নিকলীতে টাকায় মিলে অবৈধ বৈদ্যুতিক হুকিং

Printed Edition

আলি জামশেদ নিকলী (কিশোরগঞ্জ)

কিশোরগঞ্জের নিকলীতে দিন দিন বাড়ছে অবৈধ বিদ্যুৎসংযোগ বা হুকিংয়ের ব্যবহার। টাকায় মিলে অবৈধ হুকিং এমন অভিযোগ এখন সর্বত্র। সচেতন মহলের অভিযোগ, এসব অনিয়মে পল্লিবিদ্যুৎ অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারীও অর্থনৈতিকভাবে জড়িত থাকায় এ অপকর্ম দমন করা যাচ্ছে না। এতে যেমন সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ গ্রাহকরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিকলীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে বিয়ে, সুন্নাতে খতনা, সামাজিক অনুষ্ঠান কিংবা রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে হুকিংয়ের ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহযোগিতায় চাহিদা অনুযায়ী টাকায় মিলে এসব অবৈধ সংযোগ। তদন্তে জানা গেছে, অটোরিকশা চার্জিংয়েও ব্যাপকভাবে হুকিং ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব বা অভিযোগের কারণে কেউ বিষয়টি প্রকাশ করলে তখনই প্রশাসনের নজরে আসে। নিকলীতে বর্তমানে বৈধ বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজারের কাছাকাছি। কিন্তু চাহিদা রয়েছে ১৫ এমভিএ পর্যন্ত, যেখানে সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ১০ এমভিএ। এতে এক দিকে বিদ্যুৎ ঘাটতি, অন্য দিকে অবৈধ ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট লোডশেডিং এখন নিত্যদিনের ঘটনা। বিশেষ করে উপজেলার গ্রামীণ এলাকায় ঘনঘন লোডশেডিংয়ে মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। উপজেলা সদরের তুলনায় আশপাশের ইউনিয়নগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্কট আরো প্রকট। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, নিকলীর বিদ্যুৎ সেবা যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। প্রয়োজনের সময় বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। জরুরি মুহূর্তেও কাক্সিক্ষত সেবা না পেয়ে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা বলেন, বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ জানালে শুনতে হয় নানা অজুহাত। অথচ টাকা দিলেই অবৈধভাবে হুকিং করা যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অফিসের কিছু কর্মচারী নামমাত্র জরিমানার বিনিময়ে এসব অনিয়ম থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন।

জানা যায়, নিকলীর জারইতলা ইউনিয়নের আঠার বাড়িয়া পুকুরপাড় এলাকায় গত ১৪ অক্টোবর মজিবুর রহমানের বাড়িতে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে অবৈধ হুকিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরিমানা করা হয়।

নিকলীর সচেতন নাগরিক সমাজের দাবি, অবিলম্বে অবৈধ হুকিং বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ বিষয়ে জেলা পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আতিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, অবৈধ সংযোগ বা দুর্নীতির সাথে কেউ জড়িত থাকলে প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউই ছাড় পাবেন না।