মিরাজের স্বাদ পেতে হলে
- প্রফেসর ড. মো: আব্দুল্লাহেল বাকী
- ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
মিরাজ সংঘটন মানুষের প্রতি আল্লাহ তায়ালার অসীম অনুগ্রহ ও করুণার প্রমাণ। মানুষের তাবৎ কর্মকাণ্ডের হিসাব-নিকাশ শেষে তার পুরস্কার বা শাস্তিপ্রাপ্তির এক বিধিবদ্ধ নিয়ম তিনি নির্ধারণ করেছেন ঠিকই- কিন্তু মহান আল্লাহ এ নিয়মের অধীন নন। তিনি ইচ্ছা করলে যে কাউকে যেকোনো সময় ও স্থানে পুরস্কার বা শাস্তি দিতে পারেন। বিশেষ করে বান্দার সুকৃতির পুরস্কার প্রদানে তিনি কালবিলম্ব করেন না।
মানুষ যদি তাকে খুশি করার প্রচেষ্টায় আন্তরিকতা ও যোগ্যতা দক্ষতার প্রমাণ পেশ করতে পারে, তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার প্রাপ্য অনুযায়ী আগেই তা দিতে পারেন। যেমন- ১০ জন সাহাবিকে পৃথিবীতে থাকতেই বেহেশতের উত্তরাধিকারের মর্যাদা দেয়া হয়েছিল। এটি আল্লাহ তায়ালা নির্ধারণ করেন, প্রত্যেকের কাজের পরিমাণ ও গুণগত মান অনুযায়ী। এ ক্ষেত্রে মুহাম্মদ সা: নবুওয়তের দ্বাদশ বছরে তা পাওয়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
মিরাজের স্বাদ পেতে হলে আল্লাহর দ্বীনের জন্য কষ্ট করতে হবে, ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আমাদের চিন্তাচেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে, কাজের পরিধি ও দায়িত্বের সীমা সম্প্রসারণ করতে হবে। যোগ্যতা-দক্ষতা ও কর্মস্পৃহা বাড়াতে হবে। সব সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠতে হবে। মন-মানসিকতা ও আন্তরিকতা বৃদ্ধি করতে হবে। দ্বীনের জন্য, মানবতার জন্য কোরবানিতে অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে থাকতে হবে। মুসলমানদেরকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দিতে হবে। মানব কল্যাণমূলক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তারা মুহাম্মদ সা:-এর উম্মত ঊর্ধ্বাকাশ বা মহাশূন্য নিয়ে গবেষণা করবে, মহাশূন্য জয় করতে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কাজে লাগাবে। এ ব্যাপারে মিরাজের ঘটনা সুস্পষ্ট ইঙ্গিত করে।
যেহেতু আমাদের প্রিয়নবী সা: ঊর্ধ্বাকাশ ভ্রমণ করেছেন, সেহেতু বিষয়টি শুধু জায়েজ নয়; বরং সুন্নত। কাফের-মুশরিকরা সহজে এ কথা বিশ্বাস করবে না যে, মানুষ কিভাবে সশরীরে মহাকাশ ভেদ করে উপরে উঠছে? তারা এটি বুঝে ওঠার অনেক আগেই মুসলমানরা এ বিষয়ে অনেক কিছু করে ফেলবে। বিশ্ববাসীকে এ বিষয়ে তারাই পথ দেখাবে। অত্যন্ত পরিতাপের সাথে বলতে হয়, মিরাজের ঘটনা সম্পাদনের দিন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত মুসলমানরা এ ব্যাপারে তেমন কিছুই করেনি। তারা অসংখ্যবার বাকযুদ্ধ করেছে এ নিয়ে যে, মিরাজ শারীরিকভাবে নাকি আত্মিকভাবে হয়েছে? মিরাজে রাসূলুল্লাহ সা: আল্লাহকে দেখেছেন কি না? কত হাজার পর্দার ব্যবধানে কথাবার্তা হয়েছে? বেহেশত ও দোজখের বর্ণনা কে কত চমকপ্রদভাবে দিতে পারছেন? বোরাক ও রফরফের আকার-আকৃতি, অজুর পানি গড়িয়ে যাওয়া, ঘরের শিকল নড়তে থাকা ইত্যাদির বর্ণনা বিবৃতির দিকেই জনগণের দৃষ্টি সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। অন্য দিকে অমুসলিমরা মিরাজের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে মহাশূন্য জয়ের পেছনে মেধা যোগ্যতা শক্তি ও সম্পদ ঢেলে দিলো। একের পর এক সাফল্য দেখিয়ে পৃথিবীবাসীকে স্তম্ভিত করে দিলো। তারা চাঁদে পৌঁছে গেল, মঙ্গলের কাছাকাছি এলো, মহাকাশ বিষয়ক বিস্ময়কর তথ্য সংগ্রহ করে চলল।
