এএনআই
ভারতের কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘আমি খোলাখুলি বলছি, আরএসএসের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত।’ সর্দার প্যাটেলের একটি ঐতিহাসিক চিঠির উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি দাবি করেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে গান্ধী হত্যার পর আরএসএসের কার্যক্রমে সরকারি কর্মচারীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, যা মোদি সরকার ২০২৪ সালে প্রত্যাহার করে নেয়।
খাড়গে বলেন, ‘সর্দার প্যাটেল নিজেই বলেছিলেন, গান্ধীজির মৃত্যুর পর আরএসএস মিষ্টি বিতরণ করেছিল। তাই তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল অনিবার্য। তিনি আরো বলেন, ‘আজ যারা প্যাটেলের নামে রাজনীতি করছেন, তারা তার আদর্শের বিপরীত পথে হাঁটছেন।’ এই মন্তব্য এসেছে এমন এক দিনে, যেদিন সর্দার প্যাটেলের জন্মবার্ষিকী এবং ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়। খাড়গে দুই নেতাকে ‘জাতির লৌহমানব ও লৌহনারী’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘তারা ভারতের ঐক্য ও গণতন্ত্র রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন।’
কংগ্রেস সভাপতি অভিযোগ করেন, আরএসএস ও বিজেপি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটাচ্ছে এবং বিভাজনের রাজনীতি করছে। তিনি বলেন, ‘দেশে ঘৃণা, বিদ্বেষ ও বিভাজনের বিষ ছড়ানো হচ্ছে। এই বিষের উৎস আরএসএস।’ বিজেপি নেতারা খাড়গের মন্তব্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন। তারা দাবি করেন, কংগ্রেস ইতিহাস বিকৃত করছে এবং প্যাটেলের ভাবমূর্তি ব্যবহার করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একই দিনে স্ট্যাচু অফ ইউনিটিতে প্যাটেলের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘প্যাটেল ভারতের ঐক্যের প্রতীক, তার স্বপ্নই আমাদের পথপ্রদর্শক।’ খাড়গের এই মন্তব্য ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আরএসএসের ওপর নিষেধাজ্ঞার দাবি কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের অবস্থান হলেও, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তা আরো তীব্রভাবে সামনে এসেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বক্তব্য ২০২৬ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক মেরুকরণকে আরো তীব্র করতে পারে।



