রয়টার্স
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতাবিষয়ক বিশেষ দূত কিরিল দিমিত্রিয়েভ বলেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে তার দেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও কিয়েভ একটি কূটনৈতিক সমাধানের খুব কাছাকাছিই আছে বলে তার ধারণা। মার্কিন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করতে যুক্তরাষ্ট্রে নামার পর শুক্রবার সিএনএনের সাথে কথোপকথনে তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে বৈঠকটি পুরোপুরি বাতিল হয়নি, দুই নেতা হয়তো পরবর্তী কোনো এক তারিখ ধরে বসবেন।
অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রস্তাব রাশিয়া প্রত্যাখ্যান করার পর আলোচনায় আদৌ কোনো ফল হবে কি না এমন আশঙ্কা থেকে মঙ্গলবার ট্রাম্প-পুতিনের আসন্ন বৈঠকটি ‘স্থগিত’ করা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট পরবর্তীতে জানান, যুদ্ধ বন্ধের কূটনৈতিক উদ্যোগে পর্যাপ্ত অগ্রগতি না হওয়ায় এবং সময়টা উপযুক্ত বলে মনে না হওয়া তিনি হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে পুতিনের সাথে পরিকল্পিত বৈঠকটি বাতিল করেছেন।
যদিও শুক্রবার দিমিত্রিয়েভ বলেছেন, প্রকৃতপক্ষে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন একটি কূটনৈতিক সমাধানের খুব কাছাকাছি বলেই আমি বিশ্বাস করি। বর্তমান যুদ্ধরেখা ধরে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে নতুন এক প্রস্তাব নিয়ে ইউরোপের দেশগুলো ইউক্রেনের সাথে কাজ করছে বলে কয়েক দিন আগেই ইউরোপীয় কূটনীতিকরা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছিলেন।
বিষয়টি যে যুদ্ধরেখা সংক্রান্ত, তা প্রেসিডেন্ট (ভলোদিমির) জেলেনস্কির স্বীকার করে নেয়াই তো বড় পদক্ষেপ। আপনারা জানেন, তার আগের অবস্থান ছিল রাশিয়াকে পুরোপুরি (ইউক্রেন) ছাড়তে হবে। তাই আমার মনে হয়, আমরা একটি কূটনৈতিক সমাধানের খুব কাছাকাছি যা নিয়ে অগ্রসর হওয়া যায়, বলেছেন পুতিনের এ বিশেষ দূত।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেইনে তার বিশেষ সামরিক অভিযানে নামে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মস্কো ধীরে হলেও একের পর এক ইউক্রেনের এলাকা দখল করে নিচ্ছে। তার মধ্যেই ট্রাম্প এ মাসের মাঝামাঝি জানান, যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টায় তিনি শিগগিরই পুতিনের সাথে হাঙ্গেরিতে বসতে যাচ্ছেন। কিন্তু ছাড় দেয়ার ব্যাপারে পুতিন এখনো অনমনীয়। রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে বলছে, যেকোনো যুদ্ধবিরতির আগে ইউক্রেনকেই আরো ভূমি ছাড়তে হবে।
দিমিত্রিয়েভের সফর আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। কিন্তু এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার দুই সর্ববৃহৎ তেল কোম্পানির ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বসেছে। যুদ্ধ বন্ধে পুতিনকে চাপে রাখতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে দাবি ট্রাম্প প্রশাসনের। যদিও নিষেধাজ্ঞা রাশিয়াকে চাপে ফেলবে না বলেই মনে করেন ক্রেমলিন দূত দিমিত্রিয়েভ। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ‘ব্যাকফায়ার’ করবে বলেই তার অনুমান।
তিনি বলেছেন, এর ফলে আমেরিকার গ্যাস স্টেশনগুলোতে জ্বালানির দামই কেবল বাড়বে। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সংলাপ চালু থাকা উচিত বলেও মতো এ পুতিন দূতের। এটা কেবল তখনই সম্ভব যখন রাশিয়ার স্বার্থকে বিবেচনায় নেয়া হবে এবং মর্যাদার সাথে দেখা হবে, রয়টার্সকে আগে বলেছিলেন দিমিত্রিয়েভ। মার্কিন গণমাধ্যম এক্সিওস জানিয়েছে, দিমিত্রিয়েভ গতকাল শনিবার মিয়ামিতে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সাথে বসার কথা।
তিনি আরো কয়েক মার্কিন কর্মকর্তার সাথে বৈঠক করবেন বলে তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস। তবে এ মার্কিন কর্মকর্তা কারা, তাদের নাম বলেননি দিমিত্রিয়েভ।