অনেক মুসলমান তখনো মানুষের পক্ষে বিজ্ঞানের মাধ্যমে এসব করা সম্ভব কি না, এ ধরনের উদ্যোগ জায়েজ কি না, প্রশ্ন করত। ব্যবহারকারীদের অবস্থানগত পার্থক্যের কারণে একই বস্তু বা বিষয় ভিন্ন রকম ফল দিতে পারে। ‘মহাশূন্য জয়’ মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বিস্ময়কর ঘটনা। মুসলমানরা এটি করতে পারলে তার ফল যেমন হতো, ইহুদি-খ্রিষ্টান ও মুশরিকরা সেটি করাতে ফল হলো অন্যরকম।
বিরোধীরা মুসলমানদেরকে বিজ্ঞানবিমুখ বলার সুযোগ পেলো এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ফসল বিরোধীদের দখলে চলে গেল।
মুসলমানরা মিরাজ বিশ্বাস করে, জাহান্নাম-জান্নাত-আরশ-কুরসি ইত্যাদির বর্ণনা শুনে রাত কাটায়, নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে মিরাজ করার জন্য ব্যাকুল হয় এবং মিরাজের ধান্ধা মাথায় নিয়ে ঘোরে। কিন্তু মিরাজে যাওয়ার জন্য এবং মিরাজ থেকে এসে নবী সা: যা করেছেন তা তারা করেনি। জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রযুক্তি কাজে লাগানোর কথা কেউ ভাবেনি। মুসলিম উম্মাহ স্বপ্ন দেখে মিরাজের, আর দৈনন্দিন প্রয়োজনে নির্ভরশীল হয় ইহুদি-খ্রিষ্টানদের ওপর। আধুনিক বিশ্বে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ছাড়া এক মুহূর্ত ভাবা যায় না। চিকিৎসার জন্য ওষুধ ও অস্ত্রোপচার, খাদ্যের জন্য উচ্চতর প্রযুক্তিনির্ভর শস্য ব্যবস্থাপনা, লাগসই বাসস্থান, টেকসই পোশাক-পরিচ্ছদ, দ্রুতগামী যাতায়াত সুবিধা, আরাম-আয়েশের যাবতীয় আয়োজন- এসবই তো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অবদান। আর এগুলো সব ইহুদি-খ্রিষ্টান ও মুশরিকদের নিয়ন্ত্রণে।
ফলে প্রতিটি বিষয়ে মুসলমানদের তাদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। যেকোনো সমস্যার সমাধানে তাদের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। মুসলমানরা ভালো একটি মসজিদ করবে, তারও প্ল্যান আনতে হয় ইহুদিদের কাছ থেকে। মানুষের যা কিছু প্রয়োজন, মুসলমানরা তা ওদের কাছ থেকেই নিচ্ছে।
নিজেরা কিছুই আবিষ্কার করছে না। ওদের তৈরি ওষুধ খেয়ে, ওদের জামা-কাপড়, ওদের প্ল্যানে তৈরি মসজিদে বসে, ওদের বানানো জায়নামাজে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে, আর দিদার চায় আল্লাহর। ওদের কাছ থেকে সব কিছু নেয়, আর আল্লাহর সাথে দিদারের স্বপ্ন দেখে। মিরাজের প্রকৃত শিক্ষা মুসলমানরা গ্রহণ করেনি। যদি গ্রহণ করত তাহলে নতুন নতুন আবিষ্কারের লোভ তাদেরকে তাড়া করত। কেননা, মিরাজ নিজেই একটি নতুন আবিষ্কার। এর আগে কেউ মহাশূন্য সফর করেনি। এ আবিষ্কারের মাধ্যমে মানুষ মহাকাশে যাওয়ার চিন্তা করল। এর ফলে বিজ্ঞানীদের জন্য নভোমণ্ডলের দিগন্ত উন্মোচন হলো। রাসূলে কারিম সা: মদিনায় হিজরত করে একটি ইসলামী সমাজব্যবস্থা কায়েম করলেন। বিভিন্ন তাফসিরে (সূরা বনি ইসরাইলে) মিরাজের যে ১৪ দফার কথা বলা হয় সেগুলোর আলোকে একটি সুন্দর সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করলেন। যে সমাজব্যবস্থা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল, সে ধরনের সুখ সে ধরনের কো-অর্ডিনেশন ভাতৃত্ববোধ এবং মানুষের সম্মান ইজ্জত রক্ষা করার জন্য ওই রকম নমুনা পৃথিবীতে আর প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ভবিষ্যতেও প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে না। রাসূল সা: আল্লাহর দিদার লাভ করার পরে মিরাজ থেকে এসে ঘরের মধ্যে অলস জীবনযাপন করেননি। তিনি এটি ভাবেননি যে, আমি তো আল্লাহর দিদার পেয়েই গেছি, আমি তো বেহেশত-দোজখ দেখেই এসেছি, আমি তো সমস্ত নবী-রাসূলের ইমাম হয়ে বায়তুল আকসাতে নামাজ পড়িয়েছি, আমার আর কি পাওয়ার থাকতে পারে, কি বলার থাকতে পারে? সে পরিপ্রেক্ষিতে এখন যদি আল্লাহকে পাওয়ার চিন্তায় আমরা কোথায় আছি তা পর্যালোচনা করি তাহলে দেখব- আমাদের এ অন্তরের সবটুকু জায়গা ভর্তি গাড়ি, বাড়ি, প্রমোশন এটা-সেটা দিয়ে। আল্লাহকে পাওয়ার চিন্তা কোথায়?
