টপ এগ্রি-ফুড পাইওনিয়ার পুরস্কার নিলেন আবদুল আউয়াল মিন্টু

Printed Edition

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বব্যাপী খাদ্যনিরাপত্তা ও টেকসই কৃষি উন্নয়নে কয়েক দশকের উদ্ভাবনী অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশের শীর্ষ উদ্যোক্তা আবদুল আউয়াল মিন্টু ‘টপ এগ্রি-ফুড পাইওনিয়ার (টিএপি) ২০২৫’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। গত বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় যুক্তরাষ্ট্রে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশন (ডব্লিউএফপিএফ) এবং বীজ শিল্পের আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড সিড পার্টনারশিপ ফোরাম (ডব্লিউএসপিএফ) কর্তৃপক্ষ। এ দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে প্রতি বছর কৃষি উদ্ভাবন, বীজ উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষক কল্যাণে বৈশ্বিক অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ এই মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা দিয়ে থাকে।

লাল তীর সিড লিমিটেড এবং লাল তীর লাইভস্টক ডেভেলপমেন্ট (বিডি) লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল আউয়াল মিন্টু একজন সফল ব্যবসায়ী। তিনি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি। একই সাথে তিনি রাজনীতিবিদও বর্তমানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশনের ৩৯তম বার্ষিকীর সাথে সামঞ্জস্য রেখে এই মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি, খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তর এবং বৈশ্বিক খাদ্যনিরাপত্তা জোরদার করার েেত্র আবদুল আউয়াল মিন্টুর অসামান্য অবদানকে উল্লেখ করা হয়। লাল তীর সিড লিমিটেড এবং লাল তীর লাইভস্টক লিমিটেড হলো মাল্টিমোড গ্রুপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। এই গ্রুপটি ১৯৮১ সালে আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রতিষ্ঠিত করেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া ভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশন বিশ্বব্যাপী খাদ্যের গুণমান, পরিমাণ এবং প্রাপ্যতা উন্নত করার েেত্র ব্যতিক্রমী কৃতিত্ব অর্জনকারী ব্যক্তিদের সম্মাননা প্রদান করে। ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান, মন্ত্রী এবং কৃষি বিজ্ঞান, শিা ও নীতির বৈশ্বিক নেতারা। তারা এ পুরস্কার বিজয়ীদের নির্বাচন প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করেন। এই পুরস্কার এমন ব্যক্তিদের সম্মাননা জানায় যাদের কাজ বৈশ্বিক ব্যবস্থার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে, যা কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবনী বিজ্ঞান, নেতৃত্ব এবং উৎসর্গের প্রতিফলন ঘটায়।

মাল্টিমোড গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ১৯৯৫ সালে লাল তীর সিড লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন, যা দেশের প্রথম গবেষণাভিত্তিক বীজ কোম্পানি হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে, লাল তীর বাংলাদেশের বৃহত্তম বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, যা আইএসও সনদপ্রাপ্ত এবং দেশের মোট বীজের চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ সরবরাহ করে। আবদুল আউয়াল মিন্টু বাংলাদেশে হাইব্রিড সবজির উন্নয়ন ও প্রবর্তনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তার নেতৃত্বে, লাল তীর এখন ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, দণি এশিয়া এবং দণি-পূর্ব এশিয়ায় উচ্চমানের বীজ রফতানি করে।

লাল তীরের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এমএনটি সিড টেস্টিং ল্যাবরেটরির অ্যাক্রেডিটেশনপ্রাপ্ত এবং বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। এর বায়োটেকনোলজি ল্যাব রোগ ও জলবায়ুু-সহনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন অব্যাহত রেখেছে। গবেষণা ও উন্নয়নে শ্রেষ্ঠত্ব, স্থানীয়ভাবে বীজ উৎপাদন, অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানো, রফতানি এবং আন্তর্জাতিক উপস্থিতির স্বীকৃতিস্বরূপ, লাল তীর ২০২১ সালের ‘অ্যাক্সেস টু সিড ইনডেক্স’-এ দণি ও দণি-পূর্ব এশিয়ায় ৭ম স্থান অর্জন করে।

২০১১ সালে আবদুল আউয়াল মিন্টু লাল তীরের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করে লাল তীর লাইভস্টক ডেভেলপমেন্ট (বিডি) লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। এর ল্য হলো গোশত ও দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং টেকসই কৃত্রিম প্রজননের জন্য জেনেটিক্যালি উন্নত ষাঁড় থেকে মানস¤পন্ন সিমেন উৎপাদন করা।

টপ এগ্রি-ফুড পাইওনিয়ার প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আমাদের ল্য হলো তাদের দারিদ্র্যের চক্র ভাঙার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ও জ্ঞান সরবরাহ করা, সেই সাথে বৈশ্বিক খাদ্য স্থিতিস্থাপকতায় অবদান রাখা। তিনি ভবিষ্যতে আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনকে ল্য করে প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবন করার মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি ও সব শ্রেণীর মানুষের জীবনমান উন্নয়নের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।