২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৩ শাবান ১৪৪৬
`
আইসিটির আইনি যুক্তিহীনতা

কিভাবে তহবিল সংগ্রহের কুপন ‘কমান্ডের প্রমাণ’ হয়ে উঠল

-

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে যে, রাজাকার বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত অপরাধের জন্য অধ্যাপক গোলাম আযম আইনত দায়ী। রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি ‘কমান্ডের দায়িত্ব’ নীতির ওপর ভিত্তি করে আবর্তিত ছিল। এটি আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আইনের একটি ধারণা; যা একজন কমান্ডার বা নেতাকে তার অধস্তনদের কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী করে, যদি তাদের ওপর তার ‘কার্যকর নিয়ন্ত্রণ’ থাকে। কার্যকর নিয়ন্ত্রণ প্রমাণ করতে, প্রসিকিউশনকে দেখাতে হবে যে অধ্যাপক গোলাম আযমের রাজাকারদের অপরাধ করা থেকে ‘প্রতিরোধ’ করার এবং তারা যদি কোনো অপরাধ করে থাকে; তবে তাদের ‘শাস্তি’ দেয়ার ক্ষমতা ছিল। কিন্তু, ট্রাইব্যুনাল এমন একটি মৌলিক আইনি সমস্যার মুখোমুখি হয় যে, রাজাকার বাহিনী অধ্যাপক গোলাম আযমের কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। এর পরিবর্তে, ১৯৭১ সালের রাজাকার অধ্যাদেশের অধীনে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক সরাসরি প্রতিষ্ঠিত, নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়েছিল বাহিনীটি। অধ্যাদেশটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে রাজাকারদের ওপর কর্তৃত্বশীল হিসেবে স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করে, যার ফলে প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রমাণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে যে, কার্যকর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগের ক্ষেত্রে রাজাকারের ওপর প্রয়োজনীয় কমান্ড কর্তৃত্ব অধ্যাপক আযমের ছিল। এর ফলে ট্রাইব্যুনালের পক্ষে কমান্ডের দায়িত্বের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে।
রাজাকার বাহিনীর ওপর অধ্যাপক গোলাম আযমের কমান্ডের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায়, ট্রাইব্যুনাল একাধিক প্রশ্নবিদ্ধ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ট্রাইব্যুনাল প্রথমে রায় দেয় যে, জামায়াতে ইসলামীর আমির হিসেবে অধ্যাপক গোলাম আযম একজন সামরিক কমান্ডারের মতো উচ্চপদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, যদিও জামায়াত একটি রাজনৈতিক দল ছিল, যার কোনো সামরিক কর্তৃত্ব ছিল না। এ দাবিকে শক্তিশালী করতে ট্রাইব্যুনাল আরো রায় দেয় যে, কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির ২১ সদস্যের নির্বাহী কমিটি এবং এর ৬ সদস্যের উপ-কমিটিতে তার সদস্যপদ তাকে রাজাকারদের মতো সহায়ক শক্তির ওপর প্রভাবশালী অবস্থানে রাখে। তবে, জামায়াতের আমির হিসেবে অথবা শান্তি কমিটির সদস্য হিসেবে রাজাকার বাহিনীর ওপর অধ্যাপক আযমের কোনো কর্তৃত্ব বা নিয়ন্ত্রণ ছিল বলে সরাসরি কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া এটি আন্তর্জাতিক আইনের একটি স্থিরীকৃত প্রস্তাব (বাংলাদেশে গৃহীত) যে, অধস্তনদের ওপর ‘প্রভাব’ থাকা ‘কমান্ডের দায়িত্ব’ প্রমাণ করে না।
