বিনোদন প্রতিবেদক
বারবারা গিপস, যিনি রিডলি স্কটের কালজয়ী বিজ্ঞানভিত্তিক ভৌতিক চলচ্চিত্র ‘এলিয়েন’ (১৯৭৯)-এর জন্য ইতিহাসখ্যাত সংলাপ ‘মহাশূন্যে তোমার চিৎকার কেউ শুনতে পাবে না’ লিখেছিলেন, তিনি আর নেই। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। গত ১৬ অক্টোবর নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত জটিলতার কারণে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে তার প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। পেশায় একজন বিজ্ঞাপন লেখিকা ছিলেন বারবারা গিপস। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘এলিয়েন’ চলচ্চিত্রের এই বিখ্যাত সংলাপটি তার মাথায় আসে একেবারে সাধারণ এক মুহূর্তে থালা-বাসন ধোয়ার সময়। পোস্টারের জন্য বিবেচনায় থাকা অন্য সব বাক্য বাদ দিয়ে শেষ পর্যন্ত এই লাইনটিই বেছে নেয়া হয়, যা পরে চলচ্চিত্র ইতিহাসে স্থান পায় অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংলাপ হিসেবে। লেখক ডেভ অ্যাডডি তার এক বইয়ে উল্লেখ করেছিলেন, ‘এই সংলাপটি শুধু শব্দের সৌন্দর্যের জন্য নয়, বৈজ্ঞানিকভাবেও সত্য- কারণ মহাশূন্যে শব্দ ছড়াতে পারে না।’
বারবারার স্বামী ছিলেন বিশিষ্ট নকশাশিল্পী ‘ফিলিপ গিপস’ যিনি ‘রোজমেরিস বেবি’ (১৯৬৮), ‘ডাউনহিল রেসার’সহ (১৯৬৯) অনেক পরিচিত চলচ্চিত্রের পোস্টার তৈরি করেছিলেন। ‘এলিয়েন’ চলচ্চিত্রের পোস্টারটি তিনিই সহনকশা করেছিলেন, যেখানে একটি ডিম ফেটে রহস্যময় সবুজ আভা ছড়িয়ে পড়ছে- তাই বলা চলে, এটি ছিল এক অর্থে পারিবারিক সৃষ্টি। ১৯৭৯ সালে নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক লেখায় সমালোচক জ্যানেট মাসলিন লিখেছিলেন, ‘আমাকে এলিয়েন দেখতে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করেছিল সেই বিজ্ঞাপনের অপ্রতিরোধ্য সংলাপটি।’ বারবারা গিপসের লেখা এই লাইনটি আজো ইতিহাসের সেরা চলচ্চিত্র সংলাপের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। তিনি আরো বহু জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের জন্য সংলাপ লিখেছিলেন, যেমন- ‘ক্রেমার বনাম ক্রেমার’ (১৯৭৯) : ‘টেড ক্রেমার এখন জানতে চলেছেন যা এক কোটি নারী অনেক আগেই জানেন।’ ‘ডেসপারেটলি সিকিং সুসান’ (১৯৮৫) : ‘এটি এমন এক জীবন, যা একা একজন নারীর পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।’ ‘সিল্কউড’ (১৯৮৩) : সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত মানুষটিও কখনো কখনো হয়ে ওঠে প্রকৃত নায়ক। ‘ফ্যাটাল অ্যাট্র্যাকশন’ (১৯৮৭) : এক রাতের সম্পর্কের অপর পাশে লুকিয়ে থাকে ভয়াবহ এক প্রেমের গল্প। ‘নো ওয়ে আউট’ (১৯৮৭) : এটি কি প্রেমঘটিত অপরাধ, না দেশদ্রোহ? ‘পোস্টকার্ডস ফ্রম দ্য এজ’ (১৯৯০) : ‘অসাধারণ সময় কাটাচ্ছি; কিন্তু ইচ্ছে করছে আমি যেন নিজেই এখানে থাকতাম।’
১৯৩৬ সালে নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসের রিভারডেল এলাকায় বারবারা সোলিঙ্গার নামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।



