ডুমুরিয়া (খুলনা) সংবাদদাতা
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, পিআর বুঝিনা এই কথা কোনো রাজনৈতিক নেতা বা দায়িত্বশীলের কথা হতে পারে না। এই পদ্ধতি জনগণ চায় কিনা, সেটা জুলাই চার্টারে অন্তভুক্ত করে গণভোটে দিয়ে দেয়া হোক। জনগণ যদি চায় তবে সবাইকে মানতে হবে। আর জনগণ যদি না বলে জামায়াতে ইসলামী সেটা মেনে নেবে। তিনি বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে এবং জুলাই সনদের মধ্যে পিআর পদ্ধতিকে অন্তর্ভুক্ত করে সেটাকে গণভোটে দিয়ে জনমত যাচাই করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে এই গণভোট দিয়ে জনগণ যদি পিআরের পক্ষে মতামত দেয়, তাহলে সকল রাজনৈতিক দলকে পিআর পদ্ধতি মেনে নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে মনোনয়ন বাণিজ্য, চাঁদাবাজ, দখলবাজ, দুর্নীতিবাজদের সুযোগ থাকবে না। সে জন্য পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চান না একটি রাজনৈতিক দল। গতকাল সোমবার সকালে খুলনা-৫ আসনের (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) ডুমুরিয়া বাজারে নির্বাচনী গণসংযোগকালে তিনি এ কথা বলেন।
এ তার সাথে ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা, ডুমুরিয়া উপজেলা আমির মাওলানা মোক্তার হোসেন, নায়েবে আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান ও গাজী সাইফুল্লাহ, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি আব্দুর রশিদ, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা ফরহাদ আল মাহমুদ, ডুমুরিয়া উপজেলা ছাত্রশিবির সভাপতি আবু তাহের, পশ্চিম শাখা সভাপতি শামিদুল হাসান লিমন, উপজেলা হিন্দু কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্য দেবপ্রসাদ মণ্ডল, জামায়াত নেতা আব্দুল গনি খান, শেখ জালাল উদ্দীন, শেখ মোসলেম উদ্দীন, হাফেজ মঈন উদদীন, আবদুল হান্নান, আবুল হোসেন, মাওলানা আব্দুস সোবহান, ফরিদ হোসেন, আবু সুফিয়ান, আলমগীর কবির, নাজমুল হোসেন প্রমুখ। সকাল ১০ থেকে শুরু করে জোহর নামাজের আগ পর্যন্ত তিনি ডুমুরিয়া সদরের ব্যবসায়ী ও পথচারীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে সালাম, শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় করেন।
জাতির প্রত্যাশার আলোকে বর্তমান সরকার দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলসভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সেক্রেটারি বলেন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য গঠিত হয় বিভিন্ন সংস্কার কমিশন। কমিশনগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ১৬৬টি প্রস্তাবের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনায় মিলিত হন। দীর্ঘ আলোচনার পর ৮৪টি প্রস্তাব সিদ্ধান্ত আকারে গৃহীত হয়। অনেক প্রস্তাবের সাথে কিছু রাজনৈতিক দল ভিন্ন মত পোষণ করায় সেগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যেই জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্র ও জুলাই জাতীয় সনদ প্রস্তুত করেছেন। দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্র ও জুলাই জাতীয় সনদে প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ তাদের পরামর্শ সরকারের নিকট উপস্থাপন করে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরাবরই জুলাই জাতীয় সনদকে আইনি ভিত্তি দেয়ার বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ইতোমধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপে ও ভয়ভীতিমুক্ত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ল্েয প্রয়োজনীয় পদপে গ্রহণের আহবান জানিয়ে আসছি। আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ, ভোটকেন্দ্র দখল, পেশিশক্তি প্রদর্শন ও ভোটের বিভিন্ন অনিয়ম ও অপতৎপরতা বন্ধ, কোয়ালিটি-সম্পন্ন পার্লামেন্ট এবং দ আইনপ্রণেতা তৈরিসহ প্রতিটি ভোট পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য জোর দাবি জানিয়ে আসছি। আমাদের দাবি বর্তমানে জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। জনগণের দাবিসমূহ কার্যকর করার কোনো পদপে গ্রহণ করা হচ্ছে না।
বিকেল সাড়ে ৪টায় স্থানীয় কুলটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ভোটার সমাবেশ ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা আব্দুর রশীদ আল আজাদের সভাপতিত্বে এবং গৌতম ফৌজদার ও ফরিদুজ্জামানের পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার।
এর আগে সকাল ৭টায় ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয়ে ভোটকেন্দ্র দায়িত্বশীল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ডুমুরিয়া উপজেলা আমির মাওলানা মোক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে ও উপজেলা ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি আব্দুর রশীদ বিশ্বাসের পরিচালনায় ভোট কেন্দ্র কমিটির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।