সুনির্দিষ্ট প্রমাণের অভাবে, প্রসিকিউশন রাজাকার বাহিনী গঠন ও নিয়ন্ত্রণের সাথে অধ্যাপক আযমের যোগসূত্র স্থাপনে অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের (প্রসিকিউশন উইটনেস-৩) সাক্ষ্যের ওপর নির্ভর করে। আইনজীবী ও একটিভিস্ট সুলতানা কামাল ইতিহাসবিদ বা সামরিক কমান্ড কাঠামোর বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। তিনি তার সাক্ষ্যে কোনো ঐতিহাসিক নথি উল্লেখ করেননি। কিন্তু ১১ এবং ১২ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে ট্রাইব্যুনালের সামনে তিনি দাবি করেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি শুনেছেন অধ্যাপক গোলাম আযমের রাজাকারদের নেতৃত্বে ভূমিকা ছিল। রাজাকারদের ওপর অধ্যাপক আযমের কমান্ডের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠায় ট্রাইব্যুনাল এ অযাচাইকৃত গুজবকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করে।
বেলজিয়ামভিত্তিক আইনজীবী আহমেদ জিয়াউদ্দিন ও বিচারপতি মো: নিজামুল হকের মধ্যে স্কাইপ কথোপকথন ফাঁস হয়ে গেলে তাতে দেখা যায়, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিজামুল হক প্রকাশ করেছেন, কিভাবে মামলার সমর্থনে রাষ্ট্রপক্ষের প্রমাণ ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি করা হয়েছিল। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে, জিয়াউদ্দিন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সাক্ষ্যের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তার কথা থেকে বোঝা যায়, তিনি এবং রাষ্ট্রপক্ষ কৌশলগতভাবে এমন একজন সাক্ষীকে বেছে নিয়েছেন যার বক্তব্য রাষ্ট্রপক্ষের কমান্ড দায়িত্বের বর্ণনাকে আরো শক্তিশালী করবে। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে স্কাইপে কথোপকথনে জিয়াউদ্দিন ও বিচারপতি মো: নিজামুল হকের বক্তব্য নি¤œরূপ :
আহমেদ জিয়াউদ্দিন : ‘মোর ইমপোর্ট্যান্টলি, যেটা হচ্ছে, সেটা হচ্ছে যে উনি (জিয়াদ আল মালুম) দেখা গেল যে উনাকে (মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ) কন্ট্রোল করতে পারবেন না। অর্থাৎ সুলতানা কামাল আপাকে যেভাবে সব কিছু তথ্য দেয়ার পরে সুলতানা আপাকে কিছুই বলা লাগে নাই, মানে হইছে গুড নাম্বার অব আলোচনা হইছে, কিন্তু উনাকে শুধু এগুলো দিয়ে দেয়ার পরে উনি বুঝে গেছেন যে, কোন জিনসটা এমফ্যাসিজ করতে হবে এবং কী করতে হবে না করতে হবে।’
এমনকি তার সাক্ষ্যগ্রহণের আগে, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে জিয়াউদ্দিন সতর্ক করে দেন যে, আসামিপক্ষের জিজ্ঞাসাবাদ সীমিত করতে সুলতানা কামালের জবানবন্দী সংক্ষিপ্ত রাখা উচিত। প্রসিকিউশন এবং ট্রাইব্যুনাল প্রমাণকে অপব্যবহার করে ভুল ধারণা তৈরি করে যে, অধ্যাপক গোলাম আযম রাজাকারদের ওপর কমান্ডের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কোনো আইনি বা ঐতিহাসিক ভিত্তির অনুপস্থিতি সত্ত্বেও, একজন অবিশেষজ্ঞ সাক্ষীর শোনা সাক্ষ্যকে চূড়ান্ত প্রমাণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল।
ট্রাইব্যুনালের করা প্রশ্নবিদ্ধ দাবিগুলোর মধ্যে একটি ছিল এই দাবি যে, একজন ধর্মীয় নেতার কথা একজন সেনা জেনারেলের আদেশের চেয়ে বেশি কর্তৃত্বপূর্ণ। এ যুক্তি অনুসারে, রাজাকারদের উদ্দেশে অধ্যাপক গোলাম আযমের ধর্মীয় বক্তৃতা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক সামরিক কমান্ডের সমতুল্য বলে অভিযোগ করা হয়। ট্রাইব্যুনাল যুক্তি দেয় যে, যেহেতু তিনি ধর্মীয় বক্তৃতা দিতেন, এর অর্থ হলো তিনি আদেশ জারি করতে, শৃঙ্খলা প্রয়োগ করতে এবং তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন। এ যুক্তি এতটা হাস্যকর যে, এটি যুক্তি এবং আন্তর্জাতিক আইন উভয়কে অস্বীকার করে। খুৎবা দেয়া আর সামরিক আদেশ দেয়া এক নয়। ধর্মীয় শিক্ষা প্রদানকারী ব্যক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সশস্ত্র বাহিনীর ওপর কর্তৃত্বের দায়িত্ব অর্জন করেন না। আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আইনের অধীনে, কমান্ডের দায়িত্বে কার্যকর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন, যার অর্থ আদেশ জারি করার এবং অবাধ্যতার শাস্তি দেয়ার আইনি কর্তৃপক্ষ। অধ্যাপক আযমের এমন কর্তৃত্ব ছিল বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ধরনের অযৌক্তিক বর্ণনা উপস্থাপন করে, ট্রাইব্যুনাল কমান্ডের দায়িত্বের ধারণাকে একটি উপহাসে পরিণত করে।
অধ্যাপক গোলাম আযমের কমান্ডিং দায়িত্ব প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রপক্ষের মরিয়া প্রচেষ্টা অযৌক্তিক পর্যায়ে পৌঁছে; যখন তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রশাসনের ওপর তার শাসন ও নিয়ন্ত্রণের প্রমাণ হিসেবে একটি চাঁদার কুপন উপস্থাপন করে। তদন্ত কর্মকর্তা দাবি করেন, ২০ এপ্রিল ২০১১ তারিখে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর থেকে একটি চাঁদার কুপন (এক্সটেনশন নং-৫০৫) জব্দ করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক প্রদান করা এ কুপনটিতে অধ্যাপক আযমের স্বাক্ষর ছিল বলে অভিযোগ করা হয় এবং এটি পাকিস্তানের আদর্শ রক্ষায় তহবিল সংগ্রহে ব্যবহৃত হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়। এটা থেকে, ট্রাইব্যুনাল হাস্যকরভাবে দাবি করে যে, অধ্যাপক গোলাম আযম ‘পাকিস্তানের শাসকদের’ একজন ছিলেন। দাবিটি এতটা অযৌক্তিক এবং আইনত ভিত্তিহীন ছিল যে, এটি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করার মতো কোনো কিছু ছিল না। কোনো আইনি মানদণ্ডের অধীনে, কেবল তহবিল সংগ্রহের কুপন সামরিক বাহিনীর ওপর কর্তৃত্বের সমতুল্য নয়। আমি আগেই বলেছি, আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আইনের অধীনে কমান্ডের দায়িত্বে ‘কার্যকর নিয়ন্ত্রণ’ প্রয়োজন, যার অর্থ অভিযুক্তের সামরিক বাহিনীকে আদেশ দেয়ার এবং অবাধ্যতায় শাস্তি দেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। পদ্ধতিটি এমন কোনো প্রমাণ দেয়নি। এর পরিবর্তে, এটি একটি গুরুত্বহীন কাগজের টুকরোর ওপর নির্ভর করা হয়, এটি ব্যবহার করে অধ্যাপক গোলাম আযম এবং রাজাকারদের মধ্যে একটি সংযোগ তৈরি করা হয়।
যখন আসামি পক্ষে মামলা উপস্থাপনের সময় আসে, তখন ট্রাইব্যুনাল গুরুত্বপূর্ণ বিশেষজ্ঞ প্রমাণ আটকাতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে। এ ইচ্ছাকৃত বাধার সবচেয়ে স্পষ্ট উদাহরণগুলোর একটি ছিল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মিত্র বাহিনীর উত্তর ইউরোপের সাবেক কমান্ডার-ইন-চিফ (২০০১-২০০৪) জেনারেল স্যার জ্যাক ডেভেরেল কেসিবি, ওবিই’র কাছ থেকে বিশেষজ্ঞ সাক্ষ্য গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানো। জেনারেল ডেভেরেল একজন উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন সামরিক বিশেষজ্ঞ ছিলেন, যার সামরিক প্রেক্ষাপটে কমান্ডের দায়িত্ব সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান ছিল। তার সাক্ষ্য প্রসিকিউশনের দাবি সম্পূর্ণরূপে বাতিল করে দিত যে, অধ্যাপক আযমের রাজাকারদের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছিল।
