২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

লড়াকু বাঙালি মেজর এ ডব্লিউ চৌধুরী

-

কর্নেল মোহাম্মদ আবদুল হক, পিএসসি (অব:)
বাংলাদেশ এমনিই স্বাধীন হয়ে যায়নি। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধও হঠাৎ কোনো প্রস্তুতি ছাড়া শুরু হয়নি। যে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে এ যুদ্ধে আমরা বিজয় লাভ করেছি, এটি গড়ে তোলার পেছনে বহু আগে থেকেই বাঙালি সেনা কর্মকর্তারা নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করেছেন। ব্রিটিশ-ভারতে বাঙালিদের কোনো রেজিমেন্ট ছিল না; ফলে তেমন কোনো সম্মানও ছিল না এ জাতির। আমাদের দুঃসাহসী, মেধাবী কিছু পূর্বসূরি সেনা অফিসার একটি বাঙালি রেজিমেন্ট গড়ে তোলার জন্য দুর্বার গতিতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন সেই চল্লিশের দশকে। তাদেরই অক্লান্ত পরিশ্রম সফলতা লাভ করে পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পরপর। পাকিস্তান সরকার প্রতিষ্ঠা করে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট। এ রেজিমেন্টই পরিচালনা করে, নেতৃত্ব দেয় আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে। তাদের রোপণ করা প্রতিটি চারা মহীরুহ হয়ে আবির্ভূত হয় স্বাধীনতা যুদ্ধে। এর প্রতিষ্ঠার সাথে জড়িত এক অফিসারকে নিয়েই আজকের আলেখ্য।
ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ও পরবর্তীতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে তেজস্বী, দুঃসাহসী, নির্ভীক ও স্পষ্টভাষী কিছু বাঙালি অফিসার ছিলেন, যারা নিজ জাতি ও মাতৃভূমির অধিকার রক্ষায় ছিলেন আপসহীন সিংহের মতো। তাদেরই একজন হলেন মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী; সংক্ষেপে এ ডব্লিউ চৌধুরী নামেই তিনি সমধিক পরিচিত যদিও বর্তমান প্রজন্ম আমাদের পূর্বসূরি বীর পুরুষদের সম্পর্কে খুব কমই জানে। যে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদারদের দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হয় এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়, সে রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার পুরোধাগণের মধ্যে মেজর মুহাম্মদ আব্দুল গণি, মেজর এম টি হোসাইনের সাথে মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরীও ছিলেন উল্লেখযোগ্য।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অন্যতম জ্যেষ্ঠ বাঙালি সেনা কর্মকর্তা ছিলেন মেজর চৌধুরী। ১৯৪৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার জন্য তার অবদান ছিল অবিস্মরণীয়। প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রশিক্ষণ কোম্পানির অধিনায়ক ছিলেন তিনি। তাই তাকে রেজিমেন্টের পিতৃতুল্য অধিনায়কদের অন্যতম হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু স্পষ্টবাদিতার কারণে অকালেই সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে তাকে পুলিশ বাহিনীতে চলে যেতে হয়। পূর্ব পাকিস্তান পুলিশ সার্ভিসে তিনি একজন অত্যন্ত সৎ ও আদর্শ পুলিশ অফিসার হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন।
মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী ১৯১৪ সলের ১ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের বর্তমান হবিগঞ্জ জেলার দরিয়াপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে তার পরিবার ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক খান সাহেব আবদুর রব চৌধুরী ছিলেন মেজর ওয়াহেদের বাবা। যে সময়ে বাঙালি মুসলমানদের সন্তানরা শিক্ষা-দীক্ষায় ছিল পশ্চাৎপদ সে সময়ের সুবিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেন্ট গ্রেগরিজ উচ্চবিদ্যালয় ঢাকা, থেকে ম্যাট্রিকুলেশন ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। এখান থেকেও কৃতিত্বের সাথে অর্থনীতিতে অনার্স ও ১৯৩৭ সালে মাস্টার্স পাস করেন। তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তুখোড় খেলোয়াড় হিসেবেও তিনি সবার কাছে এক নামে পরিচিত ছিলেন। ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর প্রিয় ছাত্র ছিলেন তিনি এবং জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন তার ঘনিষ্ঠ সহপাঠী ও প্রিয় বন্ধু।
