আমরা মানুষের দুর্ভোগ ও গণহত্যার প্রতি উদাসীন হয়ে পড়েছি : রাষ্ট্রদূত তালহা

Printed Edition
প্যারিসে ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তালহা : নয়া দিগন্ত
প্যারিসে ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তালহা : নয়া দিগন্ত

প্যারিস প্রতিনিধি

‘আমরা মানুষের দুর্ভোগ, সঙ্ঘাত, অনাহার, যুদ্ধ, গণহত্যার প্রতি উদাসীন হয়ে পড়েছি’

ইউনেস্কো সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি হিসেবে নিজের প্রথম বক্তব্যে এমনটাই বলেন খন্দকার মোহাম্মদ তালহা। গত মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জাপানকে হারিয়ে ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। এই বৈশ্বিক সংস্থার সদস্য হওয়ার পর প্রথম কোন বাংলাদেশী হিসেবে সভাপতি নির্বাচিত হন খন্দকার তালহা।

গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফ্রান্সে বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, বর্তমান অস্থির ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত তালহা আরো উল্লেখ করেন, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে এখন সমাজকে আরো বিভক্ত করার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি এমন এক ঝুঁকি তৈরি করছে, যা পুরো মানবজাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তিনি এই বাস্তবতার একটি স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরেন এবং মানব মর্যাদা ও নৈতিকতার মূল্যবোধ বজায় রেখে বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের দায়িত্বশীল পদক্ষেপের আহ্বান জানান।

সম্মেলনের সভাপতি তালহা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ন্যানো প্রযুক্তি এবং স্নায়ুবিজ্ঞানের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে বৈশ্বিক সম্প্রদায়কে সতর্ক করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ৮০ বছর পরেও ইউনেস্কোর মূল দর্শন এখনো প্রাসঙ্গিক, তবে ২০২৫ সালের বিশ্ব নতুন ও জটিল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তিনি মনে করেন, শান্তির সংস্কৃতি প্রচারের মাধ্যমে ইউনেস্কো একটি পরিবর্তন আনয়নকারী শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে।

ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে আজুলে খন্দকার মোহাম্মদ তালহাকে শুভেচ্ছা জানান এবং এ মুহূর্তকে বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেন। মহাপরিচালক আরো স্মরণ করেন মাতৃভাষা সংরক্ষণ ও প্রচারে বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভূমিকা।

সাধারণ সম্মেলনের সাবেক সভাপতি রাষ্ট্রদূত সিমোনা তার ভাষণে বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি এটিকে ইউনেস্কো ও বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের জন্য রাষ্ট্রদূত তালহার পেশাগত অভিজ্ঞতা থেকে নতুনভাবে উপকৃত হওয়ার একটি সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করেন।

সন্ধ্যায়, তিনি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, যেখানে উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মিরজিওয়েভ, সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার ভুচিচ এবং স্লোভাকিয়ার প্রেসিডেন্ট পিটার পেল্লেগ্রিনি উপস্থিত ছিলেন।

এই সাধারণ সম্মেলনটি ভূরাজনৈতিক ও আঞ্চলিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ৪০ বছর পর এটি ইউনেস্কো সদর দফতরের বাইরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।