ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ও একজন মোয়াজ্জেম হোসেন
- কমোডর (অব:) জসীম উদ্দীন ভূঁইয়া
- ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
আজ থেকে ৫৬ বছর আগে ২২ ফেব্রুয়ারিতে এক বছর দুই মাস ১৯ দিন কারাগারে অসহনীয় নির্যাতন সহ্য করে অবশেষে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে জেল থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন শহীদ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন। তার জেলমুক্তি দিবস উপলক্ষে আজকের নিবন্ধ।
ষাটের দশকে বিপ্লবী চেতনা হৃদয়ে ধারণ করেন তৎকালীন পাকিস্তান নৌবাহিনীর লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন। দেশ স্বাধীন করার লক্ষ্যে ১৯৫৮ সাল থেকে তিনি তার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে গোপনে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। যাদের মূল লক্ষ্য ছিল সশস্ত্র পন্থায় পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য একটি গোপন তহবিল গঠন করেন। প্রত্যেক মাসে দলের সদস্যরা নিয়মিত নিজেদের বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ প্রদান করেন। প্রথম দিকে, মোয়াজ্জেম হোসেন গোপনে কেবল ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্তদের সাথে তার এ সশস্ত্র পন্থায় আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন নয়; বরং পূর্ণ স্বাধীনতার চিন্তা প্রচার করেন।
কিছুটা সংগঠিত হওয়ার পর ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী তথা সামরিক বাহিনীতে কর্মরত স্বাধীনতাকামী বাঙালি, যাদের সবার সাধারণ লক্ষ্য ছিল সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে দেশকে পুরোপুরি স্বাধীন করা, তারা বিভিন্নভাবে একত্রিত হতে শুরু করেন। করাচিতে ছোট-বড় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, একে-অন্যের বাসায় দাওয়াতের মাধ্যমে তারা যোগাযোগ রাখতেন। পরবর্তী সময়ে মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে ‘বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনী’ নামে একটি গোপন বিপ্লবী দল গড়ে ওঠে। ধীরে ধীরে বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। প্রশাসনিক সুবিধার জন্য মোয়াজ্জেম হোসেন দলের পাঁচটি কমিটি গঠন করেন : ১. কেন্দ্রীয় কমিটি ২. অর্থনৈতিক কমিটি ৩. সদস্য সংগ্রহ কমিটি ৪. নিরাপত্তা কমিটি ৫. প্রচার কমিটি।
কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা বাকি চার কমিটি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন। প্রতিটি কমিটির সদস্যরা নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ ছিলেন। ফলে তারা নিষ্ঠার সাথে নিজেদের অর্পিত দায়িত্ব পালনে তৎপর ছিলেন। এভাবে চলতে থাকে স্বাধীনতার লক্ষ্যে পথচলা। সংগঠনের সদস্যরা মনে করেন যে, সশস্ত্র বিপ্লবে কেবল অস্ত্র এবং জনসমর্থন প্রয়োজন। একটি ভূখণ্ড স্বাধীন করতে সামরিক শক্তির পাশাপাশি জনসমর্থনের প্রয়োজনীয়তাও আবশ্যকীয়। এ জন্য দরকার রাজনৈতিক নেতৃত্ব। এর পরিপ্রেক্ষিতে মোয়াজ্জেম হোসেন সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রামের পক্ষে জনসমর্থন তৈরিতে ১৯৬৩ সালের শেষের দিকে বাঙালি রাজনৈতিক নেতাদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন। তাদের কাছে নিজেদের পরিকল্পনার কথা বলেন। কিন্তু তাদের কেন্দ্রীয় কমিটি উপলব্ধি করে, জনগণের বন্ধু এসব নেতা পাকিস্তান রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভেতরে থেকে স্বায়ত্তশাসন অর্জনের মাধ্যমে পূর্ব বাংলার জনগণের এই জাতীয় সমস্যার সমাধান করতে সংকল্পবদ্ধ। অর্থাৎ তারা পাকিস্তান রাষ্ট্রে বিশ্বাসী ও রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যশীল। তারা তখনো পূর্ব বাংলার জনগণের জন্য একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চিন্তা করতে অপরাগ ছিলেন।
শেখ মুজিবুর রহমান তাদের সহযোগিতা করতে সম্মতি প্রকাশ করেন। ফলে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে সাথে নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন।
বিপ্লবীরা করাচিতে মোয়াজ্জেম হোসেনের বাসভবনে তার সাথে আলোচনার জন্য একটি গোপন সভার আয়োজন করেছিলেন। বৈঠকে মোয়াজ্জেম হোসেন সংস্থার উদ্দেশ্য এবং পরিকল্পনা বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। জনসাধারণের সহায়তায় অর্থের প্রয়োজনীয়তা এবং অস্ত্র কেনার উল্লেখ করেছিলেন। বৈঠক চলাকালীন শেখ মুজিবুর রহমানও বিপ্লবী প্রচেষ্টা এবং বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে সমর্থন প্রকাশ করেছিলেন। রাজনৈতিক সহযোগিতাসহ তিনি অস্ত্র কিনতে আর্থিক সহায়তা দেয়া এবং সংগঠনটি পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বৈঠকের পরে, তিনি সংস্থার পক্ষে একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে অক্ষমতা প্রকাশ করেছিলেন। তবে তিনি গোপন বিপ্লবী কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে পূর্ব পাকিস্তানে সদর দফতর স্থানান্তরের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
১৯৬৬ সালের এপ্রিল মাস, মোয়াজ্জেম হোসেন পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সশস্ত্র বিপ্লবের কাজের সুবিধার্থে চট্টগ্রামে বদলি হয়ে আসেন। জুনে চট্টগ্রামের একটি সভায় পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন রাষ্ট্রের নাম ‘বাংলাদেশ’ প্রস্তাব করেন। মোয়াজ্জেম হোসেন শুধু সশস্ত্র বিপ্লবের পরিকল্পনায় করেননি; বরং পূর্ব পাকিস্তানের নাম, পতাকাসহ দেশের বিভিন্ন নীতিমালাও তুলে ধরেন তা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের ‘বাংলাদেশ স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতা’ শীর্ষক বইয়েও উঠে এসেছে। তিনি তার বইয়ে বলেছেন, ‘মোয়াজ্জেম হোসেন তার প্রস্তাবিত নতুন ও স্বাধীন রাষ্ট্রকে বাংলাদেশ নামে অভিহিত করেন এবং সবুজ ও সোনালি রঙের নতুন পতাকা প্রবর্তনের পরিকল্পনা নেন’।
মোয়াজ্জেম হোসেন চট্টগ্রামে বদলি হয়ে আসার পর অর্থনৈতিক কমিটির মূল দায়িত্বে থাকা করপোরাল আমীরের কাছে কাজের অগ্রগতি ও অর্থের হিসাব জানতে চান। এসব নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। আমীর সংগঠনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। আমীরের কারণে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ফলে সরকারের গুপ্তচরের মাধ্যমে চট্টগ্রামের বিদ্রোহ পরিকল্পনাসহ সর্বোচ্চ বিপ্লবী পরিষদের বহু গোপন তথ্য সরকারের কাছে পৌঁছে যায়।
অবশেষে ১৯৬৭ সালের ৩ ডিসেম্বর জরুরি কাজের তলব করে মোয়াজ্জেমকে রাওয়ালপিন্ডিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে লে. কর্নেল আমীর এবং লে. কর্নেল হাসান রাওয়ালপিন্ডি বিমানবন্দর থেকে সামরিক ব্যারাক তথা সেনাবাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদ কেন্দ্রের একটি অফিসে নিয়ে যান। প্রথম দিকে তাকে বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখানো হয়; কিন্তু রাজি না হওয়ায় ওই কর্নেলদ্বয় দৈনিক সকাল-সন্ধ্যায় দু’বার তার ওপর নির্মম নির্যাতন চালান। ১২ ডিসেম্বর কর্নেল আমীর তার মুখে এমন ঘুষি মারেন, তার একটি দাঁত গোড়া থেকে খুলে যায়। ১৯৬৭ সালের ৩ ডিসেম্বর থেকে ১৯৬৮ সালের জুন পর্যন্ত তাকে নির্জনবাসে রাখা হয়। ১৯৬৮ সালের ১৮ মে পর্যন্ত তাকে কোনো আত্মীয়স্বজন, এমনকি কোনো উকিলের সাথে সাক্ষাৎ করতে দেয়া হয়নি। ১৯৬৭ সালের ৩ ডিসেম্বর থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত মোয়াজ্জেম হোসেনকে অবর্ণনীয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।
একজন প্রকৃত বীর কোনো নির্যাতন পরোয়া করেন না, হার মানেন না। অবশেষে সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে। একটি মহান জাতির মুক্তি সংগ্রামের নেতা হওয়ার পরিবর্তে মোয়াজ্জেম হোসেন হয়ে গেলেন একটি ষড়যন্ত্র মামলার আসামি। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে জন্ম নিলো আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। অভিযুক্তরা ভারতের সাথে ষড়যন্ত্র করে তাদের উল্লেখিত ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উত্থাপিত হলে ভারতবিরোধী সাধারণ মানুষের উষ্ণ সমর্থন পাওয়া যাবে এ প্রত্যাশায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কূটকৌশলে প্রচারণায় মামলার প্রকৃত নামের পরিবর্তে ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’ নামটি ব্যাপকভাবে প্রচার ও উল্লেখ শুরু করা হয়।
১৯৬৮ সালের পয়লা জানুয়ারি সরকার এক প্রেস নোটে সশস্ত্র বিদ্রোহের অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে আটকের কথা প্রকাশ করে। প্রথমে সরকার মামলার নাম দিয়েছিল ‘রাষ্ট্র বনাম মোয়াজ্জেম হোসেন’। পরে অ্যাডভোকেট মনজুর কাদেরের পরামর্শে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে ১৯৬৮ সালের ১৭ জানুয়ারি শেখ মুজিবকে এই মামলায় যুক্ত করে নাম দেয়া হয় ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান’। (তথ্যসূত্র : স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস : পৃষ্ঠা-২৮০, শহীদ কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা, পৃষ্ঠা-৮-৯, স্বাধীনতা যুদ্ধের গোপন বিদ্রোহী কমান্ডার মোয়াজ্জেম পৃষ্ঠা-৭২)
