বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষাখাতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে : তারেক

Printed Edition

কিশোরগঞ্জ ও পাকুন্দিয়া প্রতিনিধি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষাখাতকে সবচেয়ে গুরুত্বের সাথে দেখা হবে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদানের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। শিক্ষকদের পেশার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হবে। স্কুলগুলোতে বাংলা-ইংরেজির পাশাপাশি অন্যান্য ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা চালু করা হবে।

গতকাল শনিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খন্দকার শামছুল আলম ফাউন্ডেশন আয়োজিত বিএনপির রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখার ৩১ দফার ওপর মেধাবৃত্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, আমাদের সব শিক্ষার্থীকে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষাকে আরো বেশি করে গুরুত্ব দিতে হবে। এজন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অষ্টম শ্রেণী থেকে কারিগরি শিক্ষা, বাংলা-ইংরেজির পাশাপাশি বিদেশী বিভিন্ন ভাষা, খেলাধুলা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা দক্ষতা অর্জন করে বিদেশে গিয়েও যেকোনো পেশার সাথে যুক্ত হতে পারে। আগামীতে জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় এলে এসব বাস্তবায়ন করবে।

গত ১৬ আগস্ট সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার, অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে ৩১ দফার ওপর ‘খন্দকার শামছুল আলম ফাউন্ডেশন’ মেধা বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করে। এতে উপজেলার দশটি কেন্দ্রে ৮৪টি বিদ্যালয়ের ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।

তারেক রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি দেশে এলে সবার সাথে সামনা সামনি বসে আবার কথা বলতে পারব কিভাবে আমরা দেশকে পুনর্গঠন করতে পারব, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব এবং তোমাদের ভবিষ্যৎকে মজবুত করতে পারব সে বিষয়ে আলোচনা করব।

অনুষ্ঠানে কয়েকজন শিক্ষার্থী তারেক রহমানকে সরাসরি বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি এসব প্রশ্নের উত্তর দেন।

পাকুন্দিয়ার আসিয়া বারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিদরাতুল মুনতাহা প্রশ্ন করেন, গ্রামাঞ্চলের বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে। এ বিষয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এলে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে এবং প্রতিশ্রুতিগুলো কথার কথা থাকবে কি না। উত্তরে তারেক রহমান বলেন, অতীতে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন বেগম খালেদা জিয়া ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেন। পরবর্তীতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা চালু করেন। বিষয়টা তোমাদের মা-বাবারা জানেন। আমরা তোমাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করব, না হয় তোমরা বড় হয়ে আমাদের ভোট দিও না।

এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাবরিনা ইলহাম, হোসেন্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম নকিব, ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইফরাত হাসান, দি মর্ণিং সান স্কুলের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার নৌরিন ও ফারজানা ইফাত সাথী প্রশ্ন করেন।

কেন্দ্রীয় বিএনপির ময়মনসিংহ অঞ্চলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি মো: শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের শিক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মেহেদী আমিন, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান, মাহমুদা হাবিব, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল আলম রাকিব প্রমুখ।

খন্দকার শামছুল আলম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আল আশরাফ মামুন ও সাধারণ সম্পাদক রতœা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে এ আরো বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও জেলা জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট মো: জালাল উদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ভিপি কামাল উদ্দিন, পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফসার উদ্দিন মানিক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুল হান্নান।

অনুষ্ঠান শেষে উপজেলার ৮৪টি মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও মাদরাসার ২০ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চল্লিশজন শিক্ষার্থীকে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পুরস্কার দেয়া হয়।