নিজস্ব প্রতিবেদক
জামায়াতে ইসলামী পুরুষের পাশিপাশি নারীদের জাতীয় েেত্র অবদান রাখার সুযোগ করে দিয়ে অনন্য মর্যাদায় অভিষিক্ত করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আমির ডা: শফিকুর রহমান।
গতকাল মিরপুরের পুলিশ কনভেনশন হলে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মিরপুর-কাফরুল অঞ্চল (ঢাকা-১৫ আসন) আয়োজিত এক মহিলা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা: ফখরুদ্দীন মানিকের সভাপতিত্বে ও ঢাকা-১৫ আসনের দলের নির্বাচনী সচিব শাহ আলম তুহিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মুসা ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি লস্কর মোহম্মদ তসলিম।
ডা: শফিকুর রহমান বলেন, আল্লাহ আমাদের মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই আমাদের দায়িত্ব হলো জীবনের সব েেত্র আল্লাহর হুকুম ও রাসূল সা:-এর আদর্শ যথাযথভাবে অনুসরণ করা। মূলত, আল্লাহর হুকুম পালনের মাধ্যমে মানুষ সম্মানিত হয়। আর অমান্যকারীদের জন্য রয়েছে অপমান ও লাঞ্ছনা। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সা:-এর চরিত্র মাধুর্য ও জীবনাদর্শ সর্বশ্রেষ্ঠ। তাই আমাদের সবাইকে রাসূল সা:-এর আদর্শে জীবন গড়তে হবে। তিনি জামায়াতের কর্মপন্থার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের লড়াই আল্লাহর পথে আল্লাহর হুকুম পালনের জন্য। যারা আল্লাহর পথে লড়াই করে তারা আল্লাহর সৈনিক। এ লড়াই কোনো সশস্ত্র সংগ্রামের নাম নয় বরং শয়তানের কুমন্ত্রণার বিপরীতে নিজের নফসের ওপর নিয়ন্ত্রণ। জামায়াত আমির বলেন, আমরা এমন এক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই যে সমাজে কোনো হানাহানি ও বৈষম্য থাকবে না। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সবাই সমান আইনের আশ্রয় গ্রহণের সুযোগ লাভ করবেন। দেশ অপশাসন-দুঃশাসন থেকে মুক্ত হবে।
তিনি বলেন, ইসলাম প্রতিষ্ঠার েেত্র শুধু পুরুষ নয় বরং নারীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ রয়েছে। এ েেত্র হজরত খাদিজাতুল কুবরা রা: সবার চেয়ে অগ্রগামী ছিলেন। রাসূল সা:-এর কাছে প্রথম ওহি আসার পর কিছুটা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। উম্মুল মোমেনীন তাকে কম্বলাবৃত করে ‘আপনি পরোপকারী এবং কারো কোনো তি করেননি’ বলে আশস্ত করে তাকে তার চাচাতো ভাইয়ের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। পাদ্রী ওয়ারাকা বিন নওফেল তাকে দেখেই শেষ নবী হিসেবে চিনতে পারেন। ওয়ারাকার কথা শোনামাত্রই উম্মুল মোমেনীন হজরত খাদিজা রা: আল্লাহ ও তার রাসূল সা:-এর ওপর ঈমানের ঘোষণা দেন এবং তিনিই ছিলেন গর্বিত প্রথম মুসলিম।
তিনি বলেন, ইসলামের প্রাথমিক সময়ে ৫০০ জন ইসলাম গ্রহণকারীর মধ্যে একজন নারী ছিলেন প্রথম শহীদ হজরত সুমাইয়া রা:। ওহুদের যুদ্ধে রাসূল সা: কে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য মানবঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন হজরত সুবাইতা রা:। তিনি রাসূল সা:-এর দিকে নিপে সব আঘাত সমপ্ত শরীর পেতে দিয়ে ধারণ করেছিলেন। রাসূল সা:-এর শশ্রƒষায় তিনি দ্রুত আরোগ্যও লাভ করেছিলেন। মূতার যুদ্ধে মুসলিম পরে চারজন সেনাপতি শাহাদাতবরণ করলেও হজরত হিন্দা রা:-এর দৃঢ়তা ও প্রত্যয়ের কারণেই বিজয় সহজ হয়েছিল। মূলত, ইসলামে নারী জাতিকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে। তিনি আল্লাহর জমীনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠায় অতীতের মতো নারী সমাজকে ময়দানে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
কানাডিয়ান হাইকমিশনারের সৌজন্য সাাৎ
বাসস জানায়, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমানের সাথে ঢাকাস্থ কানাডিয়ান হাইকমিশনার অজিত শিং সৌজন্য সাাৎ করেছেন। গতকাল সকালে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর আমিরের কার্যালয়ে এ সাাৎ ও প্রাতঃরাশ বৈঠক হয়।
এ সময় হাইকমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সিলর মার্কাস ডেভিস, সিনিয়র ট্রেড কমিশনার ডেবরা বয়েস ও পলিটিক্যাল অ্যাডভাইজার নিসার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৈঠকটি অত্যন্ত আন্তরিক ও হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার শুরুতে হাইকমিশনার জামায়াতের আমিরের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তার দ্রুত ও পূর্ণ সুস্থতা কামনা করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে গণতন্ত্রের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্যভাবে সম্পন্ন করার ল্েয কানাডার সার্বিক সহযোগিতা ও কারিগরি সহায়তা কামনা করা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশের টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা ও কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করার বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা হয়।
উভয়প আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে দ্বিপীয় ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরো সম্প্রসারিত ও সুদৃঢ় হবে।
জামায়াতের আমিরের সাথে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন ও জামায়াত আমিরের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান।



