নাটোরে সোয়া ২ বিঘা জমির ধান বিষ দিয়ে পুড়িয়ে নষ্ট

Printed Edition

নাটোর প্রতিনিধি

নলডাঙ্গা উপজেলার পিপরুল ইউনিয়নের বাঁশভাগ পূর্বপাড়ার কৃষক হযরত আলী সরদারের মুখে এখন শুধু হাহাকার। সোয়া দুই বিঘা জমির সম্পারানী জাতের ধান রাতের আঁধারে ঘাস মারা বিষ দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল শনিবার সকালে প্রতিদিনের মতো মাঠে গিয়ে হযরত আলী দেখেন, জমির সব ধানের পাতা ও শীষ নুয়ে পড়েছে। পরে কাছ থেকে দেখে বোঝা যায়, শুক্রবার রাতেই কে বা কারা ঘাস মারা বিষ ছিটিয়েছে। হযরত আলী জানান, ‘এ জমি থেকে চল্লিশ-পঞ্চাশ মণ ধান পাওয়ার আশা ছিল। এখন পরিবার নিয়ে কী খাবো, বুঝে উঠতে পারছি না।’

তিনি অভিযোগ করেন, জমি নিয়ে চাচাতো ভাই সিরাজুল ইসলামের সাথে দুই বছর ধরে বিরোধ চলছে। সেই বিরোধের জেরেই হয়তো এ ধ্বংসযজ্ঞ ঘটানো হয়েছে। হযরত আলীর দাবি, গত বছরও একইভাবে তার রসুন ও ধান নষ্ট করে দেয়া হয়েছিল।

স্থানীয় কৃষক লিটন বলেন, ‘এভাবে বিষ ছিটালে ধানের আর কিছুই বাঁচবে না। এমন কাজ কোনো মানুষ করতে পারে না। অভিযোগ অস্বীকার করে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ধান পোড়ানোর বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। হয়তো তারাই নিজের ধান নষ্ট করে অন্যের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।’

পিপরুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কলিম উদ্দিন বলেন, ‘একজন কৃষকের সারাবছরের ঘাম মিশে থাকে ফসলে। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’ নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক হাবিবুল ইসলাম খান জানান, বিষ প্রয়োগে ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবেদন করলে সরকারি সহায়তার উদ্যোগ নেয়া হবে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইফতে খায়ের আলম বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ একজন পরিশ্রমী কৃষকের বছরের পর বছর ঘাম ও স্বপ্ন এক রাতেই ছারখার হয়ে গেল, গ্রামীণ জীবনের এমন বেদনাদায়ক বাস্তবতা আবারো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ফসলের সাথে কৃষকের অটুট সম্পর্কের মূল্য কতটা গভীর।