১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
সময়-অসময়

গাজায় যুদ্ধ বন্ধের কতদূর

-

যুক্তরাষ্ট্র ভোটদান থেকে বিরত থাকার পর, জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ সোমবার ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। কাউন্সিলের বাকি ১৪ সদস্যই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বলেছেন, ‘এই প্রস্তাবটি অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যর্থতা ক্ষমার অযোগ্য হবে।’
অন্যদিকে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, প্রস্তাবে ভেটো দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতা দেশটির আগের অবস্থান থেকে ‘স্পষ্ট পশ্চাদপসরণ’ এবং তা ইসরাইলের যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে আঘাত করবে। একই সাথে হামাসের হাতে এখনো আটক ১৩০ জনেরও বেশি বন্দীর মুক্তির বিষয়টি এটি প্রভাবিত করবে। জাতিসঙ্ঘের ভোটের পরে, নেতানিয়াহু একটি উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের ওয়াশিংটন সফর বাতিল করেছেন। দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে পরিকল্পিত ইসরাইলি সামরিক অভিযান নিয়ে আলোচনার জন্য এই দলটির যাওয়ার কথা ছিল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরাইলের সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্র বিভ্রান্ত হয়েছে এবং এটিকে দেশটির অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া বলে মনে করছে।

যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কি বাধ্যতামূলক?
নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কার্যকর করা বাধ্যতামূলক বলে জাতিসঙ্ঘের পক্ষ থেকে বলা হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল এটিকে বাধ্যতামূলক নয় বলে দাবি করছে।
জাতিসঙ্ঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘এই অ-বাধ্যতামূলক রেজুলিউশনের কিছু জটিল উদ্দেশ্য সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করেছে।’ কিন্তু তিনি উল্লেখ করেন যে, ওয়াশিংটন ভাষ্যের সব কিছুর সাথে একমত নয়, যাতে হামলার জন্য হামাসেরও নিন্দা করা হয়নি।
থমাস-গ্রিনফিল্ড নিরাপত্তা পরিষদে বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, কাউন্সিলের পরিষ্কার করা উচিত, যেকোনো যুদ্ধবিরতি অবশ্যই সব বন্দীর মুক্তির সাথে আসতে হবে। প্রথম বন্দীদের মুক্তির সাথে সাথে একটি যুদ্ধবিরতি শুরু হতে পারে এবং এ জন্য অবশ্যই হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।’
ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাটজ প্রস্তাব পাসের পর বলেছেন, তার দেশ এটি মেনে চলবে না। ইসরাইল হামাসকে ধ্বংস করবে এবং শেষ ইসরাইলি বন্দী দেশে ফিরে না আসা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে।
জাতিসঙ্ঘে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বলেছেন, নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব বাধ্যতামূলক। তিনি বলেন, ‘অভূতপূর্ব মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে আটকে থাকা গাজার লাখ লাখ মানুষের জন্য এই প্রস্তাব যদি পুরোপুরি ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হয় তবে এখনো এটি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত আশা পূরণ করতে পারে।’
গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ‘অ-বাধ্যতামূলক’ বলে মার্কিন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে জাতিসঙ্ঘ। জাতিসঙ্ঘের প্রধান গুতেরেসের মুখপাত্র ফারহান হক সাংবাদিকদের বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের সব রেজুলিউশনই আন্তর্জাতিক আইন। সুতরাং এগুলো আন্তর্জাতিক আইনের মতোই বাধ্যতামূলক।’
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর বলেছেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলিউশন বাধ্যতামূলক। আর যদি ইসরাইল এটি বাস্তবায়ন না করতে চায়, তাহলে নিরাপত্তা পরিষদের দায়িত্ব হলো অধ্যায় ৭ ব্যবহার করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া।’
ভোটের পর রিয়াদ মনসুর আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, ‘এটি অবশ্যই একটি টার্নিং পয়েন্ট হবে। এটি অবশ্যই পৃথিবীতে জীবন বাঁচানোর পথে নিয়ে যাবে।’

