২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১০ কার্তিক ১৪৩১, ২২ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

উদ্বোধনী দিনে সন্তোষজনক সাড়া পায়নি ‘কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন’

উদ্বোধনী দিনে সন্তোষজনক সাড়া পায়নি ‘কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন’ - প্রতীকী ছবি

রাজশাহী থেকে কৃষিপণ্য পরিবহনে চালু হওয়া ‘কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন’ শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে উদ্বোধনী দিনে যাত্রা শুরু হলেও সন্তোষজনক সাড়া পায়নি ট্রেনটি। এদিন সবজির বদলে ট্রেনটি পরিবহন করেছে মাত্র ১৫০ কেজি প্লাস্টিকের ক্যারেট। আর এতে আয় হয়েছে মাত্র ১৭৭ টাকা!

উদ্বোধনী দিনে এ পরিবহনসেবা ও এ সংক্রান্ত আয় হতাশাজনক হলেও পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি প্রতিকুল আবহাওয়া এবং অনেকে বিষয়টি না জানার কারণে এমনটি হয়েছে। আবহাওয়া ভালো হলে এবং প্রচারণা বাড়লে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটবে। তখন এর আয়ও বাড়বে বলে মনে করছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

রাজশাহীর পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে কৃষিজাত পণ্য নিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে এ স্পেশাল ট্রেন। এটি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন হয়ে রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছার কথা রয়েছে বিকেলের মধ্যেই। এতে রহনপুর থেকে প্রতি কেজি কৃষিপণ্য পরিবহনে খরচ পড়ছে মাত্র এক টাকা ৩০ পয়সা। আর রাজশাহী থেকে পড়ছে এক টাকা ১৮ পয়সা।

প্রথম দিন রহনপুর-ঢাকা রুটে ট্রেনটি মাত্র ১৫০ কেজি প্লাস্টিকের ক্যারেট পরিবহন করছে। আর এগুলো বুকিং হয় রাজশাহী থেকে। সেই হিসেবে উদ্বোধনী দিনে ‘কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন’ আয় করেছে মাত্র ১৭৭ টাকা। যদিও তাদের হিসাবে লেখা আছে ৩৬০ টাকা। তবে বাড়তি টাকা কিসের তা সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। অথচ উদ্বোধন হওয়া বিশেষ এ ট্রেনটিতে কৃষিজাত ও পচনশীলপণ্য পরিবহনের জন্য মোট সাতটি লাগেজ ভ্যান বা বগি আছে। এরমধ্যে একটি রেফ্রিজারেটেড লাগেজ ভ্যান (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) এবং অপর ছয়টি সাধারণ।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার শহিদুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, উদ্বোধনী দিনে কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেনটি রাজশাহী স্টেশন থেকে কোনো সবজি বুকিং হয়নি। তবে ১৫০ কেজি ক্যারেট পাঠানো হয়েছে। আজকে কেবল আনুষ্ঠানিকতা ছিল। আগামীতে সবজি পরিবহনে এ ট্রেন কৃষক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (সিসিএম) সুজিত কুমার বিশ্বাস গণমাধ্যমকে জানান, গত কয়েকদিন থেকে ‘কৃষিপণ্য স্পেশাল’ ট্রেন উদ্বোধন উপলক্ষে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ বিভিন্নভাবে তৃণমূল পর্যায়ে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। জেলা কৃষি বিপণন ও কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমেও প্রচারণা চালানো হয়। তবে স্থানীয় কৃষকদের সাথে ঢাকার ব্যবসায়ীদের সমন্বয় নেই। আর তারা আগে থেকে কথা না বলে মালামাল পাঠালে ঝামেলায় পড়তে পারেন। এজন্য প্রথম দিন কেউ এমন ঝামেলায় পড়তে চাননি। তাই জানার পরও অনেকে হয়ত ট্রেনে কৃষিপণ্য বুকিং দেননি।

তিনি আরো জানান, বর্তমানে বৈরি আবহাওয়াও অন্যতম একটি কারণ। গত কয়েক দিন থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। তাই অনেক কৃষক ফসল সংগ্রহ করতে জমিতে যেতেও পারেননি। ফলে প্রথম দিন সবজি পরিবহনে এমনটি হয়েছে। আবহাওয়া ভালো হলে এবং এ বিষয়টি সবার মধ্যে ব্যাপক প্রচার হলে আগামীতে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। এর মধ্যে স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সাথে ঢাকার সমন্বয় হয়ে যাবে বলেও আশা করছেন তিনি।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমাঞ্চল রেলে তিনটি কৃষিপণ্য ট্রেন চালু করেছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে। এর মধ্যে ২২ অক্টোবর যশোর থেকে প্রথম আনুষ্ঠানিক যাত্রা করে কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন। ২৬৮ কেজি পণ্য নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যশোর ছেড়ে যায় ট্রেনটি। গত বৃহস্পতিবার পঞ্চগড় থেকে উদ্বোধন করা হয় পঞ্চগড় কৃষি স্পেশাল ট্রেন। পণ্য ছাড়াই ট্রেনটি উদ্বোধন শেষে গন্তব্যে ছেড়ে যায়। আর শনিবার (২৬ অক্টোবর) উদ্বোধন করা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কৃষি স্পেশাল ট্রেনেরও একই হতাশাজনক অবস্থা।


আরো সংবাদ



premium cement