এম মাঈন উদ্দিন মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
মাচার মধ্যে লতায় ঝুলছে রঙিন নানা জাতের তরমুজ। সারি সারি সবুজ গাছে ঝুলে থাকা তরমুজের ফলন দেখে আনন্দে মুখ ভরে উঠেছে চাষি আব্দুল কুদ্দুসের। কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের ফসল এখন বাজারে যাচ্ছে। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এ পরিশ্রমী কৃষক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের মসজিদিয়া গ্রামে ৫০ শতক জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করেছেন জামালপুরের আব্দুল কুদ্দুস। দুই দশক আগে তিনি এ অঞ্চলে বসতি গড়ে কৃষিকাজে মনোনিবেশ করেন। চলতি মৌসুমে তিনি মাত্র ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে অর্গানিক ও মালচিং পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজের চাষ শুরু করেন।
বুধবার দুপুরে কুদ্দুসের তরমুজ খেত পরিদর্শনে দেখা যায়, মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা সূর্যডিম, রসগোল্লা, বিগবাইট, লিয়োনা, জাফরান, সুইটবাইট ও কিং সুপার জাতের রঙিন তরমুজে ভরে গেছে খেত। কয়েকজন শ্রমিকসহ কুদ্দুস তখন ব্যস্ত ছিলেন তরমুজ সংগ্রহে।
কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহায়তায় ৬৫ দিন আগে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ রোপণ করি। আলহামদুলিল্লাহ, ফলন বেশ ভালো হয়েছে। বাজারজাত শুরু করেছি। আমার জমিতে দুই কেজি ৫০০ গ্রাম থেকে চার কেজি ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজনের তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় চার টন উৎপাদনের আশা করছি।
তিনি আরো জানান, চাষে মোট ব্যয় হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। কৃষি অফিস থেকে নগদ সহায়তা, সার ও উপকরণ পেয়েছেন। এক পাইকারের কাছে খেত বিক্রি করেছি এক লাখ ৫০ হাজার টাকায়। খুচরা বিক্রি করলে দুই লাখ টাকা পাওয়া যেত। পাইকার হেলাল উদ্দিন বলেন, এক লাখ ৫০ হাজার টাকায় খেত কিনেছি। আশা করছি মোট বিক্রি হবে প্রায় দুই লাখ ২০ হাজার টাকার।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (খৈয়াছড়া-মসজিদিয়া ব্লক) মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় এ ব্লকে পাঁচটি গ্রীষ্মকালীন তরমুজ প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে সার, বীজ, মালচিং পেপার ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। তিনি বলেন, কৃষক আব্দুল কুদ্দুস সবচেয়ে সফল হয়েছেন। তার খেতের তরমুজ খুব অল্প সময়েই পরিপক্ব হয়েছে। অন্য চাষিদের জমির ফলন এখনো সংগ্রহের উপযোগী হয়নি।
মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, এ উপজেলায় আটজন কৃষক গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। এর মধ্যে আব্দুল কুদ্দুস প্রথম ফলন বাজারজাত করেছেন। অন্য খেতগুলো ১০-১৫ দিনের মধ্যে বাজারে আসবে। তিনি আরো বলেন, আমরা চাষিদের সার্বিক সহযোগিতা করছি। লাভজনক হওয়ায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে। আগামীতে আরো বেশি কৃষক এ চাষে আগ্রহী হবেন বলে আশাবাদী।



