নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশে হৃদরোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত তিন কোম্পানির তৈরি ১০ ধরনের করোনারি স্টেন্ট বা রিংয়ের দাম নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ১ অক্টোবর থেকে স্টেন্টের নতুন দাম কার্যকর হবে। গত ৩ আগস্ট সরকার ওই তিন কোম্পানির ১০ ধরনের স্টেন্টের দাম তিন হাজার থেকে ৮৮ হাজার টাকা পর্যন্ত কমিয়েছে সরকার। ধমনিতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে হৃদযন্ত্রের স্বাভাবিক ক্রিয়া সচল রাখতে এনজিওপ্লাস্টির মাধ্যমে স্টেন্ট বা হার্টে রিং পরানো হয়। কেবল ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্টরাই হার্টে স্টেন্ট পরিয়ে থাকেন।
গতকাল মঙ্গলবার মহাখালীতে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওষুধ প্রশাসনের পরিচালক ড. মো: আকতার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, করোনারি স্টেন্টের দাম সহনশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার অংশ হিসেবে গত ১৬ এপ্রিল একটি বিশেষজ্ঞ পরামর্শক কমিটি গঠন করা হয়। বাজারে প্রচলিত আমেরিকার কোম্পানি মেডট্রোনিক, বোস্টন সায়েন্টিফিক এবং অ্যাবোটের রিংয়ের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি থাকায় প্রাথমিকভাবে এগুলোর বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়। এর পর গত ৩ আগস্ট এসব কোম্পানির ১০ ধরনের রিংয়ের দাম নতুন করে নির্ধারণ করা হয়।
মো: আকতার হোসেন বলেন, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে এখনো কিছু স্টেন্ট মজুদ থাকায় নতুন দাম বাস্তবায়নের জন্য কিছু দিন সময় চেয়ে মন্ত্রণালয় এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে আবেদন করেছে। তাদের কাছে আগের দামে কেনা ৬ মাস থেকে তিন বছরের স্টেন্টের মজুদ আছে। অন্য দিকে দাম কমানোর বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় নতুন দামে স্টেন্ট দিতে হাসপাতালে রোগীর স্বজনরা চাপ দিচ্ছে। এসব বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১০ ধরনের হার্ট রিংয়ের নতুন দাম নির্ধারণ করে আগামী ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে।
মো: আকতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর অন্তত ৪৫ থেকে ৫০ হাজার করোনারি স্টেন্টের প্রয়োজন হয়। নিবন্ধিত ৩১টি কোম্পানি করোনারি স্টেন্ট আমদানি করে। মোট স্টেন্টের ৫০ শতাংশই এই তিনটি কোম্পানি আমদানি করে। এ জন্য এই তিন কোম্পানির স্টেন্টের দাম আগে কমানো হয়েছে। বাকি কোম্পানিগুলোর স্টেন্টের দামও শিগগিরই নির্ধারণ করা হবে।
জনপ্রিয় ৩ কোম্পানির স্টেন্টের পুরনো ও নতুন দাম : মেডট্রোনিকের তৈরি রিসলিউট অনিক্সের স্টেন্টের দাম এক লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৯০ হাজার টাকা করা হয়েছে। একই কোম্পানির অনিক্স ট্রুকরের দাম ৭২ হাজার টাকা থেকে করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা।
বোস্টন সায়েন্টিফিকের প্রোমাস এলিটের দাম ৭৯ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৭২ হাজার টাকা করা হয়েছে। প্রোমাস প্রিমিয়ার স্টেন্ট ৭৩ হাজার টাকার বদলে ৭০ হাজার, সাইনার্জির দাম এক লাখ ১৭ হাজার টাকা থেকে ৯০ হাজার, সাইনার্জি শিল্ড এক লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে ৯০ হাজার টাকা এবং সাইনার্জি এক্সডি এক লাখ ৮৮ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে এক লাখ টাকা করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অ্যাবোটের জায়েন্স প্রাইম স্টেন্টের দাম ৬৬ হাজার ৬০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ হাজার টাকা, জায়েন্স আলপাইনের দাম এক লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৯০ হাজার টাকা এবং জায়েন্স সিয়েরার দাম এক লাখ ৪০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৯০ হাজার টাকা করা হয়েছে।



