জিয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

দেশ ও জনগণের সেবায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে : তারেক রহমান

Printed Edition
দেশ ও জনগণের সেবায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে : তারেক রহমান
দেশ ও জনগণের সেবায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে : তারেক রহমান

গাবতলী (বগুড়া) সংবাদদাতা

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট তারেক রহমান বলেছেন। দেশ ও দেশের জনগণের সেবায় আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীতে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আমাদের সবাইকে নজর রাখতে হবে। তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন সব সময় মানুষ ও দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করে আসছে। ফাউন্ডেশনটি আগামী দিনেও আরো সমাজ কল্যাণে কাজ করবে।

গতকাল বগুড়ার গাবতলী নশিপুরের বাগবাড়ীতে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে স্পেশাল ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প উদ্বোধন শেষে (ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে) প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।

শহীদ জিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন (ভার্চুয়ালি) জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা: জুবাইদা রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা: ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে

সভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সিনিয়র সহসভাপতি এবং সাবেক এমপি মো: হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা: মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ড্যাব বগুড়া জেলা শাখার সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা: শাহ মো: শাহজাহান আলী, গাবতলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোরশেদ মিন্টন।

অধ্যাপক লুৎফর রহমানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ডা: মোস্তফা আজিজ, ডা: এমআর হাসান, ডা: মো: ইউনুস আলী, ডা: এ কে এম মোনারুল কাদির বিটুল।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি মোশাররফ হোসেন,

সাবেক এমপি কাজী রফিক প্রমুখ। দিনব্যাপী এ ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পে প্রায় সাত হাজার মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ করা হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচনকে অর্থপূর্ণ করতে হবে : মির্জা ফখরুল

বিশেষ সংবাদদাতা জানান, জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মতো নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো দূরত্ব ঘুচিয়ে জাতীয় নির্বাচনকে অর্থপূর্ণ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল দুপুরে শ্রমিক সংগঠনের এক সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, একটা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে যারা নির্বাচিত হবেন তারা আমাদের পার্লামেন্টকে সত্যিকার অর্থে প্রাণবন্ত করে গড়ে তুলবেন, অর্থবহ করবেন এবং সেই পার্লামেন্ট হবে আমাদের রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু। গণতন্ত্রকে যদি আমরা সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হই তাহলে সেখানে সব শ্রেণীর দাবি-দাওয়া পূরণ হবে, স্বীকৃত হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আর কতদিন রাস্তায় থাকবেন? ৫০ বছর তো আমরা রাস্তায় চলছি। এই জাতীয় সনদের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে যদি আমরা একটা কালচারে পরিণত করতে পারি সেই চেষ্টা আমাদের করতে হবে।

রাজধানীর গ্রীন রোডে পানি ভবনের মাল্টিপারপাস হলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের এই সাধারণ সভা ও সম্মেলন হয়। সম্মেলনে মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুকে সভাপতি ও হুমায়ুন কবিরকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ার হোসাইন।

‘জুলাই সনদ গণতন্ত্রের জন্য অনন্য’

মির্জা ফখরুল বলেন, এটা একটা ঐতিহাসিক পলিটিক্যাল ইভেন্ট। আমরা বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল ঐতিহাসিক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছি এবং এটা সত্যি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অনন্য ঘটনা। দীর্ঘ সাত আট মাস কাজ করে তারা এটা নিয়ে এসেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একটা আনফরচুনেট ইনসিডেন্ট ঘটেছে যে, একটা গ্রুপ তারা এখানে (সংসদ ভবনের অনুষ্ঠানের সামনে) এসে বসে যায়। তারপরে পুলিশ এবং ছাত্রদের মধ্যে একটা ভায়োলেন্সের ঘটনা ঘটেছে। এই সময়ে এই ধরনের ঘটনাগুলো গণতন্ত্রকে সাহায্য করবে না। এই সরকার এখন পর্যন্ত যতগুলো কাজ করছে তারা ভালো কাজ করার চেষ্টা করেছে। আমরা যে যতই বলি, এক বছরের মধ্যে সব জঞ্জাল শেষ করে ফেলা সম্ভব নয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের দাবি-দাওয়ার প্রতি নিজের এবং তার দলের সমর্থনের কথাও ব্যক্ত করেন তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নে র সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়কারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমদ, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কিছু দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করলেও আগামী নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না : সালাহউদ্দিন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আমার জানা মতে, এনসিপি এবং চারটি বাম রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যেতে পারেনি। বলব না, স্বাক্ষর করেনি। স্বাক্ষর করার সুযোগ উন্মুক্ত আছে। আশা করি, তারা ভবিষ্যতে সনদে স্বাক্ষর করবেন।

গতকাল জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী নির্বাচনের জন্য এটা বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না। আমরা মনে করি, সহনশীলতা সবার মধ্যে আসবে। হয়তো তাদের কিছু দাবি দাওয়া আছে। সেটা সরকারের সাথে আলাপ করবে। একপর্যায়ে তারাও জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আর গণতন্ত্রের মধ্যে সবাই একমত হবে এমন তো নয়। ভিন্ন মত থাকতেই পারে।

সমগ্র জাতিকে আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা ধৈর্য, সহনশীলতা ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চার মধ্য দিয়ে যেন এগিয়ে যাই। তাহলে সত্যিকার অর্থে একটি কার্যকর শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে পারব। আমাদের শহীদের আত্মত্যাগ এবং রক্তদান সফল হবে।

জুলাই সনদ স্বাক্ষরের ঐতিহাসিক দিন পুলিশের সাথে জুলাই যোদ্ধাদের সংঘর্ষ হয়েছে। যোদ্ধারা বলেছেন, জুলাই সনদের মধ্যে তাদেরকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি- এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, জুলাইযোদ্ধা নামে একটি সংগঠন আমাদের সাথেও কথা বলেছিল। ঐকমত্য কমিশনের সাথে কথা বলেছে। তাদের একটা যৌক্তিক দাবি ছিল। সেই যৌক্তিক দাবিটা পূরণের জন্য আমি নিজেও স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, কথা বলেছিলাম। এবং সেটা ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ সঠিকভাবে এড্রেস করেছেন, সেটা প্রেসে বলেছেন এবং সংশোধন করেছেন। এরপরেও তাদের অসন্তোষ থাকার কথা নয়। যে সমস্ত বিশৃঙ্খলা হয়েছে আমরা খোঁজ নিয়েছি। এটা তদন্তাধীন আছে। দেখা গেছে, এখানে জুলাইযোদ্ধাদের নামে কিছুসংখ্যক ছাত্র নামধারী, কিছুসংখ্যক উচ্ছৃঙ্খল লোক ঢুকেছে। সেটা ফ্যাসিস্ট সরকারের ফ্যাসিস্ট বাহিনী বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বাহিনী, যে এখনো সমস্ত জায়গায় এই বিভিন্ন ফাঁক-ফোকরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, সেটা গতকালকেও দৃশ্যমান হয়েছে। আমার মনে হয়, এখানে এটির সাথে কোনো সঠিক জুলাই যোদ্ধা বা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত কোনো সংগঠন অথবা কোনো ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে না।

জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক ড. মো: মোরশেদ হাসান খান, সদস্যসচিব কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, সদস্য আমিরুল ইসলাম কাগজীসহ সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।