সৌদি যুবরাজ ও ইরানের প্রেসিডেন্টের সাথে ফোনালাপ

নেতানিয়াহু মধ্যপ্রাচ্যের জন্য বড় হুমকি : এরদোগান

আলজাজিরা
Printed Edition
নেতানিয়াহু মধ্যপ্রাচ্যের জন্য বড় হুমকি : এরদোগান
নেতানিয়াহু মধ্যপ্রাচ্যের জন্য বড় হুমকি : এরদোগান

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান বলেছেন, ইরানের ওপর সাম্প্রতিক হামলা প্রমাণ করে যে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। এরদোগানের কার্যালয় জানায়, সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে এক টেলিফোন আলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি আরো বলেন, ইসরাইলকে অবশ্যই থামানো উচিত, তাহলে উত্তেজনা কমবে। আর পারমাণবিক সঙ্কটের সমাধান কেবলমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই সম্ভব। এরদোগান সতর্ক করে বলেন, যুদ্ধ যদি আরো বিস্তৃত আকার ধারণ করে, তবে পুরো অঞ্চলে শরণার্থীর ঢেউ সৃষ্টি হতে পারে, যা প্রতিটি দেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

এরদোগান বলেন, উত্তেজনা কমাতে ইসরাইলকে থামানো জরুরি। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা করে বলেন, তারা ফিলিস্তিনে ইসরাইলের দখলদারত্ব ও গণহত্যার বিষয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। এই নীরবতাই ইসরাইলকে আরো বেপরোয়া ও আইনভঙ্গকারী আচরণে উৎসাহ দিচ্ছে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, ইসরাইলের এই হামলার সময় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক ইস্যুতে আলোচনা চলছিল। আর এই হামলার লক্ষ্য ছিল সেই শান্তি প্রচেষ্টা নস্যাৎ করা। ইসরাইলি হামলার ফলে পারমাণবিক গ্যাস বা তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে বলেও দাবি করেন এরদোগান। তিনি এটিকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য এক ভয়াবহ দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন।

এরদোগান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এই অঞ্চল আরেকটি বড় সঙ্কট সহ্য করতে পারবে না। যদি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে অনিয়মিত অভিবাসনের ঢল নামতে পারে। আর ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়টি অবশ্যই আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট একইসাথে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ানের সাথেও ফোনে কথা বলেন। সেই আলোচনায় তিনি জানান, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই অঞ্চলকে আগুনে জ্বালিয়ে দিতে এবং পারমাণবিক আলোচনা বানচাল করতেই ইরানে হামলা চালাচ্ছেন। এরদোগানের দফতর আরো জানায়, তিনি পেজেশকিয়ানকে বলেছেন, গাজায় চলমান গণহত্যা থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের মনোযোগ সরিয়ে নিতে ইরানে হামলা চালানো হচ্ছে।

এরদোগানের এ বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে কূটনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ দিনে ইরান-ইসরাইল সঙ্ঘাত ঘিরে চলমান উত্তেজনা নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে টেলিফোনে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন।

ক্রেমলিনের শীর্ষ পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ দেশটির সংবাদ সংস্থাগুলোকে জানান, পুতিন ফোনালাপে ইরানের ওপর ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানান। উভয় নেতা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি। তিনি আরো বলেন, দুই নেতার মধ্যে প্রায় ৫০ মিনিট ধরে কথা হয় এবং আলোচনাকে ‘অর্থবহ ও উপকারী’ হিসেবে বর্ণনা করেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এ ধরনের আলোচনা রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক অবস্থান ও ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক সমন্বয় নিয়ে নতুন ইঙ্গিত দিচ্ছে।