কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্মারকলিপি

ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনে আওয়ামী পুনর্বাসনের অভিযোগ

Printed Edition
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজির কাছে স্মারকলিপি দিচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিনিধিরা: নয়া দিগন্ত
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজির কাছে স্মারকলিপি দিচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিনিধিরা: নয়া দিগন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনে জুলাই চেতনাবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ এবং আওয়ামী পুনর্বাসন রোধের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে নবগঠিত সর্বদলীয় কর্মচারী কল্যাণ ঐক্যপরিষদ।

গতকাল সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের কাছে এ স্মারকলিপি জমা দেন। জানা যায়, বিএনপি ও জামায়াতপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে সম্প্রতি এ সর্বদলীয় সংগঠনটি গঠন করেছেন। ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনে সম্প্রতি আওয়ামী পুনরুত্থানের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে কর্মচারীরা এ ঐক্য গড়ে তোলেন।

স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়েছে, দেশে সংঘটিত বিপ্লব ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরও ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ে পরাজিত আওয়ামী ঘরানার প্রভাব অটুট রয়েছে; বরং প্রতিষ্ঠানটি আবারো ‘আওয়ামী তোষণ ও পুনর্বাসনের ঘাঁটিতে’ পরিণত হচ্ছে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতিত কর্মকর্তাদের কেউ কেউ বরিশালসহ দূরবর্তী জেলায় বদলির শিকার হচ্ছেন, আবার যাদের দীর্ঘ ১৫ বছর পর ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছিল, তাদের আবার ঢাকার বাইরে পাঠানো হচ্ছে। বিপরীতে আওয়ামী ঘরানার বিতর্কিত কর্মকর্তাদের ঢাকায় গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হচ্ছে। তারা আরো অভিযোগ করেন, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো: আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও বিতর্কিত এক কর্মকর্তাকে ঢাকায় ফেরানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যা ‘ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

স্মারকলিপিতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দোকান বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির কথাও বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, টেন্ডার কমিটির অনুমোদন ছাড়াই দুই শতাধিক দোকান অতি কম মূল্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা পরে বিক্রি করে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে। অভিযোগ করা হয়, দুর্নীতির তদন্তে গঠিত কমিটিকে মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা সৌদি আরব থেকে ফোন করে তদন্ত স্থগিতের নির্দেশ দেন এবং পরে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিবকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়।

স্মারকলিপিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ দেশে সংঘটিত বিপ্লব সম্পর্কে আদৌ অবগত কি না, তা এখন জাতির প্রশ্ন।

সংগঠনটি ছয় দফা দাবি পেশ করেছে। এগুলো হলো- ১. আওয়ামী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুনর্বাসন বন্ধ, ২. উপসচিব পদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিজস্ব কর্মকর্তা নিয়োগ, ৩. বায়তুল মোকাররম দুর্নীতির পূর্ণ তদন্ত, ৪. নির্যাতিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুনর্বহাল, ৫. ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের অপসারণ এবং ৬. ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে অধিদফতরে রূপান্তর।

স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন সংগঠনের সভাপতি সুলতান উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ফকির, আকবর হোসেন, মো: মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।

সূত্র জানায়, এর আগে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিএনপি ও জামায়াতপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে তাদের পুরনো সিনিয়র নেতাদের উপদেষ্টা করে নতুন এ ‘সর্বদলীয় কর্মচারী কল্যাণ ঐক্যপরিষদ’ গঠন করেন।