মেধাবী ছাত্র ও তুখোড় খেলোয়াড় আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী মাস্টার্স শেষ করেই ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে দেরাদুন মিলিটারি একাডেমিতে জেন্টলম্যান ক্যাডেট (জিসি) হিসেবে যোগদান করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে প্রশিক্ষণ গ্রহণ সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার আগেই ১৯৪১ সালের ১৫ মে জরুরি কমিশন্ড অফিসার হিসেবে ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সেকেন্ড লেফটেনেন্ট পদে কমিশনপ্রাপ্ত হন। উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীনতম পদাতিক চতুর্থ মাদ্রাজ রেজিমেন্টে তার বদলি হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ব্রিটিশ সরকার যুদ্ধের প্রয়োজনে ইরাকের বসরায় জেনারেল স্যার এডওয়ার্ড কুইনিনের অধীনে ব্রিটিশ দশম আর্মি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ আর্মির অধীনে ক্যাপ্টেন ওয়াহেদ তার চতুর্থ মাদ্রাজ রেজিমেন্টের সাথে দশম আর্মির সাব এরিয়া হেডকোয়ার্টারে নিযুক্ত হন। প্রয়োজন শেষে এক সময়ে দশম আর্মি অবলুপ্ত হয় এবং তাকে বার্মা সেক্টরে সিলোন সাব এরিয়া হেডকোয়ার্টারে বদলি করা হয়। অতঃপর ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান স্বাধীনতার সময় মাদ্রাজ রেজিমেন্ট থেকে তাকে বদলি করা হয় ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীর সবচেয়ে পুরনো রেজিমেন্ট ফার্স্ট পাঞ্জাব রেজিমেন্টে, যে ইউনিট ‘ফার্স্ট অব দি ফার্স্ট’ নামেই সমধিক পরিচিত। প্রথম পাঞ্জাব রেজিমেন্টের কর্মকর্তা হিসেবে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের মুলতান ঝোহাব ব্রিগেড সদর দফতরে ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রবীণতম কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার মোহাম্মদ কিয়ানার অধীনে ব্রিগেড স্টাফ ক্যাপ্টেন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিভক্তি ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে রূপান্তর, সম্পদ বণ্টন ও সংহতকরণের কাজে দিল্লিতে সুপ্রিম আর্মি হেডকোয়ার্টার পদাতিক পরিদফতরে পাকিস্তান সেলে যোগদান করেন। এ কাজে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে তদানীন্তন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর স্বার্থ রক্ষা করতে চেষ্টা করেন।
ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠায় অবদান : সেনাবাহিনী থেকে দীর্ঘকাল বঞ্চিত বাঙালি মুসলমান সৈনিকদের নিয়ে একটি বাহিনী প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ দিনের প্রয়োজন ও আকাক্সক্ষার ফলে পাকিস্তান সৃষ্টি হলে কিছুটা যেন আশার আলো দেখেন বাঙালি সেনা ও কর্মকর্তারা। দেশ বিভাগের সময় ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান ফিল্ড মার্শাল ক্লাউডে অচিনলেকও বাঙালি রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব অনুধাবন করেন এবং তিনি তার উত্তরসূরি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রথম সেনাপ্রধান জেনারেল ফ্রাংক ওয়াল্টার মেসারকে জোরালোভাবে তা করার অনুরোধ করেন। তিনি বাঙালি অফিসার ও সৈনিকদের কথা বিবেচনা করে পূর্ববাংলার যুদ্ধফেরত বাঙালি মুসলমান সেনাদের নিয়ে সামরিক গুরুত্ব বিবেচনায় বাঙালি প্রধান একটি রেজিমেন্ট গঠনের অনুমোদনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি পাকিস্তান ন্যাশনাল গার্ড গঠনের প্রস্তাবকে স্থগিত করে পূর্ব বাংলার বাঙালিদের জন্য পূর্ণাঙ্গ একটি রেজিমেন্ট গঠনের সামরিক গুরুত্ব জোরালোভাবে ‘পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা’ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর কাছে উপস্থাপন করলে তিনি সম্মতি প্রদান এবং সরকার তা অনুমোদন করে।
ইতোমধ্যে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান সৃষ্টির পর রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা ডকট্রিনে তাকে বদলি করা হয়। শুরুতেই তিনি মেজর আবদুল গণির মতো বাঙালিদের জন্য একটি পৃথক রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টায় ওতোপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তান গঠিত হওয়ার সাথে সাথে তার চেষ্টা আরো জোরদার হয় এবং তারা সফল হন। পূর্ব বাংলার বাঙালিদের নিয়ে একটি পৃথক রেজিমেন্ট গঠনের নির্দেশ জারি হলো। এ সময় মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী ছিলেন জ্যেষ্ঠ বাঙালি সেনাকর্মকর্তা। প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের গঠন ও প্রশিক্ষণের দায়িত্ব দিয়ে তাকে বদলি করা হয় প্রশিক্ষণ কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে। অবশেষে ১৯৪৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠা করা হয় স্বপ্নের প্রথম ‘ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট’।
