আ’লীগের ২ এমপিসহ ১৪১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
- শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা
- ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:৩০
বগুড়ার শেরপুরে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে সশস্ত্র হামলা ও মারপিটের অভিযোগে আ’লীগের সাবেক দুই এমপির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় তাদের ছেলে ও ব্যক্তিগত সহকারীসহ আ’লীগ ও অঙ্গসংগঠনের আরো ১৪১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টু এ মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন সাবেক এমপি হাবিবর রহমান, তার ছেলে আসিফ ইকবাল সনি, ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) কোরবান আলী মিলন, সাবেক এমপি ও বগুড়া আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, তার ছেলে শেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সারোওয়ার রহমান মিন্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেড গোলাম ফারুক, সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব আম্বীয়া, পৌর শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন, পৌর সাবেক প্যানেল মেয়র নাজমুল আলম খোকন, সাবেক কাউন্সিলর শুভ ইমরান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তারিকুল ইসলাম তারেক, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান ভুট্টো, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সানিসহ ১০টি ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর বেলা সোয়া ১১টার দিকে শেরপুর শহরের স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডের খেজুরতলার বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের পশ্চিমপাশে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ওপর স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল করছিলেন নেতা-কর্মীরা। এ সময় মামলার এজাহারে উল্লেখিত আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্রসহ লোহার রড, লাঠি নিয়ে বিএনপির ওই মিছিলে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এমনকি বিএনপির ওই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া নেতা-কর্মীদের ওপর গুলি ছুড়ে এবং হাতবোমা নিক্ষেপ করেন।
এ সময় সোহাগ ও শান্ত নামের দু’জন গুরুতর আহত হন। এছাড়া লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বিএনপি নেতা মামুনুর রশিদ আপেল, যুবদল নেতা আশরাফুদ্দৌলা মামুন, স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা শাহ কাওছার কলিন্সসহ বেশকয়েকজন নেতা-কর্মীকে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করে। এরপর সশস্ত্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। এতে এক লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে মামলার এজাহারে দাবি করা হয়।
মামলার বাদি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমরা যেন মামলা করতে না পারি সেজন্য থানায় পাহারা বসিয়েছিল। ওই ঘটনায় মামলা করলে প্রাণনাশ করা হবে বলেও হুমকি-ধামকি দিয়েছিল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তাই তাদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিতে পারিনি। কিন্তু ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ সুগম হয়। ফলে ন্যায়বিচার পেতে এখন মামলাটি করেছেন বলে দাবি করেন ওই বিএনপি নেতা।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মামলায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি হাবিবর রহমান ও মজিবর রহমান মজনুর মোবাইলফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও মোবাইল বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। পাশাপাশি ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ কাজ করছেন।