উলিপুরে বন্যার পলিতে আমন ধানে চিটা

Printed Edition
উলিপুরে মাঠে কাটা ধানের আঁটি বাঁধছেন কৃষকরা : নয়া দিগন্ত
উলিপুরে মাঠে কাটা ধানের আঁটি বাঁধছেন কৃষকরা : নয়া দিগন্ত

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা

কুড়িগ্রামের উলিপুরে সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের নিচু ফসলি জমিগুলো দীর্ঘসময় পানির নিচে তলিয়েছিল। পানি নেমে যাওয়ার পর জমিতে জমে থাকা পলি ও জলাবদ্ধতার কারণে আমন ধান পচে গিয়ে চিটা হয়ে পড়েছে। এতে শতাধিক কৃষক মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যেখানে প্রতি বিঘায় ১২ থেকে ১৫ মণ ধান হওয়ার কথা ছিল, সেখানে এবার মিলছে মাত্র ৫ থেকে ৬ মণ। এতে উৎপাদন খরচও উঠছে না। সরেজমিনে থেতরাই, গুনাইগাছ, দলদলিয়া ও বজরা ইউনিয়নের গোরাই পিয়ার চর, জুয়ান সতরার চরসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা পলির নিচে থাকা আমন ধান কেটে মাড়াই করছেন। বেশির ভাগ ক্ষেতেই ধান পচে চিটা হয়ে গেছে।

গোরাই পিয়ার চরের কৃষক বিশা মিয়া বলেন, ‘৫০ শতক জমিতে প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ করে আমন লাগিয়েছিলাম। বন্যার পলিতে ধান পচে এখন মাত্র ৭ মণ ধান পেয়েছি। ধার দেনা পরিশোধ আর সংসার চালানো নিয়েই চিন্তায় আছি।’ কৃষক ছামাদ মিয়া বলেন, ‘পলি যুক্ত ধান মাড়াই করতে গেলে ধুলা উড়ে, তাতে শ্রমিকরাও কাজ করতে চায় না। এতে অনেকে এখনো জমিতে ধান কাটতে পারছেন না।’ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বন্যায় উলিপুরে মোট ৫০ হেক্টর ফসলি জমি, ১৫ হেক্টর মাসকলাই, ৫ হেক্টর বাদাম ও ২ হেক্টর শাকসবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বন্যায় চরাঞ্চলের নিচু এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও উঁচু জমিতে ফলন ভালো হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে আছি। পলি পড়ে থাকা জমিতে ভবিষ্যতে দ্বিগুণ ফলনের সম্ভাবনাও রয়েছে।’