রাবিতে 'কমপ্লিট শাটডাউন' ঘোষণা, কর্মবিরতির ডাক অফিসার্স সমিতির
- রাবি প্রতিনিধি
- ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:৫৩
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আগামী রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় 'কমপ্লিট শাটডাউনের' ঘোষণা দিয়েছেন।
অপরদিকে পোষ্য কোটা পূর্বের ন্যায় পাঁচ শতাংশে পুনর্বহাল না করলে আগামী ৮ জানুয়ারি কর্মবিরতিতে যাওয়ার ডাক দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতি।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাবির অন্যতম সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার শিক্ষার্থীদের পক্ষে শাটডাউনের ঘোষণা দেন।
একইদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অফিসার্স সমিতি নিজ কার্যালয়ে এক সভায় এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন সমিতিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো: মোক্তার হোসেন।
কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দিয়ে সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য কোটা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত জানায়। আমরা গতকাল রাতেই এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছি। আমরা ঘোষণা দিয়েই প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়েছি। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোটা রাখার বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। দ্বিতীয় স্বাধীনতা লাভের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা প্রথা একটা হাস্যকর বিষয়। অবিলম্বে পোষ্য কোটা বাতিল করে মেধাবীদের মুক্তি দিতে হবে। বৃহস্পতিবার মধ্যে পোষ্য কোটা বাতিল করা না হলে রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন করা হবে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলোও ক্যাম্পাসের বাহিরে যেতে দেয়া হবে না।’
কর্মবিরতির বিষয়ে জানতে চাইলে সমিতিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো: মোক্তার হোসেন বলেন, ‘আমরা আগামী পাঁচ তারিখে ভিসি স্যারের সাথে দেখা করবো। তিনি যদি আমাদের দাবি মেনে না নেন তাহলে ৬ তারিখে মানববন্ধন, ৭ তারিখে আমরা অবস্থান কর্মসূচি, এবং ৮ তারিখে আমরা দিনব্যাপী কর্মবিরতি পালন করব। তাতেও যদি কোনো সমাধান না হয় তাহলে আমরা একটানা কর্মসূচিতে যাব এবং কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি দেব।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, 'আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা কমপ্লিট শাটডাউন করতেই পারে। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে আলাপ-আলোচনার বিকল্প নেই। বিষয়টি সমাধানে আমরা উভয় পক্ষের সাথেই কথা বলব। কারণ এ ধরনের কর্মসূচি পালিত হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন শিক্ষার্থীরা। আমরা চাই না আমাদের কোনো শিক্ষার্থীর ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ হোক।’
এর আগে সব ধরনের পোষ্য কোটা বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে সকাল ১০টা থেকে প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এতে ১০ ঘণ্টা ধরে প্রশাসন ভবনে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই প্রো-ভিসি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিশেষ প্রয়োজনেও কাউকে বের হতে বা প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এছাড়া খাবারও খেতে পারেননি আটকে থাকা ব্যক্তিরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অনেকে। তবে কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দিলেও কোটার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বহিরাগতদের বিনা অনুমতিতে প্রবেশ ও অবস্থান নিষিদ্ধ করলো রাবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের বিনা অনুমতিতে প্রবেশ ও অবস্থান নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো: মাহবুবর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের বিনা অনুমতিতে প্রবেশ ও অবস্থান নিষিদ্ধ করা হলো এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীকে নিজ নিজ পরিচয়পত্র সার্বক্ষণিক সাথে রাখার নির্দেশ দেয়া হলো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো: মাহবুবর রহমান বলেন, গতদিনের বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঘটনার পরেই মূলত আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ক্যাম্পাসে আর কোনো বহিরাগত প্রবেশ ও অবস্থান করতে পারবে না। আজ থেকে সম্পূর্ণরূপে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলো। পরবর্তীতে কোনো বহিরাগতদের পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে নিজ নিজ আইডি কার্ড সাথে রাখার আহ্বান জানান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা