সুদানের পূর্বাঞ্চলে সঙ্ঘাত ছড়িয়ে পড়ায় বাস্তুচ্যুতি বাড়ছে

Printed Edition

আলজাজিরা

সুদানে চলমান গৃহযুদ্ধ পূর্বাঞ্চলের দিকে ছড়িয়ে পড়ায় নতুন করে হাজার হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশটির অন্তত ২১ মিলিয়ন মানুষ তীব্র খাদ্যসঙ্কটে ভুগছে, যা বিশ্বে অন্যতম ভয়াবহ মানবিক দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। জাতিসঙ্ঘের মানবিক সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, পরিস্থিতি আরো অবনতি হতে পারে।

দারফুর অঞ্চলের এল ফাশার, দক্ষিণ কর্ডোফানের কাদুগলি এবং পূর্ব দারফুরের গ্রামগুলোতে সঙ্ঘাত ও খাদ্যসঙ্কট একযোগে ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসঙ্ঘের খাদ্যনিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, এসব এলাকায় ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে এবং আরো ২০টি অঞ্চলে তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যুদ্ধের কারণে খাদ্যসরবরাহ, চিকিৎসাসহায়তা এবং মানবিককার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

পূর্বাঞ্চলে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের (র্যা পিড সাপোর্ট ফোর্সেস) মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে, যার ফলে তাওয়িলা, কাস ও অন্যান্য গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে। নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, নারী ও শিশুরা নৌকায় করে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে এবং অনেকেই অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে।

এ দিকে চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যে আরএসএফ প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো, যিনি হেমেদতি নামে পরিচিত, একটি ভিডিওবার্তা প্রকাশ করেছেন। এতে তিনি ঘোষণা দেন, ‘আল-ওবেইদকে মুক্ত করতে আমরা বিশাল বাহিনী সংগ্রহ করছি।’ আরএসএফ ও সেনাবাহিনী যখন আল-ওবাইদে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন আল-ফাশের এবং এর আশপাশে মানবিক পরিস্থিতি বিপর্যয়কর রয়ে গেছে। জাতিসঙ্ঘের মানবিক সংস্থা জানিয়েছে, সঙ্ঘাতপূর্ণ এলাকায় খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে, যাতে জরুরি সহায়তা পৌঁছানো যায়। তবে এখনো কোনো কার্যকর শান্তি উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বিশ্লেষকদের মতে, পূর্বাঞ্চলে সঙ্ঘাত ছড়িয়ে পড়া মানে দুর্যোগের নতুন মাত্রা, কারণ এই অঞ্চলগুলো আগে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ছিল। বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা আরো বাড়বে এবং দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সুদানের জনগণ এখন মানবিক বিপর্যয়ের মুখে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত অবিলম্বে সহায়তা বাড়ানো এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নেয়া।’ পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি তহবিল, খাদ্যসহায়তা এবং নিরাপদ করিডোর তৈরির দাবি উঠেছে।