জেনারেল স্যার ডেভেরেল একটি লিখিত মতামতে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেন যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী, ব্রিটিশ সামরিক ঐতিহ্য অনুসরণ করে, এর কমান্ড শৃঙ্খলের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। অধ্যাপক আযমের মতো কোনো বেসামরিক ব্যক্তিকে সামরিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অনুমতি দেবে না। তিনি আরো উপসংহারে পৌঁছেন যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী রাজাকারদের কর্মকাণ্ড এবং আচরণে কমান্ডের দায়িত্ব বজায় রেখেছে। জেনারেল ডেভেরেল এমন কোনো প্রমাণ পাননি যে, গোলাম আযমের বাহিনীর ওপর ‘কার্যকর নিয়ন্ত্রণ’ প্রয়োগে প্রয়োজনীয় উপায় ( যোগাযোগ ব্যবস্থা, পরিকল্পনা ক্ষমতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের কর্তৃত্ব) ছিল। সামগ্রিক উপসংহার ছিল যে, জামায়াতে ইসলামীর আমির হিসেবে গোলাম আযমের রাজনৈতিক ভূমিকা সত্ত্বেও, ১৯৭১ সালের সঙ্ঘাতের সময় সামরিক বাহিনীর ওপর তার আইনি বা ব্যবহারিক কমান্ড কর্তৃত্ব ছিল না। প্রকৃত কমান্ডের দায়িত্ব ন্যস্ত ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর। স্যার ডেভেরেল ট্রাইব্যুনালের সামনে বিশেষজ্ঞ সাক্ষ্য দিতে বাংলাদেশে আসতে ইচ্ছুক ছিলেন।
যেহেতু স্যার ডেভেরেল একজন সাধারণ সাক্ষী ছিলেন না, তাই তার ভিসার আবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে যে, ট্রাইব্যুনালের সামনে সাক্ষ্য দিতে বাংলাদেশে আসছেন। তিনি সাধারণ পর্যটন ভিসায় আসতে পারেননি। এভাবে আসামি পক্ষের দল স্যার জ্যাক ডেভেরেল এবং অধ্যাপক উইলিয়াম শাবাস (একজন ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ) উভয়ের জন্য আনুষ্ঠানিক সমনের আবেদন করে, যাতে তাদের সাক্ষ্য আইনত রেকর্ড করা যায়। তবে, ট্রাইব্যুনাল আবেদনগুলো বিবেচনা করার আগেই, বিচারপতি মো: নিজামুল হক এবং আহমেদ জিয়াউদ্দিন সমনের আবেদন প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত নেন। আহমেদ জিয়াউদ্দিন এবং বিচারপতি মো: নিজামুল হকের সাথে জড়িত কেলেঙ্কারি থেকে ফাঁস হওয়া একটি স্কাইপ কথোপকথনে নিজামুল হকের আবেদনপত্র প্রত্যাখ্যানের পূর্ব-নির্ধারিত সিদ্ধান্তটি উন্মোচিত হয়েছিল :
আহমেদ জিয়াউদ্দিন : এই যে অ্যাপলিকেশনটা আমি দেখতেছি এখন, আমাকে অলরেডি ম্যাসেজ দেয়া হইছে আর কি এসএমএস এ, আজকে দুইটা অ্যাপলিকেশন আপনি পাইছেন এর জন্য।
জাস্টিস নিজামুল হক নাসিম : দুইটা ফরেনার সাক্ষী?
আহমেদ জিয়াউদ্দিন : হ্যাঁ।
জাস্টিস নিজামুল হক নাসিম : দিমু না, আবার কী?
আহমেদ জিয়াউদ্দিন : এইডা কিন্তু আপনি লিখিত অর্ডার দিয়েন তাইলে।
কথোপকথনটি স্পষ্ট করে দেয় যে, ট্রাইব্যুনালের কখনোই আসামি পক্ষকে বিশেষজ্ঞ সাক্ষী উপস্থাপনের অনুমতি দেয়ার উদ্দেশ্য ছিল না। আবেদনটির যোগ্যতার ভিত্তিতে মূল্যায়নের পরিবর্তে, ট্রাইব্যুনাল এটি প্রত্যাখ্যানের পূর্বপরিকল্পনা করেছিল।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে, ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে স্যার জ্যাক ডেভেরেল এবং অধ্যাপক শাবাসকে সমন পাঠাতে আসামি পক্ষের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। বিচারপতি মো: নিজামুল হক স্কাইপ কেলেঙ্কারির তথ্য প্রকাশের পর ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেন, তাই পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনাল এ সিদ্ধান্ত জারি করে। তবে, হকের পদত্যাগের আগে আসামি পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের অস্বীকার করার পরিকল্পনা কার্যকর হয়ে গিয়েছিল।
লেখক : বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কৌঁসুলি


আরো সংবাদ



premium cement