মুলাদীতে সড়ক কেটে খালখনন

Printed Edition

ভূঁইয়া কামাল মুলাদী (বরিশাল)

বরিশালের মুলাদী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আলাউদ্দিন হাওলাদার সড়ক এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সড়ক কেটে খাল খননের কারণে এ পথ দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াতকারী কয়েক হাজার মানুষসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদরাসা ও স্থানীয় জনগণের চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।

জানা গেছে, সড়কটি মুলাদী পৌরসভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংযোগপথ। এটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় দুই-তিন হাজার মানুষ যাতায়াত করে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ছাত্রদল নেতা সোহানুর রহমান সোহান বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে সড়কটির বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স বা ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও এ পথে যেতে পারে না।

উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে- মুলাদী সরকারি কলেজ, মুলাদী মহিলা কলেজ, সরকারি মাহমুদজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গফুর মল্লিক বালিকা বিদ্যালয়, টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ, আল-রাজী ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ইমাম গাজ্জালী মাদরাসা, দিনিয়া মাদরাসা প্রভৃতি। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রতিদিনই এ সড়ক পথেই চলাচল করেন।

জানা যায়, ২০২৫ সালের ১ এপ্রিল (২৭০ দিনের মধ্যে) দরপত্রের মাধ্যমে ‘মোহাম্মদ ইউনুস ব্রাদার্স এন্টারপ্রাইজ’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে রাস্তার কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল; কিন্তু ঠিকাদার দীর্ঘ দিন কাজ বন্ধ রেখে দেয়ায় সড়কের অবস্থা আরো করুণ হয়ে পড়ে। পরে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার কিছুটা নড়েচড়ে বসলেও কাজের অগ্রগতি কিছুই হয়নি।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঠিকাদার ভেকু মেশিন দিয়ে সড়কের একাংশ কেটে খাল খনন করে এবং আরো প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত রাস্তা খুঁড়ে কাজ বন্ধ করে রাখে। এতে পুরো রাস্তা কাদামাটিতে পরিণত হয়। এখন এ রাস্তায় হেঁটে চলাও কষ্টকর।

স্থানীয় বাসিন্দা মুকুল বেগম বলেন, প্রতিদিন ছেলেমেয়েদের স্কুলে নিতে গিয়ে খুব কষ্ট হয়। একটানা বৃষ্টি হলে রাস্তা কাদায় ভরে যায়। একই অভিজ্ঞতার কথা জানান আল-রাজী ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থী মুমতাসিন রিয়া ও মুসতাকিন জাইমের মা মাকসুদা আক্তার।

জনদুর্ভোগের বিষয়টি নিয়ে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের একটি প্রতিনিধিদল গত ৯ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক নিজাম উদ্দিনের সাথে দেখা করেন। প্রতিনিধিদলে ছিলেন আলহাজ খালেক হাওলাদার, রুহুল আমিন বিশ্বাস, সোহানুর রহমান সোহানসহ ১৫ জন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদেরকে বলেন, বর্ষার কারণে কাজের কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে এলেই কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি আজ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দ্রুত সংস্কার না হলে এটি পুরো এলাকাবাসীর জীবনযাত্রায় দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে।