যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের একক কৃতিত্বের দাবি নিয়ে বিতর্ক

Printed Edition

আলজাজিরা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি দাবি করেছেন, তার আগে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোনো যুদ্ধের সমাধান করেননি। গত ১৭ অক্টোবর, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে হোয়াইট হাউজে এক বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার জানা মতে, আমরা কখনো এমন কোনো প্রেসিডেন্ট পাইনি যিনি একটি যুদ্ধও সমাধান করেছেন। অনেকেই যুদ্ধ শুরু করেন, কিন্তু কেউই তা শেষ করেন না।’

ট্রাম্পের এই বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। কেননা ইতিহাস বলছে অন্তত অরো দু’জন মার্কিন প্রেসিডেন্ট- থিওডোর রুজভেল্ট ও জিমি কার্টার নিজেদের সরাসরি মধ্যস্থতায় যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন। এ ছাড়া আরো কয়েকজন প্রেসিডেন্টের প্রশাসন কূটনৈতিকভাবে যুদ্ধ বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

১৯০৫ সালে রুশো-জাপান যুদ্ধের অবসানে প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট মধ্যস্থতা করেন এবং এর জন্য তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বেগিনকে ক্যাম্প ডেভিডে নিয়ে এসে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি সম্পাদন করেন।

১৯৯৫ সালে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের প্রশাসনের অধীনে ডেটন শান্তিচুক্তির মাধ্যমে বসনিয়া যুদ্ধের অবসান ঘটে। একইভাবে ১৯৯৮ সালে ‘গুড ফ্রাইডে অ্যাগ্রিমেন্ট’এর মাধ্যমে উত্তর আয়ারল্যান্ডে তিন দশকের সহিংসতা শেষ হয়। ২০০৫ সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সময় সুদানের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটে ‘কমপ্রিহেনসিভ পিস অ্যাগ্রিমেন্ট’ এর মাধ্যমে।

ট্রাম্প নিজেও দাবি করেছেন, তিনি ছয় থেকে আটটি যুদ্ধ শেষ করেছেন। তার প্রশাসন ইসরাইল-ইরান, ভারত-পাকিস্তান, আর্মেনিয়া-আজারবাইজানসহ কয়েকটি অঞ্চলে সাময়িক যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করেছে। তবে এসব চুক্তির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে সংশয় রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই সংঘর্ষ আবার শুরু হয়েছে বা শান্তি প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়েছে।