ওয়াশিংটন-তেলআবিব দূরত্ব
গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভোট থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিরত থাকার পরে, ইসরাইল ও বাইডেন প্রশাসনের মধ্যে সম্পর্ক সর্বনি¤œ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর আগে থেকেই দুই দেশের যুদ্ধবিরতি ও অন্যান্য বিষয়ে মতের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্ট এক প্রতিবেদনে শিরোনাম করে, ‘ইসরাইল অ্যালোন’। ক্রমবর্ধমান ইসরাইলি গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইউরোপের অনেক দেশ আগে থেকে ইসরাইলকে নিঃশর্ত সমর্থন দেয়া থেকে সরে আসতে শুরু করে। সবশেষে ওয়াশিংটনও তার নিজস্ব একটি ভাবনা স্পষ্ট করতে থাকে। এটি প্রেসিডেন্ট বাইডেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন আমেরিকান সিনেটের ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমারের বক্তব্যে স্পষ্ট।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসঙ্ঘে একটি অ-বাধ্যতামূলক রেজুলিউশনকে সমর্থন করবে বলে আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিল, যাতে মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাসে ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি’ করার আহ্বান থাকবে। ভোটের ঠিক আগে নেতানিয়াহুর কার্যালয় ওয়াশিংটনে একটি সিনিয়র ইসরাইলি প্রতিনিধি দলের সফর বাতিল করার হুমকি দেয়। আর প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পরপরই ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হ্যানেগবি এবং কৌশলগতবিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমারের সফর বাতিল করা হয়। নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী করতে এবং দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানে আলোচনা আবার শুরু করার ভিত্তি স্থাপনের জন্য মার্কিন আহ্বানেও ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
গাজায় ইসরাইলের আক্রমণের ফলে ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু ২০২৪ সালের মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে প্রগতিশীল এবং আরব আমেরিকানদের মধ্যে বাইডেনের বিরুদ্ধে ক্ষোভের জন্ম দেয়। এই মাসের শুরুর দিকে, সবচেয়ে সিনিয়র ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতা সিনেটর চাক শুমার তার বক্তৃতায় নেতানিয়াহুকে প্রতিস্থাপন করার জন্য নির্বাচনের আহ্বান জানান।
রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটিক রাষ্ট্রপতিদের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের প্রাক্তন আলোচক অ্যারন ডেভিড মিলার বলেছেন, সোমবারের সিদ্ধান্ত বর্জন করার সিদ্ধান্তটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইসরাইলের বিরুদ্ধে তার লিভারেজ অনুশীলনের ‘প্রথম অভিজ্ঞতামূলক ডাটা পয়েন্ট’ চিহ্নিত করেছে। ইসরাইলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শান্তি আলোচনাকারী মার্টিন ইন্ডিক বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত ‘বিবিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে যে তার বাড়িতে আগুন লেগেছে এবং তার যুক্তরাষ্ট্রকে স্বাভাবিকভাবে নেয়া উচিত নয়।’
যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আশা করে, এটি নেতানিয়াহুকে রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করতে পারে। তবে তিনিই একমাত্র সিনিয়র ইসরাইলি কর্মকর্তা নন যিনি গাজা যুদ্ধকে আরো এগিয়ে নেয়ার এবং রাফাহ আক্রমণ শুরু করার অঙ্গীকার করেছেন। বেশির ভাগ ইসরাইলিও রাফাহ আক্রমণের পক্ষে, যেখানে ইসরাইলের মতে চারটি হামাস ব্যাটালিয়ন রয়েছে।
জাতিসঙ্ঘের ভোটের কয়েক ঘণ্টা পর সোমবার হোয়াইট হাউজের বাইরে বক্তৃতাকালে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেন, ১৩০ জন বন্দীকে মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত গাজায় যুদ্ধ শেষ হবে না। লেবানন-ইসরাইল সীমান্তে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যদি আমরা গাজায় একটি নিষ্পত্তিমূলক এবং নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন না করতে পারি, তাহলে উত্তরে একটি বড় যুদ্ধ ঘনিয়ে আসবে।’
বাইডেন প্রশাসন আশা করে যে, চুক্তিটি একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রূপান্তরিত হতে পারে যা গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটাবে এবং গাজা উপত্যকা ও দখলকৃত পশ্চিমতীরে একটি শক্তিশালী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করে একটি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানে আলোচনা পুনরায় শুরু করার সুযোগ সৃষ্টি করবে। অবিলম্বে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়াতে চায় এবং দক্ষিণ গাজার সীমান্ত শহর রাফাহ যেখানে প্রায় ১৫ লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিচ্ছে সেখানে পূর্ণমাত্রায় ইসরাইলি আক্রমণ প্রতিরোধ করতে চায়।

যুক্তরাষ্ট্র পুরনো নীতি থেকে সরে আসছে?
যুদ্ধবিরতি নিয়ে ওয়াশিংটন ও তেলআবিবের মধ্যে বিভক্তি দেখা গেলেও যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে সর্বাত্মকভাবে সমর্থন করার নীতি থেকে সরে আসবে বলে মনে হয় না। বিদ্যমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে ইসরাইলের যুদ্ধনীতি বাস্তবায়নের অর্থ হবে মধ্যপ্রাচ্যে একটি সর্বব্যাপী আঞ্চলিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া, যার সাথে চীন ও রাশিয়ারও এক পর্যায়ে সম্পৃক্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। এ ছাড়া ইরান ও তার সমর্থক প্রতিরোধ গোষ্ঠী আনসারুল্লাহ-হুতি, হিজবুল্লাহ এবং ইরাক ও সিরিয়ার প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো যেভাবে সক্রিয় হয়ে যুদ্ধ করছে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ইসরাইলকে আরো বেশি সমর্থন করার অর্থ হবে দেশটির ভাগ্যের সাথে ওয়াশিংটনকে একেবারে একই সূত্রে গেঁথে ফেলা। অনেক মার্কিন কর্মকর্তা এটি কোনোভাবেই চাইছেন না। এমনটি এবারের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কট্টর ইসরাইল সমর্থক ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখ থেকেও ভিন্ন কথা শোনা যাচ্ছে।
ট্রাম্প ইসরাইলকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ইসরাইলের আচরণে বিদ্বেষবাদ সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাম্প গাজার যুদ্ধ ‘সমাপ্ত’ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এর জন্য ‘বিশ্ব অনেক কিছু হারাচ্ছে।’
ন্যাশনাল সিকিউরিটির মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, নেতানিয়াহুর প্রতিনিধিদলের সফর বাতিলের সিদ্ধান্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হতাশ। স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারও এটিকে ‘আশ্চর্যজনক ও দুর্ভাগ্যজনক’ বলেছেন।
তবে এতসব কিছুর পরও যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে সমর্থনের নীতি থেকে সরে আসবে বলে মনে হয় না। জন কিরবি বলেছেন, ‘ভোটদানে বিরত থাকা আমেরিকার নীতি পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করে না। আমাদের নীতিতে কোনো পরিবর্তন হয়নি।’

হামাসের বক্তব্য
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংস্থা হামাস জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। হামাসের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিই, গাজা থেকে সব ইহুদিবাদী বাহিনী প্রত্যাহার এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পদক্ষেপ দাবি করি।’
হামাস উল্লেখ করে, তারা অবিলম্বে একটি বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকার জন্য প্রস্তুতির বিষয়টি নিশ্চিত করে, যা উভয়পক্ষের দ্বারা বন্দীদের মুক্তির দিকে নিয়ে যাবে। হামাস প্রস্তাবে, ফিলিস্তিনি নাগরিকদের চলাফেরার স্বাধীনতা এবং গাজা উপত্যকার সব এলাকায় ধ্বংসস্তূপ অপসারণের জন্য ভারী সরঞ্জামসহ সব বাসিন্দার সব মানবিক প্রয়োজন পূরণের ওপর জোর দেয়া হয়েছে, যাতে তারা কয়েক মাস ধরে ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে থাকা শহীদদের দাফন করতে পারে।
হামাস নিরাপত্তা পরিষদকে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার জন্য এবং ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা, যুদ্ধ ও জাতিগত নিধন বন্ধ করতে দখলদারিত্বের ওপর চাপ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। হামাস তাদের বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আল-কুদসকে রাজধানী করে স্বাধীন সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

কী হতে পারে?
ইসরাইলের পক্ষে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব গ্রহণের পর রাফায় পরিকল্পিত স্থল অভিযান চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে তেলআবিব এখনই যুদ্ধ বন্ধ করবে বলে মনে হয় না। তবে নেতানিয়াহু কোনোভাবেই তার তিন লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন না। এমনিতেই ইসরাইলের নিরাপত্তাব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। দেশটির তিন স্তরের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করে ইয়েমেন ও ইরাকের প্রতিরোধ যোদ্ধারা দেশটির হাইভ্যালুড টার্গেট বেনগুরিয়ান বিমানবন্দর, হাইফা ও ইলাত বন্দর, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে আঘাত করেছে। গাজায় কোনোভাবেই ইসরাইলের যুদ্ধ জয়ের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
আমেরিকা ও ইউরোপ অখণ্ড ইসরাইলের এজেন্ডা পূরণের জন্য ফিলিস্তিনিদের অন্য আরব দেশে পাঠানোর যে তৎপরতা চালিয়েছিল তার কোনো কিছুই সফল হয়নি। ইরান ও সহযোগী প্রতিরোধ সংস্থাগুলো সরাসরি সামরিক তৎপরতায় যুক্ত হয়েছে। অন্য আরব দেশগুলো সেটি না করলেও একেবারেই বসে আছে বলে মনে হয় না। কাতার কুয়েত মিসর তুরস্ক জর্দান সৌদি আরব এমনকি আমিরাতও তার অবস্থান থেকে নানা ফোরামে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে বলে মনে হয়। প্রতিরোধ কার্যক্রমে নানা কারণে যারা সরাসরি সহায়তা করতে পারছে না তারা গোপনে সহায়তা করে প্রতিরোধ শক্তিকে অক্ষুণœ রাখছে। ইসরাইল ও তার পশ্চিমা সমর্থকরা এ পরিস্থিতি কখনো আশা করেনি।
ফলে ইসরাইলকে বাস্তবতা মানতে হবে। তাকে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে বন্দী মুক্ত করতে হবে। চূড়ান্তভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র মেনে নিতে হবে। এটি করা না হলে পরে ইসরাইলকেই অস্তিÍত্ব সঙ্কটের ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হতে পারে। এসব বিষয় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ইসরাইলি মিত্রদের কাছে অস্পষ্ট নেই বলেই তারা যে মাত্রায় হোক না কেন, পিছু হটতে শুরু করেছে। ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এখনকার মধ্যপ্রাচ্যের অনিবার্য বাস্তবতা বলে মনে হচ্ছে যার জন্য এর মধ্যে অবর্ণনীয় ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে গাজা ও পশ্চিম তীরের জনগণকে।
[email protected]


আরো সংবাদ



premium cement
ঘড়ির সময় বদলাতে চান না ট্রাম্প ভারতীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াতে অস্ত্র বাংলাদেশ : ওয়েইসি সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র খেয়ালখুশিমতো খরচ হয়েছে জলবায়ু তহবিলের অর্থ গুমে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পেয়েছে কমিশন : র‌্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ আরাকানে সাড়ে ৪ শ’সেনা নিহত, জান্তার নিয়ন্ত্রণ শেষ বিপাকে রোহিঙ্গারা ভারতসহ সাত ‘অসহযোগী’ দেশের তালিকা ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের সিরীয়রা স্বাধীনতা উদযাপনের সময় দামেস্কে ইসরাইলের হামলা আগামীতে সবাইকে নিয়ে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে বেক্সিমকোর জন্য ১৮০ কোটি টাকা ছাড় করছে জনতা ব্যাংক বেকারত্বহীন বাংলাদেশ গঠনে কাজ করছে জামায়াত : ডা: শফিক

সকল