মিরাজের পর তো রাসূল সা: কাবাঘরের মধ্যে ঢুকে তালা লাগিয়ে জিকির-আজকার তাসবিহ-তাহলিলে সময় কাটানোর কথা ভাবলেন না; বরং তিনি আরো কর্মঠ হলেন, আরো পরিশ্রমী হলেন আরো ঝুঁকির মধ্যে চলে গেলেন। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠলেন। যে মহান প্রভুর সাথে তিনি সাক্ষাৎ করে এসেছেন, সে মহান সম্মানিত, মহিমান্বিত প্রভুর সাক্ষাৎ লাভে আমার উম্মত যেন ধন্য হতে পারে; যে দোজখ তিনি দেখে এসেছেন, তা থেকে যেন মানুষ বাঁচতে পারে, যে বেহেশত তিনি ঘুরে এসেছেন সে বেহেশতের দিকে যেন মানুষ ছুটতে পারে, সে জন্য তিনি আগের তুলনায় বেশি খাটতে শুরু করলেন। মক্কাতে টিকতে পারা তার পক্ষে সম্ভব হলো না, তবুও তিনি নাছোড়বান্দা। তিনি মদিনায় চলে গেলেন। নতুন এক জায়গায় নতুন এক পরিবেশে নতুন এক সংগঠনে তিনি মদিনাতে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করলেন। একটি সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করলেন, যে সমাজব্যবস্থার তত্ত্বাবধানেই কেবল মানুষ ওই স্র্রষ্টার সান্নিধ্য লাভের কর্মসূচি পালন করতে পারে।
মক্কার এ পরিবেশে কোনো মানুষই স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভে নিরবচ্ছিন্ন ও নির্বিঘœœ চেষ্টা করতে পারে না। মক্কাতে নামাজ পড়ার সময় উটের নাড়িভুঁড়ি গায়ের ওপর দিয়ে দেয়। আল্লাহর দ্বীনের কথা বলতে গেলে তাকে হত্যা করার হুমকি দেয়- এ ধরনের ঝুঁকি যেখানে আছে, সে রকম পরিবেশে এটি করা যায় না। তাই মদিনাতে গিয়ে তিনি এমন একটি সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করলেন, পরিবেশের সূচনা করলেন যেখানে মানুষ ইচ্ছা করলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নিশ্চিন্ত মনে নির্বিঘেœœ তার আরাধনা সাধনা কাজকর্ম করতে পারে।
মিরাজ যারা বিশ্বাস করে, মিরাজ যারা আলোচনা করে, মিরাজের কথা যারা মনে রাখে তাদেরকে মিরাজের ঘটনা আলোচনার পরে আরো কর্মঠ হওয়া দরকার। আমরা যে পরিবেশে বাস করছি, যে বিশ্বে বাস করছি, এই বিশ্ব হলো লাখো কোটি অমুসলিমের বিশ্ব। ৮০০ কোটি মানুষের মধ্যে ৬০০ কোটির বেশি হলো অমুসলিম, আর ২০০ কোটির কম হলো মুসলিম। মুসলিমের মধ্যেও কোটি কোটি মুসলিম কুরআন পড়তে পারে না। যে কুরআনের মধ্যে মিরাজের কথা আছে, সে কুরআন তারা বুঝে না। তাহলে তারা কিভাবে মিরাজের স্বাদ আস্বাদন করবে? লাখ লাখ মুসলমান সূরা ফাতিহা শুদ্ধ করে পড়তে পারে না। যেটা দিয়ে কুরআন শুরু হয়েছে। তাহলে কেমন করে তারা মিরাজ পাবে? কেমন করে তারা আল্লাহর দিদার লাভ করবে? কেমন করে তারা মুহাম্মদ সা:-এর মতো সান্ত্বনা লাভ করবে? আর ওই রকমের একটি সমাজ প্রতিষ্ঠিত করবে? কোটি কোটি মুসলিম নামাজি আছে, হাজী আছে, জাকাত দেনেওয়ালা আছে যারা কুরআনের একটা সূরার একটি আয়াতের অর্থও বলতে পারবে না। ‘ইন্না আঅ্ত্বাইনা কাল কাউসার’-এর অর্থও বলতে পারবে না, এমন কোটি কোটি মুসলমান আছে। সে মুসলমানরা ‘ইন্না শানিআকা হুয়াল আবতার’-শত্রুকে লেজকাটা বানাবে কেমন করে? এর অর্থই তো তারা বুঝে না। গোটা বিশ্বের ৬০০ কোটির বেশি মানুষ অমুসলিম। তাহলে গোটা বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ আল্লাহ মানে না, মিরাজ মানে না। পৃথিবীর চার ভাগের তিন ভাগ মানুষ মুহাম্মদ সা:-কে মানে না। মিরাজকেই মানে না, কুরআনকেই মানে না, এ অবস্থা চালু রেখে আপনি আল্লাহর দিদার লাভ করবেন কেমন করে?
