রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
রাঙ্গামাটিতে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, পাহাড়ে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ এখনো অন্যতম বড় সামাজিক সঙ্কট। অনেক জায়গায় সঠিক ম্যাপ না থাকায় এ বিরোধ জটিল হয়ে উঠছে। সচেতনতা ও আইনি পরামর্শের অভাবে এসব বিরোধ মামলায় রূপ নিচ্ছে, যা লিগ্যাল এইড কার্যক্রমের মাধ্যমে অনেকটাই কমানো সম্ভব।
সেমিনারে জানানো হয়, এ অঞ্চলের প্রায় ৮০ ভাগ বিরোধের মূল কারণ ভূমি ইস্যু। সচেতনতা ও সঠিক আইনি পরামর্শের অভাবে এসব বিরোধ মামলা পর্যন্ত গড়ায়। লিগ্যাল এইড কার্যক্রম জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও বিরোধ নিষ্পত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মত দেন বক্তারা।
গতকাল বুধবার রাঙ্গামাটি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট ভবনের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের নিয়ে ‘জেলা লিগ্যাল এইড কার্যক্রম অবহিতকরণ’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের আয়োজনে সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (সিনিয়র সহকারী জজ) মো: আমানত উল্লাহ শাহিন।
সেমিনারে রাঙ্গামাটি প্রেস কাবের সভাপতি আনোয়ার আল হক, সিনিয়র সহ-সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইলিয়াস, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমাসহ জেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে জানানো হয়, যৌতুক, পিতা-মাতার ভরণপোষণ ও পারিবারিক বিরোধসহ কয়েকটি নির্দিষ্ট আইনে মামলা করার আগে এখন থেকে লিগ্যাল এইড অফিসের অনুমতি লাগবে। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে রাঙ্গামাটিসহ দেশের ১২টি জেলায় এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে মো: আমানত উল্লাহ শাহিন বলেন, ইতঃপূর্বে লিগ্যাল এইড কেবল আর্থিকভাবে অসচ্ছলদের জন্য সীমিত ছিল, কিন্তু এখন যে কেউ এই সেবা নিতে পারবেন। বিনা খরচে আইনি পরামর্শ, বিরোধ মীমাংসা ও প্রয়োজনে আইনজীবীর সহায়তাও দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, পাহাড়ে ভূমি বিরোধ সবচেয়ে বেশি। অনেক জায়গায় সঠিক ম্যাপ না থাকায় সমস্যা আরো জটিল হচ্ছে। মানুষ যেন প্রথমেই লিগ্যাল এইড অফিসে এসে পরামর্শ নেয়, তাতে অপ্রয়োজনীয় মামলা, সময় ও অর্থ অপচয় কমবে।
সেমিনারে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, লিগ্যাল এইড কার্যক্রম সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেমিনার শেষে সাংবাদিকরা লিগ্যাল এইড কার্যক্রম তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।



