গৌরনদী (বরিশাল) সংবাদদাতা
বরিশালের গৌরনদীতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিকক্ষকসহ দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উদাসীনতা, দায়িত্বে অবহেলা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ছুটি না নিয়ে সম্প্রতি কক্সবাজার পিকনিকে যাওয়ার ঘটনা জানাজানি হলে এ নিয়ে শিক্ষকসমাজে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন ইউএনও।
সরেজমিনে জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গোপালগঞ্জ জেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরির সূত্রে শাহিন এবং আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য হওয়ায় ফারহান হোসেন নান্নু গৌরনদীর সাবেক পৌর মেয়র হারিছুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন হয়ে ওঠেন। হারিছের একচ্ছত্র রাজনৈতিক অধিপত্যকে ব্যবহার করে তারা স্থানীয় শিক্ষকসমাজ ও এলাকায় ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেন। এমনকি হারিছের রাজনৈতিক তদবিরে প্রায় আড়াই বছর আগে গৌরনদীর নাঠৈ রিজিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগ দেন।
জানা গেছে, ছুটি না নিয়ে গত ২৮ জুলাই থেকে ১ আগষ্ট পর্যন্ত সাংবাদিকতার প্রভাব খাটিয়ে শাহিন ও ফারহান পরিবার নিয়ে কক্সবাজার গেছেন। ঘটনার সময় প্রধান শিক্ষক শাহিন বিদ্যালয়ের হাজিরাখাতায় উপস্থিতি স্বাক্ষর করলেও বাস্তবে তিনি কক্সবাজারে ছিলেন। অন্য দিকে নান্নু অসুস্থতার অজুহাতে ছুটি নিলেও পরিবারের সাথে একই ভ্রমণে অংশ নেন। পরবর্তীতে ঘটনাটি জানাজানি হলে নান্নু তিন দিনের নৈমিত্তিক ছুটি দেখান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিবাবক অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক শাহিন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ মাসিক বেতন আদায় করছেন। এ ছাড়া গত দুই বছরের এসএসসি পরীক্ষায় ফরম পূরণের জন্য ৩-৪ হাজার টাকা অতিরিক্ত ফি নেয়ার অভিযোগও করেন তারা।
উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেডের (কালব) সভাপতি সহকারী শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘আমি নির্বাচিত সভাপতি থাকা সত্ত্বেও উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ চার নেতাকে দিয়ে এবং শাহিন মাস্টার সাংবাদিকতার দাপট দেখিয়ে আমাকে একাধিকবার পদত্যাগের জন্য চাপ দিয়েছেন। তবে ৫ আগষ্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কারণে সেটি আর সম্ভব হয়নি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে নান্নু বলেন, ‘আমি আমার প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। পত্রিকায় লিখলে কি হবে?’ অপর অভিযুক্ত শাহিন উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আমি কোনো অনিয়ম করিনি। অনিয়ম-দুর্নীতি দেখা সাংবাদিকদের কাজ না।’
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আরা মৌরি বলেন, এ ঘটনায় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি।