মুহাম্মদ সা: কি পৃথিবীর লোকদেরকে বেঈমান রেখে- আল্লাহর দিদারে বসে গিয়েছিলেন। তিনি কি বলেছিলেন, তোমাদের নিয়ে বহুত চেষ্টা করেছি, কিছুই হলো না। এখন তাসবিহ নিয়ে বসে গেলাম? তাহলে আমরা বিশ্বব্যাপী কুরআনবিরোধী মানুষের মিছিল রেখে ছোটখাটো সহজ রাস্তায় আল্লাহর দিদার লাভের স্বপ্ন দেখি কেন? কামেল হওয়ার দাবি করে নিষ্কর্ম জীবনে অভ্যস্ত হই কিভাবে? যদি কেউ কুরআনের মর্যাদা বুঝে ফেলতে পারেন তাহলে তিনি নামাজের স্বাদ অনুভব করবেন, মিরাজের পথে অগ্রসর হবেন। আমরা এখন যতই চেষ্টা করি না কেন, রাসূল সা:-কে শারীরিকভাবে ধরতে পারব না। শত চেষ্টা করেও আমরা কেউ আরশে মুয়াল্লায় পৌঁছতে পারব না। আমরা যেটিকে ধরতে পারি পড়তে পারি, অনুসরণ করতে পারি- সেটি হলো কুরআন।
কুরআন আমার আপনার কাছেই আছে। যে কুরআন মিরাজের কথা বলল, যে কুরআন আল্লাহর দিদারের কথা বলল, শয়তান থেকে বাঁচার কথা বলল দোজখ-বেহেশতের বর্ণনা দিলো, সে কুরআন যদি কেউ গ্রহণ করতে না পারে, শক্তভাবে ধারণ করতে না পারে তাহলে আমি নির্দ্বিধায় বলে দিতে পারি, তিনি যার কাছে যাই বলুন না কেন, যেটাই দাবি করুন না কেন, আমি তাকে মোটেও আল্লাহর দিদার অর্জনকারী মনে করি না। এ জামানাতে যে ব্যক্তি সহিহ শুদ্ধভাবে কুরআন পড়তে পারে না, সে কখনোই আল্লাহর দিদার লাভ করতে পারে না- যদি সে অপারগ না হয়। আমরা সমস্ত লোকের মনের অবস্থা জানি না, কোনো একজন লোক হয়তো বা এমন একটি কারণে কুরআন শিখতে পারেনি যে কারণটি আল্লাহপাক গ্রহণ করেছেন। মাজুর অর্থাৎ এমন বৃদ্ধ হয়ে গেছে এখন তার পক্ষে এটি শেখা সম্ভব নয়। আর ইতঃপূর্বে সে শেখার সুযোগ পায়নি। এটি আল্লাহ ভালো জানেন। তার যদি আল্লাহর কাছে কৈফিয়ত দেয়ার মতো কোনো কারণ থাকে সেটি আলাদা। কিন্তু আপনার সুযোগ আছে, সামর্থ্য আছে, তারপরও আপনি কুরআন শিখতে চাচ্ছেন না, কুরআন বুঝতে চাচ্ছেন না। কিন্তু আপনি আল্লাহর দ্বীনের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিতে চাচ্ছেন- এটি গ্রহণযোগ্য নয়। কুরআনকে পাশ কাটিয়ে, কুরআনকে অবহেলা করে অন্য কোনো উপায়ে আল্লাহকে পাওয়া সম্ভব নয়, রাসূলের ভালোবাসা পাওয়া সম্ভব নয়। আমাদেরকে যোগ্যতা দক্ষতার সাথে কুরআনের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে এবং আমরা কেবল তখনই প্রকৃত মিরাজের মর্যাদা ও স্বাদ আস্বাদন করতে পারব।
লেখক : সাবেক প্রফেসর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়,
ইমেইল : [email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা