সিইপিজেডে ১৭ ঘণ্টার আগুনে পুড়ে শেষ পোশাক কারখানা

Printed Edition

চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) এলাকার ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ কারখানার আগুন ১৭ ঘণ্টা পার নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা রাতভর চেষ্টা চালিয়ে শুক্রবার সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে

সক্ষম হন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, আগুনে আটতলাবিশিষ্ট ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ কারখানার ভবনটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

কারখানাটির কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, এখানে মূলত চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত তোয়ালে ও অ্যাপ্রোন জাতীয় পোশাক তৈরি করা হয়। কারখানার নিচতলা ও দ্বিতীয় তলায় ছিল মূল্যবান মেশিনারিজ, যেগুলোর প্রতিটির দাম পাঁচ থেকে ১০ কোটি টাকার মধ্যে।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চিকিৎসায় ব্যবহৃত পোশাক ও সরঞ্জাম তৈরির এই কারখানায় প্রচুর দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দীর্ঘ সময় লাগে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বেলা ২টা ১০ মিনিটের দিকে সিইপিজেডের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কে অবস্থিত কারখানাটিতে আগুন লাগে। প্রথমে অষ্টম তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়, পরে তা দ্রুত সপ্তম ও ষষ্ঠ তলায় ছড়িয়ে পড়ে।

চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্টেশন থেকে মোট ১৯টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। তবে আগুনের ভয়াবহতার কারণে তাদের বেগ পেতে হয়।

শুরু থেকেই সিইপিজেডে অবস্থানরত সেনাবাহিনীর একটি টিম ফায়ার সার্ভিসের সাথে যোগ দেয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নৌবাহিনীর পাঁচটি ইউনিট এবং পরবর্তীতে বিমানবাহিনীর একটি ইউনিটও অংশ নেয়।

সন্ধ্যার পর আগুন ক্রমে নিচতলায় পৌঁছে পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। তীব্র উত্তাপে আশপাশের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পরিবেশ অসহনীয় হয়ে ওঠে। দুর্ঘটনা এড়াতে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা ভবনটি ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেন। আগুনের তীব্রতায় ভবনটি ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। শেষপর্যন্ত অষ্টম তলার কিছু অংশ ধসে পড়ে, তবে আগুন আশপাশের ভবনে ছড়িয়ে পড়েনি।

চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জানিয়েছেন, কারখানায় প্রায় ৮০০ জন শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন। আগুন লাগার পর দ্রুত সবাই ভবন থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। এখন পর্যন্ত কেউ ভেতরে আটকে থাকার বা প্রাণহানির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।