খুলনায় বিএনপির ২ গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৬

Printed Edition

খুলনা ব্যুরো

খুলনার রূপসা উপজেলা সদরে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দলের কেন্দ্রীয় তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক পারভেজ মল্লিকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ছয়জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজনকে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হলেও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনা তদন্তে জেলা বিএনপি দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে ।

গুরুতর আহতরা হলেন পারভেজ মল্লিক গ্রুপের শাহজালাল শেখ শান্ত, শাহজাদা আলমগীর, আকরাম হোসেন, মেহেদী হাসান বুলু ও ইমরান হোসেন এবং আজিজুল বারী হেলাল গ্রুপের জাহিদ শেখ।

সাবেক ছাত্রদল নেতা ও দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী শাহজালাল শেখ শান্ত জানান, যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি পারভেজ মল্লিকের পক্ষ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার রূপসা সদরে ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ, স্থানীয় সব মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিনদের মধ্যে পাঞ্জাবি বিতরণ, এসএসসি উত্তীর্ণ কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়ার কর্মসূচি ছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাজদিয়া কলেজ রোডে কর্মসূচি স্থলে হাজির হলে তরিকুল ইসলাম রিপন, আসাবুর, আজিজুল মেম্বার, বনি আমিন সোহাগ, জাকিরের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন স্লোগান দিতে দিতে আমাদের ঘিরে ফেলে এবং লাঠিসোটা, লোহার রড, রামদাসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। তাদের এলোপাতাড়ি আঘাতে আমরা বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হই। এরপর সাড়ে ১১টার দিকে পারভেজ মল্লিক ভাই সেখানে পৌঁছালে দ্বিতীয় দফা হামলা চালায় শতাধিক সন্ত্রাসী। হামলাকারীরা আজিজুল বারী হেলালের কর্মী বলে অভিযোগ করেন তিনি।

টিএসবি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি খান আনোয়ার হোসেন বলেন, পারভেজ মল্লিক মূলধারার নেতা কর্মীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ দোসরদের নিয়ে বিএনপির ভিতরে বিভাজনের সৃষ্টি করছেন। যার ফলে দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতাকর্মীরা মিলে তাদেরকে প্রতিহত করেছে।

অপরদিকে পারভেজ মল্লিক বলেন, দলীয় কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে গিয়ে আমার কর্মীরা হামলার শিকার হয়েছে। এর আগেও তেরখাদা ও দিঘলিয়ায় আমার কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। আমার কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। বারবার এ ধরনের ঘটনায় সাধারণ মানুষের সামনে দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হচ্ছে। বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল মালয়েশিয়া অবস্থান করছেন। ফলে তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।

খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু জানান, খবর শুনেই তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নেন এবং স্থানীয় দায়িত্বশীলদের পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। কারো অতি উৎসাহে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে কি না তা তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেয়া হবে। এ ব্যাপারে রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান বলেন, সকালে অতর্কিত হামলার খবর জানতে পেরেই আমরা টহল মোতায়েন করে সবাইকে ওই জায়গা থেকে সরিয়ে দিয়েছি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রূপসা থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত কয়েক জনকে হাসপাতালে আনা হয়। তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আহত চারজন ভর্তি রয়েছে। তবে সবাই শঙ্কামুক্ত।