোধী সকল রাজনৈতিক দলেরও। তাদের উচিৎ এ সরকারকে সর্বাত্মক সহায়তার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক দেশ সংস্কার এগিয়ে নিয়ে দ্রুত নির্বাচন দেয়া।

সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ বাংলাদেশ ভিত্তিক একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক যা সুশাসন, দুর্নীতি, মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং উন্নয়নের বিষয়ে গবেষণা ও মিডিয়া স্টাডি পরিচালনা করে। দ্রুত পরিবর্তনশীল জাতীয় ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য হলো শিক্ষাগত সম্প্রদায়, সরকার, বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ এবং উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে শাসনের মান উন্নত করা, বাংলাদেশের নিরাপত্তার চাহিদা পূরণ করা, দারিদ্র্য নিরসনের জন্য উপলব্ধ সম্পদের দক্ষ ও বিচক্ষণ ব্যবহার করার শর্ত তৈরি করা, মানব সম্পদ উন্নয়ন, বর্ধিত গণতন্ত্রীকরণ, অংশগ্রহণ এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও সামাজিক শৃঙ্খলার স্থিতিশীলতা।


আরো সংবাদ



premium cement
বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে : ডা. তাহের শুরুটা ভালো হয়নি ফাহাদের মিরসরাইয়ে মহামায়া লেক থেকে ৪ হাজার মিটার জাল জব্দ যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে’ তারেক রহমানসহ বিএনপির ৩ নেতাকে আমন্ত্রণ ‘পাঠ্যপুস্তকে বিএনপি সম্পর্কে ভুল তথ্য’ সংশোধনের দাবি ৫ মাস পর জুলাই আন্দোলনে আহত মনিরুজ্জামানের মৃত্যু ২৭ হাজার টন চাল নিয়ে ভারত থেকে জাহাজ এলো চট্টগ্রামে আসামি ছিনতাই হওয়ার অভিযোগে শ্রীনগর থানার ওসি ক্লোজড ঐক্যের ফাটল মেরামতের উপায় খুঁজছে বিএনপি ও তার মিত্ররা লালপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ইউপি সদস্য নিহত শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি : মাহমুদুর রহমান

সকল