০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩০, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৫
`

কারো তাঁবেদারি নয় আমরা সুষম বন্ধুত্ব চাই : রফিকুল ইসলাম খান

বক্তব্য দিচ্ছেন মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান - ছবি : নয়া দিগন্ত

কারো তাঁবেদারি নয় আমরা সুষম বন্ধুত্ব চাই মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে সুষম বন্ধুত্বের সম্পর্ক চাই। তবে কারো প্রভুত্ব মেনে নেয়া হবে না। এদেশের মানুষ জেগে উঠতে শিখেছে। জেগে ওঠা জনগণ কারো প্রভুত্ব মানবে না।’

তিনি বলেন, ‘গত ১৬ বছরে পুরো বাংলাদেশ একটি বন্দিশালা বানিয়েছিল আওয়ামী লীগ। বিনা দোষে আমাদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করা হত। আওয়ামী ফ্যাসিবাদীর বিরুদ্ধে যারাই সংগ্রাম করতে চেয়েছে তাদেরই টুটি চেপে ধরা হয়েছিল। তারা নির্বাচনে মানুষকে হত্যা করেছে। কিন্তু মানুষ হত্যা করেও তাদের শেষ রক্ষা হয়নি।’

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে কাজিপুর উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে আলমপুর চৌরাস্তা গোলচত্বরে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘এদেশের মানুষ গণশত্রুদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ তুলেছিল। জুলাই আগস্টে হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে। তাদের একজন নেতা আস্ফালন করে বলেছিল, ছাত্রদের আন্দোলন দমাতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট। একজন বিচারপতি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে ফাঁসি দিয়ে টকশোতে আস্ফালন করে বলেছিলেন, আজকে সাঈদিকে ফাঁসি দিয়ে আসলাম। কিন্তু তাদের পরিণতি কী হয়েছে তা সারা পৃথিবী দেখেছে। অহংকার ভালো নয়, যারা অহংকার করে কথা বলতেন তারা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ট্যাক্সের টাকায় কেনা গুলি জনগণের বুকে মেরে অবৈধ সরকারকে যারা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিল তারা হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। লুটপাটকারী এসব চোরদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ঢিলেঢালাভাবে দেশ চালালে হবে না। শক্ত হাতে দেশ চালানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। যে ট্রাইব্যুনালে ইসলামী আন্দোলনের সিপাহসালার মাওলানা নিজামীকে হত্যা করেছে সেই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচার করতে হবে।’

তিন বলেন, ‘হঠাৎ সচিবলায়ে আগুন। এটা বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। পতিত সরকারের মুখ্য সচিবদের দফতরে রক্ষিত হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও পাচারের তথ্যবহুল ফাইল ছিল। তা নিঃশেষ করতেই এই আগুন। যে ফ্যাসিবাদীরা পালিয়ে যায় তারা আর ফিরে আসে না। পৃথিবীতে ফিরে আসার নজিরও নাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী আগামী দিনে এদেশকে একটি মানবিক ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র তৈরিতে চেষ্টা করছে। যেখানে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের ঠাঁই হবে না। পৃথিবীতে নবী আম্বিয়াকে আ: ইসলাম বিজয়ী করার দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছিল। আমরা সেই নবী রাসূলদের অনুসরণ করতে চাই। ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্রে আমরা রাজাও হবো না, জনগণকে প্রজাও বানাবো না। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীরা সব কাজই করতে পারবে। তাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে।’

বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী কাজিপুর উপজেলার সভাপতি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেক্রেটারি অধ্যাপক আরমান আরমান হোসেন ও কাজিপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হাসান মনসুরের যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা শাহিনুর আলম, ঢাকা দক্ষিণ জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, পাবনা জেলা জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক আব্দুর রহিম।

এ সময় অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুস ছালাম, পৌর জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুল লতিফ, রায়গঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এবি এম আব্দুস সাত্তার, বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান দবিউর রহমান, সিরাজগঞ্জ জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট ছাইদুল ইসলাম প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement