জামায়াত একটি ইসলামী সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায় : নূরুল ইসলাম বুলবুল

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি ইসলামী সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায় মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো: নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, ‘যে সমাজব্যবস্থায় কোনো বৈষম্য থাকবে না, দুর্নীতি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব থাকবে না এমন একটি সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায় জামায়াতে ইসলামী।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির অন্যতম কর্মসূচি হলো একটি বৈষম্যহীন মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ। সেই কর্মসূচি সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারায় তরুণ প্রজন্ম (ইউ ওয়ান জাস্টিস) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্লোগান দিয়ে একটি বৈষম্যমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত রাষ্ট্রের দাবিতে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে বিপ্লব অর্জন করে।’

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়ন জামায়াতের আয়োজনে দেবীনগর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আজ দেশের মানুষ বুঝতে পেরেছে ইসলাম ব্যতিত শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে না উল্লেখ করে মো: নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘শান্তিকামী মানুষ আজ দলে-দলে ইসলামের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ছাত্র-জনতা আন্দোলন করে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ করেছে। ক্ষমতার পালাবদলের জন্য ছাত্র-জনতা জীবন আর রক্ত দেয়নি। ছাত্র-জনতার অর্জিত বিপ্লবের সুফল ভোগ করতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গঠনে কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এখন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ গড়বো। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পরাজিত শক্তি তাদের বিদেশী প্রভুদের ষড়যন্ত্রে প্রতিবিপ্লবের অপচেষ্টা করবে। সেজন্য সকল রাজনৈতিক দলকে ছাত্র-জনতার পক্ষে একসাথে কাজ করতে হবে।’

এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘কোনো একটি রাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে পরাশক্তি প্রথম যে কাজ করে তা হলো ওই রাষ্ট্রের জাতি-গোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা। দলমত, জাতি-গোষ্ঠী, ধর্মবর্ণ সকলে বাংলাদেশের নাগরিক পরিচয়ে এক ও অভিন্ন থাকতে পারলে কোনো পরাশক্তি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার পথে আর বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং তার পরবর্তী সকল আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের বিজয় হয়েছে যুব সমাজের হাত ধরে। তাই যুব সমাজকে আগামীতেও ঐক্যবদ্ধ থেকে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের দোসররা জনগণের রক্ত চুষে খেয়েছে। তাদেরকে আইনের হাতে তুলে দেয়ার মাধ্যমে সামাজিকভাবে প্রতিহত ও বয়কট করতে হবে। তিনি আগামীদিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে শান্তির নীড় হিসেবে গড়ে তুলতে সকলের কাছে সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেবীনগর ইউনিয়ন সভাপতি মো: শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি গোলাম মুর্শেদের সঞ্চালনায় পথসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, জেলা নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক লতিফুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু বকর, সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান।

আরো বক্তব্য দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর আমির হাফেজ মাওলানা গোলাম রাব্বানী, সদর উপজেলা আমির হাফেজ আব্দুল আলীম, সদর উপজেলা সেক্রেটারি গোলাম কবির, পৌর সহকারী সেক্রেটারি তোহরুল ইসলাম সোহেল ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সেক্রেটারিসহ প্রমুখ।