অপর্যাপ্ত সরঞ্জাম, অস্ত্র-গোলাবারুদ ও যুদ্ধাবস্থা থাকা সত্ত্বেও প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘সিনিয়র টাইগারস’কে গঠন ও প্রশিক্ষণ প্রদানের দুরূহ ও কষ্টসাধ্য কাজটি করতে থাকেন তিনি। শত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও একটি নবাগত ইউনিট গঠনে তিনি বিরাট ভূমিকা পালন করেন। খুব অল্প সময়ে রেজিমেন্ট গঠন ও যুদ্ধ সক্ষম করে তোলা কতটা দুরূহ ও কষ্ঠসাধ্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠনে তিনি ও তার সহকর্মীদের ত্যাগ ও অবদান অপরিসীম।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সেনাকর্মকর্তাদের মতো তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও বাঙালি সেনা ও কর্মকর্তাদের সাথে একই বর্ণবাদী আচরণ করা শুরু করে। একই সেনাবাহিনীর অংশ হয়েও ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট অবিচার ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছিল, যা মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরীসহ বাঙালি সেনা কর্মকর্তাদেরকে ক্ষুব্ধ করে। মেজর চৌধুরী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অন্যান্য রেজিমেন্টের মতো ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উন্নয়ন ও সমতা রক্ষার লক্ষ্যে এবং রেজিমেন্ট পরিচালনায় বৈষম্য ও অসংলগ্নতা দূর করার জন্য সেনাসদর এবং ইস্টার্ন কমান্ডের জিওসি মেজর জেনারেল আইয়ুব খানের কাছে এর প্রতিকার ও সংস্কারের প্রস্তাব করেন। মেজর ওয়াহেদের স্বাধীনচেতা মনোভাব এবং এ প্রস্তাবকে জিওসি ও প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ভি জে ই প্যাটারসন সহজভাবে গ্রহণ করেননি। বরং মেজর ওয়াহেদের এ প্রস্তাবকে তার ‘ঔদ্ধত্য ও কমান্ড চ্যানেল ভায়োলেশন’ হিসেবে গণ্য করেছিলেন। কুর্মিটোলায় এক কমান্ড সম্মেলনে মেজর জেনারেল আইয়ুব খান বাঙালি বিদ্বেষী মন্তব্য প্রদান এবং রাজনীতিকদের কটাক্ষ করলে মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী তার অপেশাদার আচরণের প্রতিবাদ ও সমালোচনা করেন। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী রেজিমেন্টের বাঙালি সেনা কর্মকর্তাগণ সমেত নিজেদের সম্মান ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হলে মেজর জেনারেল আইয়ুব খান তথা পশ্চিম পাকিস্তানি ঊর্ধ্বতন সামরিক অফিসারদের রোষানলে পড়েন এবং মেজর চৌধুরীকে অন্যায়ভাবে অবসর দিয়ে তার চাকরি পুলিশ বাহিনীতে ন্যস্ত করা হয়।
সেনাবাহিনীর অত্যন্ত সৎ, মেধাবী ও চৌকস অফিসার মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরীকে ১৯৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তান পুলিশ সার্ভিসে ন্যস্ত করা হয়। তিনি পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে স্বল্প সময়ের মধ্যেই অত্যন্ত ন্যায়নীতির পরিচয় দিয়ে নিজেকে জনগণের সেবক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, কুমিল্লা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে দক্ষতা ও সাহসিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। চুয়াডাঙ্গায় পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি প্রভূত সুনাম ও সুখ্যাতি অর্জন করেন এবং ‘মানুষের বন্ধু’তে পরিণত হন। তার চেষ্টায় চুয়াডাঙ্গা কলেজ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরীর অসাধারণ সততা, কর্মনিষ্ঠা, আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন এবং মানুষের প্রতি ভালোবাসার কারণে জনগণের কাছে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল হয়।
মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী ১৯৬৫ সালে মাত্র ৫১ বছর বয়সে ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডস্থ নিজ বাসভবনে পরলোক গমন করেন। তাকে ঢাকার নীলক্ষেত এলাকার বাবুপুরা শাহসাহেব বাড়িতে ‘মরিয়ম ছালেহা মসজিদ’ প্রাঙ্গণে সমাহিত করা হয়। বাংলাদেশ তথা বাঙালি জাতির প্রতি এ ক্ষণজন্মা পুরুষ রেখে যান অনেক অনেক অবদান। কীর্তিমান এ দেশপ্রেমিকের অসাধারণ ত্যাগ, সাহস ও দেশপ্রেমের আদর্শ বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। কৃতজ্ঞতা হিসেবে আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করে মহান আল্লাহ্ সুবাহানু ওয়া তায়ালার কাছে কায়মনোবাক্যে দোয়া করি। আমীন। হ
লেখক : সামরিক ইতিহাস ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক
hoque2515@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement