চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করার জন্য নতুন বর্জ্য ফেলার ল্যান্ডফিল্ড করার জন্য ভূমি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা: শাহাদাত হোসেন। গতকাল বৃহস্পতিবার টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে গঠিত কমিটির বিশেষ সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ল্যান্ডফিল্ড স্থাপন, নগর উন্নয়ন ও জনদুর্ভোগ কমানোর নানা পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
মেয়র বলেন, নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জে রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হলেও চসিক সর্বোচ্চ ২২০০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করতে পারছে। বাকি প্রায় ৮০০ টন বর্জ্য নানা উপায়ে খাল, নালা হয়ে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে, যা মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষণ করছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় চসিক নতুন একটি ল্যান্ডফিল্ড ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের বর্তমান দু’টি ডাম্পিং স্টেশন হালিশহর ও আরেফিন নগর ধারণ ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। যেকোনো সময় সেগুলোতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় চসিক এরইমধ্যে নতুন একটি ল্যান্ডফিল্ড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ জন্য ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানা জঙ্গল দক্ষিণ পাহাড়তলী মৌজায় প্রায় ৫০ একর জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এর মধ্যে ৯.৫০ একর জমি এরইমধ্যে ক্রয় করা হলেও মালিকদের অনীহার কারণে বাকি জমি ক্রয় সম্ভব হয়নি। ফলে বিকল্প হিসেবে একই মৌজার পাশের সমতল ও টিলা শ্রেণীর প্রায় ৪০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ডা: শাহাদাত হোসেন বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমরা দীর্ঘ দিন ধরে চিন্তিত। নতুন ল্যান্ডফিল্ড না হলে নগরীর পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে।
সভায় মেয়র আরো জানান, নতুন ল্যান্ডফিল্ড হলে ভবিষ্যতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি হবে। ইতোমধ্যে কোরিয়া, জাপান ও সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন কোম্পানি চসিকের সাথে প্রাথমিক আলোচনা করেছে। তবে শর্ত হিসেবে তারা ন্যূনতম ৪০ একর জমি চেয়েছে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- চসিকের সচিব মো: আশরাফুল আমিন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর উপবিভাগীয় কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মো: গোলাম মুরশেদ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, পরিবেশ অধিদফতরের সিনিয়র কেমিস্ট রুবাইয়াত তাহরীম সৌরভ, বন অধিদফতরের সহকারী সংরক্ষক মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর বিআইডব্লিউটিএ মো: জাহিদুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক মনছুর আলী চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডেল তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ কে এম মামুনুল বাশরী, এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মনিরুল ইসলামসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।


