নিজস্ব প্রতিবেদক
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেনাপ্রধানের একটি বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে, যা একটি উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান কার্যক্রমে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর কার্যকলাপ আরো উন্নত ও গতিশীল করার উপায় সন্ধানে আয়োজিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনা (স্টাডি পিরিয়ড) অনুষ্ঠানে সেনাসদস্যদের দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মোতায়েন এবং এর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জগুলো উপস্থাপিত হয়। ওই আলোচনায় ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর জন্য প্রযোজ্য বাংলাদেশ দণ্ডবিধি (সিআরপিসি) ১২৭-১৩২ ধারা, বর্তমানে সেনাবাহিনীকে প্রদত্ত ‘ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা’ আরোপের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন দিক আলোকপাত করা হয়।
আইএসপিআর জানায়, আইনগত, প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে মাঠে নিয়োজিত সেনাদল কর্তৃক প্রযোজ্য আইনের ধারা সঠিকভাবে অনুধাবন করে পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব সঠিক ও সুচারুরূপে পালনে সক্ষম করাই ছিল এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এ মাঠে নিয়োজিত সেনাসদস্যদের (সিআরপিসি) ১৩২ এ প্রদত্ত দায়মুক্তির বিষয়ে কথা ওঠে এবং সেনাপ্রধান আলোচনার অংশ হিসেবে (সিআরপিসি) ১৩২ এ প্রদত্ত দায়মুক্তি (ওহফবসহরঃু) এবং ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঈৎরসবং (ঞৎরনঁহধষং) অপঃ, ১৯৭৩ (সংশোধিত ২০২৪)-এর সাথে এর সাংঘর্ষিক অবস্থান সম্পর্কে আলোকপাত করেন। (সিআরপিসি)-এর অধীনে সরকারি আদেশে মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালনকারী সেনাসদস্যরা প্রদত্ত আইনি বিধান অনুসারে বেআইনি জনসমাগম ছত্রভঙ্গ করেন। অতএব, দায়িত্বরত এই সেনাসদস্যদের আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিতের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিষয়টি ইতোমধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
আইএসপিআর জানায়, আলোচনার কোনো পর্যায়েই সেনাপ্রধান গুম-খুন বা অন্যান্য মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত কাউকে দায়মুক্তি (ওহফবসহরঃু) দেয়ার বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ করেননি; কিন্তু একটি চিহ্নিত কুচক্রী মহল বিশেষ করে বিদেশে অবস্থানরত কিছু ব্যক্তি অসৎ ও হীন উদ্দেশ্যে বরাবরের মতো এবারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্টাডি পিরিয়ডের বিষয়বস্তু ও সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিচ্ছেন। এর মাধ্যমে তারা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সাথে জনগণের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা সংবিধান, রাষ্ট্রের আইন ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে পেশাদারিত্ব ও শৃঙ্খলার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে। একটি অসাধু ও কুচক্রী মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেনাবাহিনী প্রধানের বক্তব্য বিকৃত করে যে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে, তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন। এমতাবস্থায়, এ ধরনের বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্যের প্রতি সতর্ক থাকার জন্য জনসাধারণকে বিনীতভাবে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।



