আদালত প্রতিবেদক
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ এই আদেশ দেন।
সকালে জামিন শুনানির জন্য শিবলী রুবাইয়াতকে ঢাকা মহানগর আদালতে হাজির করা হয়। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে তাকে হাজতখানা থেকে আদালতে তোলা হয়। শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আসিফুর রহমান জামিনের আবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘শিবলী রুবাইয়াতের গাজীপুরে একটি পৈতৃক সম্পত্তি আছে। ২০২১ সালে তিনি তার পিতার জায়গায় এক বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের সাথে ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও ভাড়া সংক্রান্ত একটি চুক্তি করেন। সেই চুক্তি অনুযায়ী টাকাটি দেশে আসে। পরে অন্য একজন ব্যক্তি ওই টাকার দাবিতে আপত্তি জানালে বিষয়টি আদালতে যায়। কিন্তু দুদক সেই ব্যক্তিগত চুক্তির ওপর ভিত্তি করে মামলা করেছে। এটি মূলত ব্যক্তিগত লেনদেন, দুর্নীতির কোনো বিষয় নয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘ব্রোকারেজ হাউজকে অনৈতিক সুবিধা দেয়ার অভিযোগও ভিত্তিহীন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে আবেদন প্রক্রিয়া সবার জন্য একই। প্রক্রিয়া মেনে আবেদনকারীরা স্বাভাবিকভাবেই লাইসেন্স পেয়ে থাকে। এখানে অনৈতিক সুবিধা দেয়ার প্রশ্নই আসে না।’ শুনানি শেষে শিবলী রুবাইয়াত নিজে বক্তব্য দেয়ার অনুমতি চান, তবে আদালত বলেন, ‘আপনার আইনজীবী আপনার পক্ষে যথেষ্ট বলেছেন।’ এরপর বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
পরে শিবলী রুবাইয়াতকে আইনজীবীর সাথে কিছুক্ষণ পরামর্শ করতে দেখা যায়। দুপুর ১২টা ১০ মিনিটের দিকে তাকে হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে আদালত প্রাঙ্গণের হাজতখানায় নেয়া হয়। পরে সোয়া ১টার দিকে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ভুয়া বাড়ি ভাড়া চুক্তি দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম এক কোটি ৯২ লাখ টাকা (প্রায় দুই লাখ ২৬ হাজার মার্কিন ডলার) ঘুষ গ্রহণ করেন। এ ছাড়া ভুয়া বিক্রয় চুক্তি দেখিয়ে পণ্য রফতানির নামে প্রতারণা ও জালিয়াতি করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে দুদক। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সু্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত ২০২০ সালের ১৭ মে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। চার বছর দায়িত্ব পালনের পর ২০২৪ সালের ১৬ মে তিনি পুনরায় চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পান।



