নয়া দিগন্ত ডেস্ক
বাস ও কারের সংঘর্ষে সিলেটের ওসমানীনগরে নিহত হয়েছেন বাবা ও মেয়ে। এ ছাড়া অন্যান্য স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন আরো তিনজন।
ওসমানীনগর (সিলেট) সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ওসমানীনগরের দয়ামীরে বাস ও প্রাইভেট কারের সংঘর্ষে বাবা-মেয়ে নিহত ও একই পরিবারের চারজন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- ওসমানীনগরের উমরপুর ইউনিয়নের মজিদপুর গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে প্রাইভেট কার চালক হারুন মিয়া (২৮) ও তার মেয়ে আনিছা বেগম (১০)। আহতরা হলেন নিহত হারুন মিয়ার বোন রাহিমা খাতুন (৩০), পান্না বেগম (২৩) মুন্নি আক্তার (২৩) ও ভগ্নিপতি মুকিত মিয়া (৩৫)। শনিবার সকাল ৯টার দিকে মহাসড়কের দয়ামীর মাদরাসা সংলগ্ন স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সিলেট থেকে ছেড়ে আসা হবিগঞ্জগামী হবিগঞ্জ এক্সপ্রেস-এর একটি বাস (নং-ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৪৬৪৮) ও তাজপুর থেকে সিলেটগামী প্রাইভেট কার (নং- ঢাকা মেট্রো-গ-১১-৪৮৫৫) মহাসড়কের দয়ামীর মাদরাসার সামনে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে প্রাইভেট কার চালক হারুন মিয়া ঘটনাস্থলেই মারা যান। এর পর আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। অপর আহতরা একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সিলেট ব্যুরো জানায়, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে পর্যটকবাহী সিএনজি অটোরিকশায় শাহ আরেফিন টিলার পাথরবাহী ট্রাক্টরের চাপায় এক পর্যটক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো পাঁচজন। শনিবার সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কের ভোলাগঞ্জ পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম মো: জিয়াউল হক (৬৫)। তিনি জামালপুরের মোবারক চেয়ারম্যানের ছেলে। এ ঘটনায় আহত পাঁচজনের মধ্যে এক শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানায় পুলিশ। কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
আহতরা হলেন- সম্রাট (৩৭) তার স্ত্রী সুমাইয়া (২৮), মেয়ে সাওদা (১০), ছেলে সিনান (৮) ও সিএনজি চালক রমজান আলী। এদের মধ্যে সিনানের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিলেট থেকে সিএনজি অটোরিকশায় পর্যটক পরিবার সাদাপাথর যাচ্ছিলেন। ভোলাগঞ্জ পয়েন্টে পৌঁছামাত্র শাহ আরেফিন টিলার পাথরবাহী ট্রাক্টর দ্রুত গতিতে মহাসড়কে উঠার সময় অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এ সময় সিএনজি অটোরিকশার চালকসহ ছযজন আহত হোন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জিয়াউল হককে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
রংপুর ব্যুরো জানায়, রংপুরে চার্জার অটো ভ্যান রিকশা উল্টে মারা গেছেন রোমিচা বেগম নামের ৮০ বছরের এক বৃদ্ধ। শুক্রবার রাত ৮টায় শঠিবাড়ী টু ছড়ান-বালুয়া রোডের উদয়পুর ধাপ বাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃত রমিচা বেওয়া মিঠাপুকুর উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বান্দের পাড়া (বাবুর হাট) এলাকার মৃত আব্দুস ছোবহান আকন্দের স্ত্রী।
মিঠাপুকুর থানার ওসি নূরে আলম জানান, সন্ধ্যায় গাজীপুরে পোশাক শ্রমিক পুত্র ও তার নাতি-নাতনীদেরকে দেখতে স্থানীয় মোকতার হোসেনের চার্জার অটোভ্যান যোগে শঠিবাড়ি বাস কাউন্টারের উদ্দেশে রওনা দেন। পথিমধ্যে একই ইউনিয়নের উদয়পুর ধাপ বাজারে পৌঁছলে আটোভ্যানটির চেইন প্লেট খুলে উল্টে যায়। এতে ভ্যানে থাকা যাত্রীরা ছিটকে নিচে পড়ে যান। এতে গুরুতর আহত হলে রোমিচা বেগমকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই মারা যান তিনি।
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলায় মিনিট্রাকের সাথে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে তাসিব (১৭) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। তিনি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির সামসুল হকের ছেলে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার যৌথখামার এলাকায় খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় ফটিকছড়ির নুরুল ইসলামের ছেলে তারেক (১৮) নামে অপর এক মোটরসাইকেল আরোহী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়িগামী একটি মিনি ট্রাক যৌথখামার এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল আরোহী তাসিব নিহত হন। স্থানীয়রা আহত তারেককে উদ্ধার করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: তৌফিকুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে ও আহত একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। মিনিট্রাক ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হলেও ট্রাক চালক পলাতক রয়েছে।