পরবর্তী সময়ে ৩৫ অভিযুক্তকে ঢাকা সেনানিবাসের একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মামলার বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে গণ-আন্দোলন শুরু হয়। এ মামলা পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মধ্যে গণ-জাগরণের সৃষ্টি করেছিল, এমনকি ভাসানী, ন্যাপ যারা আওয়ামী লীগ তথা শেখ মুজিবের বিপক্ষে অবস্থান করছিলেন এ মামলায় তারা পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মওলানা ভাসানী পল্টন ময়দানে একটি সভা করেন। ফলস্বরূপ, আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানে পরিণত হতে থাকে। প্রায় প্রতিদিন মিছিলে লাশ বহন করা হয়। ফলে আন্দোলন আরো বেশি বেগবান ও শক্তিশালী হতে থাকে।
জানুয়ারি মাস ছিল দখল, হত্যা এবং সরকারি বাহিনীর পশ্চাৎপসরণের সময়। বিচারকরা বিচারের রায় ত্বরান্বিত করতে গণ-অভ্যুত্থানের চাপ উপেক্ষা করতে পারেননি। এই মামলার রায় সরকারের বিরুদ্ধে হলে সরকারের জন্য চরম বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। নিশ্চিতভাবে রাজনৈতিক বৈষম্য এবং গণ-অভ্যুত্থানে সশস্ত্র অভ্যুত্থান ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হয়। অবশেষে আইয়ুব সরকার ভবিষ্যৎ শঙ্কা বুঝতে পেরে গণ-আন্দোলনের চাপে ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। কোনো বিভ্রান্তি এড়াতে বিশেষ করে ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে এবং শেখ মুজিব, মোয়াজ্জেম হোসেনসহ অন্যদের নিঃশর্ত মুক্তি দেয়। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করে। এ মামলার ফলে রাজনৈতিক সচেতনতা জাগ্রত হয়। বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন তীব্রতর হয়। জনগণের মনে স্বাধীনতার চেতনা জাগ্রত হয়। এ মামলার মধ্য দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান রাতারাতি নায়ক হয়ে ওঠেন। মূল নায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন থেকে যান আড়ালে। পাকিস্তানের তৎকালীন অনেক নেতা এই বিপ্লবী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন যে, এটি ‘অসামাজিক কার্যকলাপ এবং নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা’। অন্য দিকে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা গণ-অভ্যুত্থানকে বিভ্রান্ত করতে ১৯৭০ সালে নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়।
ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ছিল আগরতলা মামলা ঘিরে। আর গণ-অভ্যুত্থানের পরে ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানকে রেসকোর্স ময়দানে তৎকালীন ছাত্রনেতা তোয়াফেল আহমেদ ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেন। কিন্তু দেখা যায়, ১৯৬৯ সালের রাজনীতিবিদ গণ-অভ্যুত্থানকে স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি অংশ বললেও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার পটভূমি সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে আগ্রহী নন। তারা নিজেদের স্বার্থে গণ-অভ্যুত্থানের গল্প বললেও প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার লক্ষ্যে যারা কাজ করেছিলেন, এমন সামরিক ব্যক্তিদের আড়ালে রাখেন। অথচ রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে, স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের এই বীরত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা আমাদের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ অধ্যায় ছিল ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মেরুদণ্ড। এ গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়টি উপেক্ষা করে, রাজনীতিবিদরা ইচ্ছাকৃতভাবে প্রকৃত ইতিহাস আজো আড়ালে রাখতে সচেষ্ট। রাজনৈতিকভাবে সামরিক কর্মীদের ঘটনাটি এড়িয়ে গেছেন, বিশেষ করে মোয়াজ্জম হোসেনের অবদান।
স্বাধীনতার ৫৩ বছরে পদার্পণের পরেও ১৯৩২ সালে বরিশালের পিরোজপুরে জন্ম নেয়া সংগ্রামী মানুষটির নাম আজো স্বাধীন বাংলাদেশে অনালোচিত। আজো তিনি স্বাধীনতার পরবর্তী প্রজন্মের কাছে অপরিচিত এক নাম। আজো স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসের অন্তরালে রয়ে গেছেন তিনি; তার সাধনা এবং সর্বোপরি সশস্ত্র বিপ্লবের ইতিহাস। অথচ ষাটের দশকে তার সেই সশস্ত্র আন্দোলন ঘিরে আগরতলা মামলার জন্ম হয়ছিল। আগরতলা মামলা থেকে গড়ে উঠেছিল পূর্ব পাকিস্তানের আপামর জনগণের মধ্যে গণ-আন্দোলন। সেই গণ-আন্দোলন থেকে ধাপে ধাপে পূর্ণ স্বাধীনতা। তার সেই সশস্ত্র বিপ্লবের প্রচেষ্টা ছিল স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টিতে এক মাইলফলক, যা এখনো প্রায় সবার কাছে অপরিচিত।
লেখক : নৌবাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান ও প্রোভিসি বিইউপি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা