কোনো অবৈধ আদেশ যেন পুলিশকে দেয়া না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- রাজশাহী ব্যুরো
- ২০ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:৫২
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ৫ আগস্টের পরে যে পরিস্থিতিতে পুলিশ দায়িত্ব নিয়েছে তার থেকে বর্তমানে অবস্থার বেশ উন্নতি হয়েছে। তবে জনগণ বা আমরা এখনো কিন্তু সন্তোষজনক পর্যায়ে উপনীত হতে পারিনি। আমরা বলি জনবান্ধব পুলিশ। আমরা কিন্তু এটা করতে পারিনি। জাতীয় স্বার্থের বাইরে কোনো ধরণের অবৈধ আদেশ যেন পুলিশ সদস্যদেরকে দেয়া না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
রোববার (২০ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) সদর দফতরে রাজশাহীতে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সাথে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের পুলিশের অধিকাংশ সদস্যই ভালো। কিন্তু গুটি কয়েকজনের অতিউৎসাহীমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য এতদিন পুলিশ জনবান্ধব হতে পারেনি।
পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে উপদেষ্টা বলেন, অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সদস্যরা তাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ পুলিশে এখনো বেশকিছু সমস্যা রয়ে গেছে। পুলিশ সদস্যদের থাকার জায়গা ও খাবারের মান সন্তোষজনক নয়। নিম্নপদস্থ পুলিশ সদস্যদের টিএডিএ বিল অনেক বকেয়া পড়ে গেছে। অতিসত্ত্বর এসব বিল পরিশোধ করার জন্য নির্দেশ দেন তিনি।
পুলিশ সদস্যদের কর্তব্য পালনের সুবিধার জন্য একই রেঞ্জের মধ্যে বদলি ও পদায়ন করা যায় কিনা তা বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন উপদেষ্টা।
আন্দোলনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত থানাগুলো মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে চাহিদাপত্র আহবান করে তিনি অতিদ্রুত মেরামত কার্যক্রম পরিচালনার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। ভাড়া বাসার পরিবর্তে জমি অধিগ্রহণ করে নিজস্ব জায়গায় থানা ভবন নির্মাণ করা যায় কিনা তা যাচাই করার নির্দেশনা দেন তিনি।
আরএমপি কমিশনার মো: আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি মো: ময়নুল ইসলাম, র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান ও সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি মো: মতিউর রহমান শেখ।
বরেন্দ্র এলাকায় উপদেষ্টা
এরআগে স্বরাষ্ট্র ও কৃষ্টি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সরমংলা ইকোপার্কে কৃষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। এতে প্রধান অতিথির স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা বলেন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি উৎপাদন ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তথাপিও তাদের কাজের আরো সুযোগ রয়েছে। নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বার্থে নয়, বরং সাধারণ কৃষকের উন্নয়নে ও স্বার্থে বিএমডিএ’কে কাজ করতে হবে।
রাজশাহীতে খাওয়ার আলুর জন্য হিমাগার বা সংরক্ষণাগার রয়েছে কিন্তু বীজ আলু সংরক্ষণের জন্য কোনো হিমাগার নেই কৃষকদের এমন মন্তব্যের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সরকার কৃষি বিপণন অধিদফতরের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিদের আলু সংরক্ষণে আড়াই লাখ টাকা ব্যয়ে অহিমায়িত মডেল ঘর নির্মাণ করছে। আলু উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নেদারল্যান্ডস থেকে উন্নত জাতের আলুবীজ আমদানি করা হয়েছে। উপদেষ্টা এসময় আলু বীজের দাম যাতে না বাড়ে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করেন।
মতবিনিময়কালে কৃষকরা আরো জানান, এ অঞ্চলের মাটিতে পিএইচের পরিমাণ কম থাকায় অধিক অম্লত্বের কারণে ফসলের উৎপাদন কম হচ্ছে। কৃষকরা এ সমস্যা সমাধানে উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে গবেষণাপূর্বক উদ্ভূত সমস্যাটি সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
এসময় উপদেষ্টা কৃষকদের খোঁজখবর নেন এবং তাদের বিভিন্ন সমস্যা-সম্ভাবনার কথা শোনেন। তিনি কৃষকদেরকে লাভজনক শস্য উৎপাদন ও শস্য বহুমুখীকরণের পরামর্শ প্রদান করেন।
উপদেষ্টা এর আগে ‘পদ্মা নদী হতে সরমংলা খাড়িতে ভূগর্ভস্থ পাইপ লাইন দ্বারা পানি সঞ্চালন’ প্রকল্প পরিদর্শন করেন। তিনি সরমংলা খাড়িতে পোনামাছ অবমুক্ত করেন এবং সরমংলা ইকোপার্কে ‘ব্ল্যাকস্টোন’ জাতের আমের চারা রোপণ করেন। পরে তিনি বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পরিচালিত কলিপুর ইরিগেশন সিস্টেম পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. এম আসাদুজ্জামান ও নির্বাহী পরিচালক মো: শফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা