রহমতদের লক্ষ্য এখন ভারতকে হারানো

Printed Edition
জাতীয় ফুটবল দলের অনুশীলনের আগে সৈয়দ শাহ কাজেম কিরমানী ও রহমত মিয়া : বাফুফে
জাতীয় ফুটবল দলের অনুশীলনের আগে সৈয়দ শাহ কাজেম কিরমানী ও রহমত মিয়া : বাফুফে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বর্তমান কমিটির অনেক বড় আশা ছিল সিনিয়র জাতীয় ফুটবল দলকে নিয়ে। জামাল ভূঁইয়ারা এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলবে এই ছিল প্রত্যাশা। অথচ চার ম্যাচের কোনোটিতে জিততে না পেরে ছিটকে পড়া। তা দুই ম্যাচ হাতে রেখে। সর্বশেষ হংকংয়ের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচে ড্র করে সব আশা শেষ। এখন বাকি আছে ভারত ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দুই ম্যাচ। একটি ১৮ নভেম্বর ঢাকায় সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। অপরটি মার্চে সিঙ্গাপুরের মাঠে। সব হারিয়ে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা এখন এই দুই ম্যাচ জিততে চায়। গতকাল জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি শুরুর দিন এই ঘোষণা ডিফেন্ডার রহমত মিয়া, মিডফিল্ডার শেখ মোরসালিন ও সহকারী কোচ হাসান আল মামুনের।

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ খেলে আসছে সেই ১৯৭৯ সাল থেকে। সে বছর বাংলাদেশ চূড়ান্ত পর্বে খেললেও পরে আর পারেনি। এবার সেই সুযোগ ছিল। বিশেষ করে ইংলিশ লিগে খেলা হামজা চৌধুরী, কানাডা লিগে খেলা শমিত শোম, ইতালিতে খেলা ফাহামিদুল আসার পর আরো জোরালো হয় প্রত্যাশা। অথচ দিন শেষে কোনো জয় ছাড়া দুই ড্রতে ভাণ্ডারে মাত্র ২ পয়েন্ট। সেই কষ্ট তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে রহমত মিয়াদের। তবে এখন শেষ হোম ম্যাচে জয়ের বিকল্প কোনো কিছুই ভাবছেন না তিনি। জানান, ‘যা যাওয়ার গেছে। সেটা নিয়ে আর ভেবে লাভ নেই। এখন আমাদের টার্গেট একটাই শেষ দুই ম্যাচে জিততে হবে।’ জানান, এর আগে আমাদের ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ হলেই আমাদের খেলোয়াড়রা এক্সাইটেড থাকে। আমরা ভারতকে হারাতে চাই।

সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিততে পারেনি ভুলের কারণে। তা মেনে নিয়েই রহমত জানান, ভুলতো হবেই। বিশ্বের বড় বড় দলও ভুল করে। ভুলের কারণেই তো হারে। এখন সে থেকে শিক্ষা নিয়ে পরের ধাপে এগোতে হবে।

আরো উল্লেখ করেন, ‘আমরা যদি পরের দুই ম্যাচে জিতেও যাই তবুও লক্ষ্য পূরণ হবে না। তবে আমরা চাচ্ছি এই দুই ম্যাচ জিততে। কিছুটা হলেও কষ্ট লাঘব করতে। আমাদের দল এখন ভালো করছে। ভবিষ্যতে আরো ভালো করবে।’ ১৩ নভেম্বর বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে। কিন্তু আফগানিস্তানের সাথে সেই ম্যাচ হচ্ছে মিয়ানমার বাংলাদেশে এসে খেলতে অনীহা দেখানোয়। নিরপেক্ষ ভেনু হিসেবে ঢাকায় আফগানিস্তান এশিয়ান কাপের ম্যাচ খেলতে চেয়েছিল মিয়ানমারের সাথে। মিয়ানমারের আপত্তিতে এখন আফগানদের খেলা হচ্ছে না বাংলাদেশে। তাই বিকল্প এখন নেপাল। এই প্রসঙ্গে রহমত জানান, প্রস্তুতি ম্যাচ প্রস্তুতি ম্যাচই। এই সব ম্যাচ শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেললে ভালো হয়। না তাহলে সমমানের। যেহেতু আফগানিস্তান আসছে না তাই নেপালও ভালো প্রতিপক্ষ। তারাও সমমানের।

জাতীয় দলের অন্যতম মিডফিল্ডার শেখ মোরসালিন। বসুন্ধরা কিংস ছেড়ে এখন ঢাকা আবাহনীর খেলোয়াড়। তার মতে, ‘আমরা এখন হারাতে চাই ভারতকে। দেশের মাঠে খেলা। যেকোনো মূল্যে আমাদের লক্ষ্য থাকবে একটাই ভারতের বিপক্ষে জয়।’ সে ক্ষেত্রে এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবলের শেষ ম্যাচে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে পাওয়া জয়ও তাদের জন্য বড় প্রেরণা। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ ৪-১ গোলে উড়িয়ে দেয় সিঙ্গাপুরকে। মোরসালিন জানান, ‘সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে সেই শেষ ম্যাচে আমরা আসলেই খুব ভালো খেলেছিলাম। অবশ্য আগের দুই ম্যাচে সে রকম ভালো খেললে খুবই ভালো হতো। সিঙ্গাপুরকে হারানো সেই সুখ স্মৃতি আমাদের জন্য বড় অনুপ্রেরণা। বাড়তি আত্মবিশ্বাসের জায়গা।’

ভারত ফিফা র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও দুই দলের লড়াইটা সব সময়ই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। তবে সেই ২০০৩ সালের ঢাকা সাফের পর আর ভারতের বিপক্ষে জয় নেই লাল-সবুজদের। সেই তথ্য দিয়ে সহকারী কোচ হাসান আল মামুন জানান, ‘আমরা ২০০৩ সালে এই ঢাকার মাঠেই হারিয়েছিলাম। এবারও তাদের বিপক্ষে জিততে চাই। দেশের মাঠে দেশবাসীকে জয় উপহার দিতে চাই।’

২০০৩ সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের এই ফুটবলারের মতে, এবার আমরা এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে যে রেজাল্ট করেছি তা কিন্তু হওয়ার কথা ছিল না। আমাদের আরো ভালো করা উচিত ছিল।

মাত্র ১৪ ফুটবলার নিয়ে অনুশীলন শুরু করেছে বাংলাদেশ দল। বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলাররা গতকাল শেষ ম্যাচ খেলেছে কুয়েতের মাঠে। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের সেই ম্যাচ শেষ করেই তাদের ফুটবলাররা। কোচ হাভিয়ার কাবরেরাও যোগ দেননি ক্যাম্পে যমজ কন্যাসন্তানের বাবা হয়েছেন। তাই তার আসতে দুই এক দিন দেরি হবে। ম্যানেজার আমের খান জানান, ২-৩ নভেম্বর আসতে পারেন কাবরেরা।