১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
স্মরণ

কবি ওয়ারিস আখতার বাঙালী

-

কবি ওয়ারিস আখতার বাঙালী। ২০০৬ সালের ২৭ জুন সিলেটের সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের পরিচিত মুখ কবি ওয়ারিস আখতার পরপারে পাড়ি জমিয়েছিলেন। তার পিতা মরহুম মোহাম্মদ আহসানের বাড়ি সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কাটাদিয়া নোয়াগাঁও গ্রামে। তিনি ভারতের বর্তমান ঝাড়খণ্ডের শিল্পনগরী জামশেদপুরে টাটা শিল্পপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন।
ওয়ারিস ১৯৪৪ সালের ১১ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন সেখানে। তিনি আর ডি টাটা হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ওয়ার্কার্স কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। বাংলা লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি মাদরাসায় আরবি ও উর্দু শিক্ষা গ্রহণ করেন। পারিপার্শ্বিকতার সুবাদে উর্দু সাহিত্যের প্রতি ছোটবেলা থেকেই তার বিশেষ আগ্রহ জন্মেছিল। সে সময় তিনি উর্দু সাহিত্য চর্চা শুরু করেন। ১৯৬০ সালে এক সঙ্কলনে তার লেখা প্রথম ‘গজল’ প্রকাশিত হয়। ভারতের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়ও তার লেখা ছাপা হতে থাকে। বাংলাভাষী হয়ে উর্দু কাব্যাঙ্গনে লেখালেখির কারণে তিনি ‘আখতার বাঙালী’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন।

১৯৬৪ সালে মুসলিমবিরোধী ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার শিকার হয়ে তার পরিবার সিলেটে ফিরে আসে ভারত থেকে। এরপর আখতার উর্দু ও ফারসির বিখ্যাত কবি মাওলানা হরমুজ উল্লাহ শায়দার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। সিলেটের সর্বজনপরিচিত কবি দিলওয়ারের সাথে ওয়ারিসের পরিচয় ঘটে। ১৯৯০ সালে সিলেট পৌরসভা হলে কবিতা উৎসবে সাহিত্যসেবীদের পরিচয় হয় আখতারের কাব্যপ্রতিভার সাথে। জালালপুর মাদরাসায় শিক্ষকতায় বছরখানেক নিয়োজিত থেকে জেলা প্রশাসকের অফিসে তিনি চাকরি নেন। প্রায় ৩৬ বছর পর ২০০১ সালে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি প্রগাঢ় ভালোবাসা থাকায় জীবনের অবসর সময়কে কাজে লাগাতেন কবিতা লিখে। স্বাধীনচেতা এই কবি একসময় প্রবীণ কবি দিলওয়ার এবং সিলেট প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাপ্তাহিক জালালাবাদ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক হারুনুজ্জামান চৌধুরীর অনুপ্রেরণায় নিজের লেখা বাংলায় অনুবাদ করা শুরু করেন। ফলে ১৯৯১ সালে রুবাইয়াত এ আখতার বাঙালী নামে একটি বই প্রকাশিত হয়।
শফিক আহমদ শফি
[email protected]


আরো সংবাদ



premium cement