নবীন চৌধুরী
এক সময়ে গ্রাম বাংলা ঘরে ঘরে শোনা যেত ভাতে-মাছে বাঙালি। কিন্তু কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে ভাতে মাছে বাঙালি কথাটি। এছাড়া পঁটির তেলে পুঁটি মাছ ভাজা। এটি এখন শুধু গল্প মনে হলেও এক সময় সত্যি ছিল। গ্রামের মানুষ নদী-নালা, খাল-বিল থেকে ঝাঁপি ঝাঁপি পুঁটি মাছ মেরে ওই পুঁটির তেল দিয়েই পুঁটি মাছ খেত। সব বাঙালিরই প্রিয় দেশীয় ছোট মাছ। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে ছোট মাছ। বাংলাদেশের বিভিন্ন বড় বড় নদী, বিল, নদ-নালা খাল-বিলে এখন মিলছে না তেমন ছোট মাছ। পানি দূষণ ও পানি স্বল্পতার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ছোট মাছ। ইতোমধ্যে দেশীয় প্রজাতির ছোট বড় অনেক মাছ হারিয়ে গেছে। গজার, টেপা মাছ, মাগুর,বোয়াল, চিতল, ফলি, ফাসা, নুনা মাছ, চেবলি, আইকার, তপসে, চাঁদা মাছ এখন আগের মতো খুঁজে পাওয়া যায় না। মাছ বাজারে পাওয়া যায় না ঢেলা, তারা বাইন, বাতাসি, বাইলা, শিং, ভেকটি, জাল মাছ চিংড়িসহ হরেক রকম মাছ। কৈ মাছ, খৈলশা, পুঁটি মাছ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন বিলের আশপাশের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে কথা বললে তারা জানান, জমিতে অতিরিক্ত সার, কীটনাশক ব্যবহার ও ছোট খাল বিলের মাটি ভরাট করে বাড়ি ঘর তৈরি করার ফলেই ছোট পানির অনেক ছোট মাছ এখন হারিয়ে গেছে। ছোট মাছের অভাবে তারা চাষের তেলাপিয়া,পাঙ্গাস বার্মার রুই ও জিলবার চাষ করে খেয়ে বেঁচে আছে। একজন সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জানান, ফাগুন-চৈত্র মাসে খাল-বিল, নদী-নালা শুকিয়ে যাওয়ায় দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ প্রজনন করতে পারে না। এ কারণে বর্ষা মৌসুমেও আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না।
লেখক : নয়া দিগন্তের ধামরাই সংবাদদাতা



