নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, কৃষকদের পরিশ্রমে বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে, তাদের ত্যাগে পুষ্ট হয়েছে, আর তাদের দৃঢ়তায় হয়েছে শক্তিশালী। বগুড়ার উর্বর মাঠ থেকে শুরু করে বরিশালের ভাসমান বাগান পর্যন্ত-প্রতিটি শস্যদানার ভেতর লুকিয়ে আছে তাদের সহনশীলতার গল্প এবং আমাদের সম্মিলিত ভবিষ্যৎ।
বিশ্ব খাদ্য দিবসে জাতিকে আহার জোগানো কৃষকদের প্রতি অঙ্গীকার নতুন করে পুনর্ব্যক্ত করে তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে দেয়া এক বিবৃতিতে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে- সত্যিকারের খাদ্যনিরাপত্তা সম্ভব সরকারের, কৃষকের, উদ্যোক্তার এবং জনগণের যৌথ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে, যেখানে সবাই মিলে গড়ে তুলবে একটি টেকসই খাদ্যব্যবস্থা।
তিনি বলেন, জাতীয় নেতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জানতেন, খাদ্যনিরাপত্তা ছাড়া স্বাধীনতার অর্থ অসম্পূর্ণ। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নির্ভরতা থেকে মর্যাদার পথে যাত্রা শুরু করে- সেচ সম্প্রসারণ, খাল পুনরুদ্ধার এবং একাধিক ফসল চাষের মাধ্যমে একসময় দুর্ভিপীড়িত জাতিকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার পথে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেই ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মে এগিয়ে নিয়েছেন। কৃষককে মতায়িত করা হয়েছে সার ভর্তুকি, গ্রামীণ বিদ্যুতায়ন এবং ‘কাজের বিনিময়ে খাদ্য’ কর্মসূচির মাধ্যমে, যা গ্রামাঞ্চলকে পুনরুজ্জীবিত করেছে এবং নিশ্চিত করেছে যেন কোনো পরিবার অনাহারে না থাকে। এই ভিত্তির ওপরই আজ আমরা দাঁড়িয়ে আছি।
তিনি আরো বলেন, আজ বাংলাদেশ যখন খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি, পানি সঙ্কট এবং জলবায়ু হুমকির মুখোমুখি, তখন আমাদের সেই ভিত্তির ওপর আরো শক্তভাবে দাঁড়াতে হবে- শুধু নিজের মানুষের জন্য নয়; বরং তাদের জন্যও যারা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশ বর্তমানে ১১.৫ লাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিচ্ছে, যা বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থীশিবির। সেখানে আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় এখন প্রতিটি পরিবার মাসে মাত্র ছয় ডলারের খাদ্য সহায়তায় টিকে আছে।
তারেক রহমানের মতে, খাদ্য সহায়তা পুনরুদ্ধার ও জীবিকায়নের সুযোগ জোরদার করার জন্য সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা, দাতা দেশ ও বেসরকারি অংশীদারদের সমন্বিত ও জরুরি পদপে এখন সময়ের দাবি। তিনি বলেন, বিশ্বকে যৌথভাবে এই সঙ্কট মোকাবেলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করতে হবে।
খাদ্য ও কৃষি নিরাপত্তায় বিএনপির রূপরেখা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রতিটি কৃষককে নিরাপদ ডিজিটাল পরিচয়পত্র দেয়া হবে, যার মাধ্যমে তারা সরাসরি সার, ভর্তুকি, ন্যায্যমূল্য, ঋণ, ফসল বীমা ও সরকারি ক্রয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন- মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়াই। এর ফলে শোষণ বন্ধ হবে এবং কৃষক হবেন জাতীয় অর্থনীতির প্রকৃত অংশীদার।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত খাতে ১৩ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে- শীতল সংরণ, প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও রফতানিমুখী খাদ্যশিল্পের মাধ্যমে কৃষকদের স্থানীয় ও বৈদেশিক বাজারে যুক্ত করা হবে। আধুনিক গুদাম ও কোল্ড স্টোরেজ স্থাপনের মাধ্যমে খাদ্য অপচয় হ্রাস এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধি করা হবে। তরুণদের কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে যান্ত্রিকীকরণ, ড্রোন প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ ফান্ড প্রদান করা হবে।