দ্রুত দৃশ্যমান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নবনিযুক্ত রামেবি ভিসির
- রাজশাহী ব্যুরো
- ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১:১১
রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) নবনিযুক্ত ভিসি প্রফেসর ডা. মো: জাওয়াদুল হক প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে দ্রুত দৃশ্যমান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির লক্ষ্য নিয়ে দায়িত্ব নিয়েছি। এখন দ্রুত সময়ে, আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, সততা এবং স্বচ্ছতার সাথে কাজ করতে চাই।‘
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় রামেবি ভিসি লিখিত বক্তব্যে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা ও সালাম জানিয়ে বীর শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনাসহ আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। সাংবাদিকদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতাও জানান তিনি।
রামেবি ভিসি বলেন, ‘২০১৬ সালের ১২ মে প্রকাশিত ২০১৬ সালের ১৮ নম্বর আইন দ্বারা রামেবি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল প্রধানত তিনটি :
১. রাজশাহী এবং এর আশপাশের প্রায় দুই কোটি মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে এক হাজার ২০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করা।
২. চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিষয়ক জনবল তৈরি ও তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ১০টি ফ্যাকাল্টি চালু করা।
৩. চিকিৎসা সেবার মানকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আট বছর অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু এখনো এ তিনটি লক্ষ্য বাস্তবায়নের প্রাথমিক কাজও সম্পন্ন সম্ভব হয়নি। এমন অবস্থায় আমার ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। আমি যেন এসব লক্ষ্য অর্জনে অত্যন্ত স্বচ্ছতা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে পারি, সেজন্য রাজশাহী অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ, বিশেষ করে আপনাদের (সাংবাদিক) পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রয়োজন।’
রামেবি ভিসি আরো বলেন, ‘রামেবির অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে। প্রথমে রাজশাহী, রংপুর এবং খুলনা বিভাগ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত ছিল। ২০২১ সালে খুলনা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন খুলনা বিভাগে অবস্থিত চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে রামেবি থেকে পৃথক হয়ে যায়। অবশ্য যেসব শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম রামেবির অধীনে শুরু হয়েছিল, সেগুলো শেষ হওয়া পর্যন্ত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেই পরিচালিত হচ্ছে বা হবে। বর্তমানে রামেবির অধিভুক্ত মেডিক্যাল, ডেন্টাল, নার্সিং, আইএইচটি ও হামদর্দ মিলিয়ে সর্বমোট ৭৬টি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে। এগুলোতে বর্তমানে কেবল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট কোর্স চালু রয়েছে।’
মতবিনিময় সভায় বিগত সময়ে ভূমি অধিগ্রহণ এবং বাজেট ও বরাদ্দ সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেন রামেবি ভিসি। জনবল নিয়োগের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস ও ভবন নির্মাণ, পোস্টগ্র্যাজুয়েশন কোর্স চালু এবং গবেষণা কার্যক্রম শুরু করার কথাও জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে রামেবি ভিসি বলেন, ‘আইনিভাবে যার যেটুকু প্রাপ্য আমি সেটাই করব। এগিয়ে নেয়ার জন্য স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ করব। এখনো রামেবির নিজস্ব অফিস, ভবন বা ক্যাম্পাস গড়ে ওঠেনি। সরকারের অনুমোদনক্রমে রামেবির ক্যাম্পাসে তাদেরই ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে। তবে রামেবির নিজস্ব ক্যাম্পাস ও ভবন নির্মাণকল্পে ইতোমধ্যে ৬৭ দশমকি ৬৭৯২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। গত ৮ মে জেলা প্রশাসন এই ভূমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছে। জমি অধিগ্রহণ বাবদ মোট ব্যয় হয়েছে ৭৫৮ দশমিক ৮৩ কোটি টাকা।’
রামেবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডা. আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় এ সময় রামেবির পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুম মুনির, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) ডা. জাকির হোসেন খোন্দকারসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং রাজশাহীতে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত (৯ সেপ্টেম্বর) রামেবির কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. মোহা. জাওয়াদুল হককে রামেবির ভিসি নিয়োগ দেয়া হয়। রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসা শিক্ষা-১ শাখা থেকে উপসচিব মোহাম্মদ কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে শূন্য পদে চার বছরের জন্য তাকে এ নিয়োগ দেয়া হয়। পরদিন ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে রামেবি ভিসি হিসেবে যোগদান করেন তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা