আর কত সৌম্য সরকার!

Printed Edition

ক্রীড়া প্রতিবেদক

জাতীয় দলের স্কোয়াডে একটা অলিখিত নিয়ম হয়ে গেছে সৌম্যকে নিয়ে। অমুক খারাপ করেছে সৌম্যকে নাও, অমুক রান করতে পারেনি- সৌম্যকে নাও। যেন সে ছাড়া ব্যাকআপ দেয়ার মতো আর কোনো ক্রিকেটার পাইপলাইনে নেই। হ্যাঁ, তার অভিজ্ঞতা আছে; কিন্তু পারফর্ম করার মতো ক্যাপাবিলিটি হারিয়েছে। সেটিই পরখ করতে পারছেন না বিসিবি নির্বাচকরা।

আট মাসের অপেক্ষা শেষে ওয়ানডেতে ফিরেছেন সৌম্য সরকার। শেষবার জাতীয় দলের হয়ে ওয়ানডে খেলেছিলেন চ্যাম্পিয়নন্স ট্রফিতে এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে, দীর্ঘ বিরতির পর গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে একাদশে সুযোগও পান বাঁ হাতি এই ওপেনার। তবে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচটি তার জন্য শুভ হয়নি। ব্যাট হাতে ফিরলেন ছয় বলে মাত্র চার রান করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসার জেডেন সিলসের অফস্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ধরা পড়েন। মারার মতো বল পেয়েছিলেন; কিন্তু শটটা গ্যাপে রাখতে পারেননি। মাথার ওপর দিয়ে চমৎকার ক্যাচ নেন রোস্টন চেইস। সৌম্যের ব্যাট থেকে আসা একমাত্র চারটিই রইল তার ফিরে যাওয়ার আগে ছোট্ট এক ঝলক হয়ে।

সৌম্যকে দলে ফেরানোর বড় কারণ ছিল ওপেনিং জুটিতে বাংলাদেশের ব্যর্থতা। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৯ ইনিংসেও ওপেনিং জুটি ৫০ রানের পার্টনারশিপ গড়তে পারেনি একবারও। এমনকি ছয়বার প্রথম উইকেট গেছে ২০ রানের আগেই। সেই ব্যর্থতার সমাধান খুঁজতেই নির্বাচকেরা ফিরিয়ে আনেন অভিজ্ঞ সৌম্য সরকারকে। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। তবে শুরুটা আশাব্যঞ্জক। সাইফ হাসানের সাথে ইনিংসের শুরুতে একটি দারুণ কভার ড্রাইভ মেরে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু সাইফের বিদায়ের পর পরের ওভারেই তিনিও ফেরেন। সিলসের অফস্টাম্পের বাইরে পিচ করা বলটি কভার দিয়ে পাঠাতে চেয়েছিলেন সীমানার বাইরে; কিন্তু পা নড়েনি, টাইমিং হয়নি- ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে যায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে চেইসের হাতে।

বাংলাদেশ দলের জন্য ম্যাচটি মর্যাদা পুনরুদ্ধারের লড়াই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশের ক্ষত এখনো শুকোয়নি। সেই ব্যর্থতা পেছনে ফেলে নতুন করে শুরু করতে মিরপুরের মাঠে নেমেছে মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। একাদশে নতুন সংযোজন হিসেবে আছেন তরুণ ব্যাটার ও উইকেটরক্ষক মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। সাইফ হাসানের কাছ থেকে ওয়ানডে ক্যাপ পেয়ে অভিষেক হয় তার, তিনি দেশের ১৫৪তম ওয়ানডে ক্রিকেটার হিসেবে নাম লেখান। ২৬ বছর বয়সী এই ব্যাটার এর আগে টেস্টে অভিষেক করেছিলেন, তবে সেখানেও বড় কিছু করতে পারেননি। ঘরোয়া লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তার পরিসংখ্যান অবশ্য বেশ সমৃদ্ধ-৯৬ ম্যাচে চারটি সেঞ্চুরি ও ২৮টি ফিফটি, গড়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রান। মিডল অর্ডারের স্থিতিশীলতা ফেরাতে তাকেই বেছে নিয়েছেন নির্বাচকেরা।

তবে ওপেনিং ব্যর্থতা গতকালও থেকে গেল। সৌম্যের ব্যাটে ফের জ্বলে উঠল অস্থিরতা, আস্থা নয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর তার ফেরা তাই এখন প্রশ্নের মুখে-আর কতবার সুযোগ পাবেন তিনি জাতীয় দলে নিজেকে প্রমাণ করার?