মাদারীপুর প্রতিনিধি
মাদারীপুরে একটি এতিমখানায় কোটি টাকা অর্থ আত্মসাৎ ঘটনায় সমাজসেবা কর্মকর্তা ও এতিমখানার সুপারকে আসামি করে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক সাইদুর রহমান অপু বাদি হয়ে মামলাটি করেন।
মামলায় আসামিরা হলেন- মাদারীপুরের সাবেক শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা শ্যামল পাণ্ডে ও এতিমখানার সুপার মোহাম্মদ আল-আমিন। সমাজসেবা কর্মকর্তা শ্যামল বর্তমানে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
এর আগে গত ১৫ জুলাই মাদারীপুর পৌর এলাকার দরগাহ শরিফসংলগ্ন হজরত শাহ মাদার (রহ.) দরগাহ শরিফ এতিমখানায় অভিযান চালায় দুদক। এ সময় দুদকের সদস্যরা এতিমখানার মোহতামিম মোহাম্মদ আল-আমিনসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নেন। অভিযানে এতিমদের জন্য প্রাপ্ত সরকারি বরাদ্দ, ছাত্রসংখ্যা এবং আর্থিক লেনদেনের তথ্য যাচাই-বাছাইয়ে ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ে।
দুদক সূত্র জানায়, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে সরকারি হিসাবে ১৪৫ জন এতিম শিশুর জন্য মাসে দুই হাজার টাকা হারে প্রায় দুই কোটি ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে এতিমখানায় মাত্র ৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এ ছাড়া এতিমখানার সুপার আল-আমিনের বিরুদ্ধে ৪৭ লাখ টাকার এফডি (স্থায়ী আমানত) জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে উত্তোলন করে নেন।
মামলায় দুদক উল্লেখ করেন, সমাজসেবা কর্মকর্তা ও এতিমখানার সুপার দু’জনে পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড, প্রকৃত এতিমনিবাসীর সংখ্যা গোপন করে চার বছরে অতিরিক্ত ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট ভুক্ত দুস্থ ও এতিমনিবাসী দেখিয়ে ৪৩ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ৪৭ লাখ টাকা ও এতিমদের কল্যাণে অনুদানকৃত ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৯১৭ টাকাসহ সর্বমোট এক কোটি এক লাখ উনিশ হাজার ৯১৭ টাকা আত্মসাৎ করেছে। দুদকের মাদারীপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান বলেন, বৃহস্পতিবার মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ হলে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



